মীরা'র যেদিন ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা শুরু সেদিন তার মা স্ট্রোক করে মারা গেল। তিনি আগে থেকেই অনেক অসুখ বিসুখে জর্জরিত ছিলেন। মীরার ছোট বোন ইরা'র বয়স তখন তিন বছর। মীরার বাবা একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তারা থাকে ভাড়া বাসায় যাত্রাবাড়িতে।
মায়ের মৃত্যুর পর মীরা ছোট বোনের দায়িত্ব নিল। বাসায় নিজে রান্না-বান্না করে গেল এবং তার লেখাপড়া চালিয়ে গেল। তার বাবা বাসা ভাড়া আর তিনজনের খাওয়া খরচ কোনো রকমে চালিয়ে নিয়ে গেল। মীরা তার লেখা পড়ার খরচ চালানোর জন্য বেশ কয়েকটা টিউশনি শুরু করে দিল।
মীরা মাস্টার্স পাশ করলো। তার ভাগ্য ভালো পাশ করার পরপর'ই সে গ্রামীন ফোন কোম্পানীতে চাকরি পেয়ে গেল। বেতন বেশ ভালো। তত দিনে ছোট বোন ইরা'ও বেশ বড় হয়ে গেছে। স্কুলে পড়ছে। কলেজেও ভর্তি হয়ে গেল। এদিকে তাদের বাবা খুব অসুস্থ হয়ে রিটায়ার্ড করতে বাধ্য হলো।
মীরা পুরো পরিবারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে নিল। সারাদিন চাকরি করার পর, বাসায় ফিরে রান্না করে। এমনকি বাজারটা পর্যন্ত নিজে করে। ছোট বোনের কলেজের খরচ, বাবার ওষুধ-ডাক্তার, বাসা ভাড়া সব সে একাই বেশ সুন্দর সামলাচ্ছে। ফাঁকে ফাঁকে টাকাও জমাচ্ছে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে।
একদিন মীরার সাথে আমার দেখা হয় ধানমন্ডির জিনজিয়ান রেস্টুরেন্টে। বেশ লম্বা, ছিপছিপে, সহজ সরল সুন্দর মুখ। হাসিটা খুব বেশি প্রানবন্ত।
(গল্পটা শেষ করতে পারলাম না। এক মাস ধরে গল্পটা মাথায় নিয়ে ঘুরছি। বেশ কয়েকবার লিখতে গিয়ে লেখা এগোয়নি। কিছুতেই লেখা হাতে আসছে না। আজ বিকেলে লিখতে গেলাম। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম আজ লিখবোই। অসংখ্যবার লিখলাম আর মুছলাম। মনের মতোন করে লিখতে পারছি না। পুরো গল্পটা মাথার ভেতরে সাজানো অথচ লিখতে পারছি না।
কতদিন হয়ে গেল ভালো কিছু লিখতে পারছি না। শুধু ম্যাওপ্যাও পোষ্ট দিচ্ছি। দারুন, খুব গভীর কিছু লিখতে চাচ্ছি। কিন্তু পারছি না। গত দুই মাস চেষ্টা করে একটা কবিতাও লিখতে পারছি না। চার বছর আগে একটা উপন্যাসের কাছে হাত দিয়ে ছিলাম- দেশ ভাগ, ভাষা আন্দোলন আর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে। আঠারো হাজার ওয়ার্ড লিখে লেখা আর এগুচ্ছে না। খুবই যন্ত্রনার মধ্যে আছি। গত তিন মাস তো লেখাটা ছুয়েও দেখিনি। অথচ হু হু করে সময় চলে যাচ্ছে।)
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:০৯