ক্রোয়েশিয়া ইউরোপ মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। রাজধানী জাগ্রেব। দেশটি ১৯৯১ সালের ২৫শে জুন প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়া থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। ১৯৪৫ সালে যুগোশ্লাভিয়া গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের অস্থায়ী সরকার স্থাপন করেন। সস্তায় বিদেশ ভ্রমণের জন্য অন্যতম সেরা ঠিকানা ক্রোয়েশিয়া। ক্রোয়েশিয়া বিশ্বব্যাপী ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে অন্যতম সেরা পছন্দের ট্রাভেল ডেস্টিনেশন। হাজারেরও বেশি নানা আকৃতির দ্বীপ রয়েছে ক্রোয়েশিয়ার উপকূলে। তবে এর আশপাশে শুধু জল আর জল। সেখানকার অপূর্ব সুন্দর দ্বীপগুলি দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর— ক্রোয়েশিয়া বেড়াবার আদর্শ সময়।
ক্রোয়েশিয়ার প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট কোলিন্দা ফুটবলের বড় ভক্ত। দুনিয়ার সবচেয়ে 'হট' প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচিত কলিন্ডা। ২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি, রবিবার ক্রোয়েশিয়া প্রজাতন্ত্রের প্রথম নারী তথা দেশের চতুর্থ প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন কলিন্ডা গ্রাবার-কিতারোভিচ। সময় নষ্ট না করে পরের দিন থেকেই নিজের কার্যভার সামলাতে শুরু করে দেন জনপ্রিয় এই নেত্রী। ২০০৫ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত ক্রোয়েশিয়ার বৈদেশিক সম্পর্ক মন্ত্রী ছিলেন কোলিন্ডা গ্রাবার-কিটারোভিচ। তারপর ২০০৮ থেকে ২০১১ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ক্রোয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১১ থেকে ২০১৪ – এই তিন বছর প্রথম নারী হিসেবে ন্যাটোর গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন ৪৭ বছর বয়সি কোলিন্ডা। তার রূপে মুগ্ধ হয়ে নাকি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ ক্রোয়েশিয়ার নাগরিক হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন!
ক্রোয়েশিয়া সীমান্তে পর্যাপ্ত মানবিক সুবিধা নেই। ক্রোয়েশিয়া প্রতিবেশী দেশ স্লোভেনিয়া। ক্রোয়েশিয়া এবং সার্বিয়া পরস্পরের বিরুদ্ধে বলকান যুদ্ধের সময় গণহত্যার যে অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগ এনেছিল, আন্তর্জাতিক আদালত সেগুলো খারিজ করে দিয়েছে। ঐতিহাসিক এক রায়ে বিচারক বলছেন, কোনো পক্ষই গণহত্যার অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। ক্রোয়েশিয়া যখন তার হারানো এলাকা পুনরুদ্ধার করার জন্য সামরিক অভিযান চালিয়েছিল তখন ২ লাখের ও বেশি সার্ব জাতিগোষ্ঠীর লোক বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিল।
১৯৯১ সালে যুগোস্লাভিয়া ভেঙে জন্ম হয় নতুন সাতটি রাষ্ট্রের। কিন্তু সাত রাষ্ট্রের প্রায় সবার সঙ্গেই সবার সীমান্ত বিরোধ প্রবল। নব্বইয়ের দশকে একে একে চারটি যুদ্ধের মাধ্যমে ক্রোয়েশিয়া, মেসিডোনিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা আর স্লোভেনিয়া স্বাধীন হয়ে যায়। ক্রোয়েশিয়ার জনসংখ্যা মাত্র ৭১ লাখ। নিবন্ধিত ফুটবলারের সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার, যা মোট জনসংখ্যার তিন শতাংশ। ক্রোয়েশিয়া প্রধান প্রধান বিমানবন্দর ( প্লাসো বিমানবন্দর ) জাগরেব থেকে ১০ কিমি দক্ষিণে অবস্থিত।
১৯৯৪ সালে ফিফা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশেরও নিচে ছিলো ক্রোয়েশিয়া। ১৬৭ দেশের মধ্যে সেবছর বাংলাদেশের র্যাংকিং ছিলো ১১৯। ৬ ধাপ পেছনে ছিলো ক্রোয়েশিয়া (১২৫)। তার আগের বছর (১৯৯৩) বাংলাদেশের র্যাংকিং ছিলো ১১৬ আর ক্রোয়েশিয়ার ছিলো ১২২।
ক্রোয়েশিয়ার আয়তন ৫৬ হাজার ৫৪২ বর্গকিলোমিটার। আয়তনের দিক থেকে বিশ্বে দেশটির অবস্থান ১২৬তম। ক্রোয়েশিয়ার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্লিটভাইসার সিন। ক্রোয়েশিয়ায় খ্রিষ্টান জনসংখ্যা সর্বাধিক। যুগোস্লাভিয়া থেকে স্বাধীনতা লাভের পরেই আধুনিককালের ক্রোয়েশীয় ফুটবল দল ১৯৯১ সালে গঠন করা হয়। এরপর ১৯৯৩ সালে ফিফা ও উয়েফার সদস্যপদ লাভ করে ক্রোয়েশিয়া। আশেপাশের দেশগুলোতে ক্রোয়েশিয়ার তাজা ফলের বেশ চাহিদা আছে।
ছবি ও তথ্য – ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:০২