মনে করুন, ব্লগার চাঁদগাজী বা সনেট কবির লেখা আমার ভালো লাগে না। আমি স্পষ্ট তাদের পোষ্টে গিয়ে জানিয়ে দিলাম- 'দুঃখিত আপনার লেখা আমার ভালো লাগে না। বরং বিরক্ত লাগে।' এখন সনেট কবি বা চাঁদগাজী কি আমার উপর রাগ করবেন? হয়তো রাগ করবেন। কিন্তু আমি মনে করি- তাদের মোটেও রাগ করা উচিত না। তাদের চিন্তা করা উচিত, ভাবা উচিত কেন তাদের লেখা ভালো লাগছে না। সমস্যাটা কোথায়? সমস্যা খুঁজে নিয়ে সমাধান করা উচিত। রাগ করে যা-তা বলা মোটেও ঠিক না। ব্লগে অনেককেই দেখি, তার পোষ্ট নিয়ে কেউ বিরুপ মন্তব্য করলে সহ্য করতে পারে না। আমি মনে করি, তাদের করা কঠোর মন্তব্য থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। তাতে বরং আপনার উপকার'ই হবে। একসময় ব্লগে আমি অনেক আকথা-কুকথা শুনেছি। কিন্তু আমি আমার সমস্ত মেধা দিয়ে, সমস্ত ভালোত্ব দিয়ে অনেক কিছু জয় করেছি। যারা একসময় আমাকে খোঁচা দিয়ে মন্তব্য করতো, তারাই আজ আমাকে বাহবা দেয়। এটা আমার জন্য অনেক বড় আনন্দের।
ধরুন, নায়ক ফেরদৌস বা ইলিয়াস কাঞ্চনের অভিনয় আমার ভালো লাগে না। এখন তাদের যদি আমি চিৎকার করে বলি, স্যরি স্যার আপনার অভিনয় আমার ভালো লাগে না। খুব বিরক্ত লাগে। আমার কথা শুনে যদি এই দুই নায়ক বুদ্ধিমান হয় তাহলে তারা রাগবেন না। বরং হাসিমুখে আমার মন্তব্য মেনে নিবেন। এবং বলবেন, ঠিক আছে আগামীতে আমরা অনেক সুন্দর অভিনয় করবো। সে অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়ে যাবেন! যদি তা না বলে দুই নায়ক রেগে মেগে আমাকে মারে বা কলার চেপে ধরে তাহলে তাদের সেটা অন্যায় হবে। বোকামো হবে। সহজভাবে মেনে নেওয়া অনেক বড় গুন, অনেকেই সেটা পারে না। সব অবস্থায় মাথা ঠান্ডা রাখতে হয়। রেগে গিয়ে চিৎকার চেচামেচি করা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
সব খারাপের মধ্যেও কিছু ভালো দিক থাকে। দেশের দুর্নীতিবাজদের আমি ধন্যবাদ দেই। তারা কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করেন। সেই টাকা দিয়ে তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করেন। সেই সব প্রতিষ্ঠানে অসংখ্য বেকার মানুষের কর্মসংস্থান হয়। যেমন ধরুন টিভি চ্যানেল, দৈনিক পত্রিকা অথবা ব্যাংক- এসব প্রতিষ্ঠান গুলোতে অসংখ্য লোকের কর্মসংস্থান হয়। অনেকে মিল ফ্যাক্টরি করেন সেখানেও প্রচুর বেকার মানুষের কর্মসংস্থান হয়। দুর্নীতিবাজের উছিলায় অনেক মানুষ খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে পারে। দুর্নীতিবাজদের অনেক লোকবল প্রয়োজন। কাজেই দুর্নীতির ফলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। আর অন্যদিকে দুর্নীতিবাজরা অপরাধবোধ থেকে মানুষের কল্যানের জন্য কিছু করতে চায়।
ঢাকা শহরের মানুষের মধ্যে মানবতা নেই। সবাই খুব অস্থির, সবার মধ্যে বড্ড তাড়াহুড়া ভাব। রাস্তায়, ফুটপাতে, শপিং মলে সব জাগায় মানুষের মধ্যে বড্ড ব্যস্ততা। যে লোকটি তার নিজ বাসায় ভদ্র-অমায়িক বলে গন্য, সে-ও রাস্তায় বের হলে অমানুষ হয়ে যায়। তার মনমানসিকতা তৃতীয় শ্রেণির হয়ে যায়। একজন বাসের ড্রাইভারের চেয়েও হোন্ডাওয়ালারা সবচেয়ে বেয়াদপ। তারা ফাঁক পেলেই ঢুকিয়ে দেয়। অপ্রয়োজনেই বিকট হর্ন দেয়। দিতেই থাকে। সিগনাল তারা একেবারেই মানে না। এবং তাদের কিচ্ছু বলা যাবে না। কিছু বলতে গেলেই তেড়ে মারতে আসবে। তাদের লজ্জাবোধও খুব কম, ব্যস্ত ফুটপাতে অবিবেচকের মতোন বাইক উঠিয়ে দেয়। সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না। তারা আইনের তোয়াক্কা করে না। রংসাইড দিয়ে গাড়ি চালানোটা তারা ফ্যাশন মনে করে। ব্যস্ত রাস্তায় গাড়ি ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখে। ঘর থেকে বের হলেই মানুষ গুলো কেমন অমানুষে পরিনত হয়।
বাপ মা আমাদের কাছে জীবনের সবচেয়ে বড় শ্রদ্ধার পাত্র। কিন্তু সব বাপ মা ভালো হয় না। সমাজে খারাপ বাপ মার অভাব নাই। কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধু মারা গেল সৌদিতে। এখন তারা লাশ ঢাকাতে আনবেন না। লাশ ঢাকা আনতে অনেক টাকা খরচ। অথচ আমার বন্ধু তার সারা জীবনের ইনকাম তার মায়ের হাতে তুলে দিয়েছে। জায়গা জমি কিনেছে। আমার বন্ধুর মা এখন, বন্ধুর বউ এবং বাচ্চাসহ তাড়িয়ে দিতে চাচ্ছে। কারন তাহলে সম্পত্তি ছেলের বউ আর সন্তান পাবে বলে। সে কিছুতেই জমি, বাড়ি কিছুতেই মৃত ছেলের বউ বাচ্চাকে দিবে না।
নিজের চোখে দেখা ঘটনা, এক, ছেলের পরীক্ষার ফিশ না দিয়ে বাপ রাতে মদ খেয়ে বাসায় ফিরে। ঘটনা দুই, যে ছেলের ইনকাম কম সে ছেলের সাথে মা এবং বাবা খারাপ ব্যবহার করে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:১৬