যদিও আজ আমার জন্মদিন কিন্তু অন্য দশটা দিনের মতোই আজকের দিনটা পার করলাম।
সুরভি রাতে জোর করে বাইরে নিয়ে গেল। রাতের খাবার খেলাম রেস্টুরেন্টে। সুরভি'ই খাবারের বিল দিল। আমার পকেটের অবস্থা ভালো না। আমি সন্ধ্যার সময় বাসায় ফিরে দেখি সুরভি শাড়ি পড়ে রেডি। বেচারা আজকের দিনটা জোর করে আনন্দময় করে তুলতে অনেক চেষ্টা করেছে। আমি তাল মিলিয়ে যেতে চেষ্টা করেছি। রেস্টুরেন্টের খাবার খেয়ে একটুও মজা পাইনি। তবু সুরভিকে খুশি করার জন্য বললাম, ওদের খাবার তো অনেক ভালো। এরপর আবার আসবো এখানে।

গতকাল রাত বারোটায় আমি ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।
তখন সুরভি পাশের ঘরে নিয়ে গেল। কেক এনেছে। ফুল এনেছে। মোম বাতি জ্বেলে-টেলে একাকার অবস্থা। কেক কাটলাম। তার আগে ফু দিয়ে মোমবাতি নিভাতে হয়েছে। ছবি তুললাম। জন্মদিন উপলক্ষ্যে এত রাতে খুব করে সেজেছে। সেমাই আর পায়েস রান্না করেছে। নুডুলস করেছে। চালের আটা দিয়ে রুটি বানিয়েছে। সাথে গরুর মাংস ভূনা। এতসব কখন করলো কে জানে!

ছোটবেলা মা জন্মদিন উপলক্ষ্যে পোলাউ রান্না করতো। মূরগীর রোস্ট করতো। আর গরুর মাংস। চিংড়ি মাছ অথবা ডিমের ঝোল। আমরা চার ভাই কবজি ডুবিয়ে খেতাম। আব্বা যার জন্মদিন তাকে এক শ' টাকা দিত। অথবা জামা কাপড় কিনে দিত। ছোবেলায় সব কিছুতেই আণন্দ পেতাম। আবার কবে জন্মদিন আসবে সেই অপেক্ষায় থাকতাম। বড় আনন্দময় দিন ছিল। এখন জন্মদিন বা ঈদের দিনও আগের মতো সেই আনন্দ পাই না। বরং অস্বস্তি লাগে। জন্মদিন আসলে ছোট বাচ্চাদের জন্য। বাচ্চাদের আনন্দ দেখেও অনেক শান্তি।

ত্রিশ বছর সেই কবেই পার করে ফেলেছি। আর ত্রিশ বছর কি বাঁচবো? জীবন থেকে একটা বছর চলে গেল- এটা ভাবতেই মন খারাপ হয়ে যায়। অথচ আমার কত কাজ বাকি পড়ে আছে। হু হু করে সময় চলে যাচ্ছে। আজ অনেকে ফোন করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কেউ ম্যাসেজ দিয়েছেন। আবার অনেক কাছের মানুষ জন্মদিনের কথা ভুলে বসে আছেন। এরকমই হয়। এটা আমি মেনেই নিয়েছি। সবাই ভালো থাকুক। সুস্থ থাকুক- সব সময় এটাই কামনা করি। সুরভি অনেক কিছু গিফট করেছে। পারফিউম, ওয়ালেট, শার্ট।

এই পোষ্টে নিজের ব্যাক্তিগত কথা লিখে ফেললাম।
ছবিও পোষ্ট দিলাম। তবে আশা করি আজ কেউ রাগ করবেন না। কারন আজ আমার জন্মদিন। কাজেই কিছুটা ছাড় তো আজ পাবোই। আসলে ব্লগের প্রতিটা ব্লগারকে আমি আমার আত্মার আত্মীয় মনে করি। দীর্ঘ দিবস, দীর্ঘ রজনী আপনাদের সাথে আছি। সবাই ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। আমি এখন বিদায় নিচ্ছি। ঘুমাবো। শুভ রাত্রি। জয় বাংলা।