শাহেদ বাস থেকে বনানী ব্রিজের কাছে নামলো।
তার নামার কথা ছিল কাকলী। কিন্তু বাসের কন্টাকটর এখানেই নামিয়ে দিল। কাকলী বাস থামলে নাকি ট্রাফিক পুলিশ জরিমানা করবে। খুব দূরের পথ নয় হেঁটে গেলে হয়তো তিন চার মিনিট লাগবে। শাহেদ হাটা শুরু করলো। ঠিক তখন এক লোক এসে ফিসফিস করে বলল, ভাই ভালো 'মাল' আছে। কিছুক্ষন উপভোগ করে যান। শাহেদ প্রথমে বুঝতে পারেনি, তাই বলল কি বললেন? লোকটি গর্ব করার মতোন করে বলল, কলেজ ইউনিভার্সটির মেয়ে আছে। শাহেদ বলল, কত টাকা লাগবে? এই কথা শুনে দালাল খুব খুশি হলো। শাহেদের হাত ধরে রাস্তার পাশের চায়ের দোকানে নিয়ে গেল। দু'কাপ চায়ের অর্ডার দিল।
লোকটির নাম দুলাল। তিনি একজন দালাল। নিচ থেকে এভাবে লোক ধরে উপরে নিয়ে আসে। বিনিময়ে সে জনপতি পঞ্চাশ টাকা পায়। দশ জন পেয়ে গেলে সে পায় পাঁচ শ' টাকা। প্রতিদিন কমপক্ষে সে ত্রিশ জন লোক অনায়াসে সংগ্রহ করতে পারে। তাছাড়া তার পরিচির লোকের সংখ্যা অনেক। ফোনে ফোনে অনেককে যোগাড় করে ফেলে। এ লাইনে সে দশ বছর ধরে আছে। দুলাল শাহেদকে তিন তলায় নিয়ে গেল। শাহেদ দেখল কম করে হলেও ত্রিশ জন বিভিন্ন বয়সী মেয়ে একটা ঘরে। তারা সবাই সেজে গুজে আছে। সবাইকেই দেখতে সুন্দর লাগছে। দুলাল শাহেদকে বলল, বেছে নিন। শাহেদ অবাক চোখে মেয়েদের দিকে তাকিয়ে আছে। কাকে ডাকবে সে? সবাই'ই তো সুন্দর। দুলাল চারজন মেয়েকে ডেকে এনে বলল, বেছে নেন ভাই। এরা সবাই নতুন। জিমিস একদম পাক্কা।
৩০৯ নম্বর রুমে শাহেদ চামেলি নামে একটা মেয়ে নিয়ে ঢুকলো। মেয়েটা বেশ সুন্দর। বড় বড় টানা চোখ, চোখে মোটা করে কাজল দিয়েছে। কপালে টিপ, দুই হাত ভরতি কাঁচের চুড়ি। মাথা ভরতি সুন্দর চুল। শাহেদ মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে। মেয়েটি খুব সুন্দর করে বিছানায় বসলো। এত সুন্দর করে যে বিছানায় বসা যায় চামেলিকে না দেখলে জানতো না।
শাহেদ আগে কখনও এরকম জাগায় আসেনি। তবে এদের সম্পর্কে অনেক শুনেছে, বই আর পত্রপত্রিকায় অনেক পড়েছে। হুট করে সে এখানে কেন এলো, সে নিজেও জানে। এখন বাজে সাড়ে এগারটা। সাড়ে বারোটায় নাভানা গ্রুপে তার একটা ইন্টারভিউ আছে। যদিও সে ভালো করেই জানে ইন্টারভিউ দিয়ে কোনো লাভ হবে না। এবং সে মনে মনে ধরেই নিয়েছে বাকি জীবটা সে বেকার কাটিয়ে দিবে।
চামেলি বলল, আসেন কাছে আসেন। খুব করে আদর করে দেই। যেন আমার কাছে আপনাকে প্রতি সপ্তাহে আসতে হয়। হি হি হি। ঘরে বউ থাকলেও বউ ভালো লাগবে না। ঘুরে ফিরে আমার কাছেই আসতে হবে। আমি যাদু জানি, এই বলেই সে শাড়ির আঁচল ফেলে দিল। চমৎকার ভরাট বক্ষ। শাহেদ অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। তার ইচ্ছা করছে ছুঁয়ে দেখতে। ঠোট রাখতে। মুখ ঘষতে। চামেলি উঠে এসে শাহেদের গলা জড়িয়ে ধরলো। চুমু দিচ্ছে, তো দিচ্ছে না। ধীরে ধীরে শাহেদ অন্য দুনিয়ায় চলে যাচ্ছে। আজকের এই পরিস্থির জন্য শাহেদ মোটেও প্রস্তুত ছিল না। শাহেদের পুরো শরীর যেন অবশ হয়ে যাচ্ছে। সে চামেলিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। ঠোঁটে ঠোঁট রাখল। চামেলি বেশ এক্সপার্ট। এত সুন্দর করে চুমু নীলাও দিতে পারে না।
নীলার কথা মনে পড়তেই শাহেদের মাথা ঘুরে গেল। তীব্র অপরাধ বোধে ভূগতে শুরু করলো। নিজেকে নিজে বলল, ছিঃ। এতটা অধপতন! তার স্ত্রী নীলা। খুব ভালো সহজ সরল একটা মেয়ে। একদম দীঘির জলের মতো স্বচ্ছ, প্রানবন্ত। তার একটা মেয়ে আছে- দেখতে একদম পরীর মতোন। দিনের শেষে শাহেদ বাসায় ফিরলে স্বচ্ছ আর পবিত্র ভালোবাসা নিয়ে তাকে দুইজন দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে। এর চাইতে শান্তির পৃথিবীতে আর কি আছে!
চামেলি কখন ব্লাউজ খুলে ফেলেছে শাহেদ লক্ষ করেনি। সে উল্টো দিকে ঘুরে শাহেদকে বলছে ব্রা'র হুক খুলে দিতে। শাহেদ চামেলিকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিল। বল, স্যরি। আমি খুব স্যরি। পকেট থেকে পাচ শ' টাকা বের করে বলল, এই নাও রাখো। মেয়েটি বলল কাজ না করেই টাকা? শাহেদ বলল, রাখো, সমস্যা নাই। শাহেদ চলে যাবার আগে চামেলি জোর করে তার মোবাইল নাম্বার দিয়ে দিল আর শাহেদের না নিয়ে নিল।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:৪৮