সকাল সাত টায় ঘুম থেকে উঠলাম।
ঘুম থেকে উঠার পর'ই ''দে দে পাল তুলে দে.../ মাঝি হেলা করিস না.../ ছেড়ে দে নৌকা আমি যাবো মদিনা...'' এই গানটা মাথার ভেতর বাজছিল। তাই ল্যাপটপ ছেড়ে গানটা বেশ কয়েকবার শুনলাম। দাত ব্রাশ করলাম, গোছল করলাম। গোছল করে বের হয়ে দেখি সুরভি নাস্তা রেডি করে ফেলেছে। রুটি, আলু ভাজি, ডিম পোজ এবং চা। আমি জটপট সকালের নাস্তা সেরে নিলাম। সকাল আট টায় বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম।
পরীবাগ ওবার ব্রীজে বিজন রয় নামে একজন ব্লগার আজ আমাকে দশটা আটচল্লিশ মিনিটে দেখেছেন। তিনি তা আমাকে আমার এক পোষ্টে মন্তব্যে জানিয়েছেন। ব্রীজের উপর উঠে আমি সেলফি তুলেছি তা-ও বলে দিয়েছেন। কিন্তু আমি তাকে দেখিনি আর দেখলেও চিনিতে পারবো না। আমি যাচ্ছিলাম মোঃপুর পোষ্ট অফিসের কাছে এক অফিসে। সেখানে কাজ সেরে আরও বেশ কয়েকটা জাগায় গেলাম। এর মধ্যে সুরভি ফোন দিল। তার সাথে কথা বললাম। কথা বলে মনে হলো আজ একই বিশেষ দিন। বিশেষ দিনটা কি- তা কিছুতেই মনে করতে পারলাম না।
দুপুরবেলা এক দরিদ্র হোটেলে লাঞ্চ সেরে নিলাম।
কই যাবো? কি করবো? কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। তারপরও কিভাবে যেন সারাটা দিন পার করে দিলাম। দেখতে দেখতে সন্ধ্যা হয়ে এলো। ভেবেছিলাম কোনো পূজা মন্ডপে যাবো। যাওয়া হয়নি। বিকেলবেলা রাস্তার পাশের এক চায়ের দোকান থেকে চা খেলাম। তারপর সুরভিকে ফোন দিলাম। সে বলল, আজ তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে। ঘটনা কি আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। সন্ধ্যা ছয়টায় বাসার উদ্যেশে রওনা দিলাম। খানিকটা হেটে, খানিকটা বাসে। এক কলেজের তথাকথিত ছাত্রনেতাকে দেখলাম। রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছে। কমপক্ষে তার সাথে ত্রিশ চল্লিশ জন পোলাপান। ভাইকে বিশেষ সম্মান দেখাচ্ছে। 'ভাই' তামিল ছবির হিরোর মতোন হেটে যাচ্ছেন। এর মধ্যে চারজন সামনে এগিয়ে এসে রাস্তা ক্লিয়ার করছে।
সুরভি আনারস খেতে চেয়েছিল। আনারস কিনলাম। মেয়েটা আইসক্রীম খেতে চেয়েছিল- তার জন্য ছোট কাপ আইসক্রীম নিলাম। আইসক্রীম বড় বাটি'ই কিনতে কিন্তু টাকা নেই। লন্ড্রী দোকানে জামা কাপড় ছিল সেগুলো নিলাম। রাত আট টায় বাসায় ঢুকলাম। সকাল আট টায় বের হয়েছিলাম। ঘরে ঢুকে দেখি সুরভি সুন্দর একটা শাড়ি পড়ে আছে। সে খুশিতে ঝলমল করছে। আজকে বিশেষ দিনটা কি আমি কিছুতেই মনে করতে পারছি না। মেয়ের সাথে সারাদিনের জমে থাকা গল্প করলাম। সুরভি চা দিল। দত্তা বইয়ের কয়েক পাতা পড়লাম। কিছু কিছু বই আমি বারবার পড়ি। তার মধ্যে দত্তা একটা। রবীন্দ্রনাথের শেষের কবিতা প্রতি বছরে একবার করে পড়ি। রাত দশটা বেজে গেছে।
রাতে খেতে বসে দেখি সুরভি অনেক কিছুর আয়োজন করেছে। অথচ ফ্রিজে গত একসপ্তাহ ধরে কিছুই নেই। সে কিভাবে ব্যবস্থা করলো কে জানে! রাতের খাবারের মেন্যু ছিলো- করলা দিয়ে রুই মাছের মাথা ভেঙ্গেভুঙ্গে রান্না করেছে। দারুন স্বাদ হয়েছে। খেতে একটুও তিতা লাগেনি। ডাল ছিল, মূরগীর মাংস ছিল, ইলিশ মাছও ছিল- এসব কিছুই আমি ধরিনি। করলা দিয়ে রুই মাছের মাথা রান্নাটা এতই স্বাদ হয়েছে যে এক গামলা ভাত খেয়ে ফেলেছি। রাত এগারোটা। সুরভি বলল, আজ একটা বিশেষ দিন, আর তুমি ভুলে বসে আছো! কিভাবে ভুলে যেতে পারলে? সে মন খারাপ করে শুয়ে পড়লো। আমি ব্লগ লিখতে বসলাম। আমার এখনও মনে পড়ছে না আজকের দিনটা বিশেষ কেন?
(পাঁচটা গল্প মাথায় জমা করে রেখেছি। লেখার সময় পাচ্ছি না। এর মধ্যে দুইটা ভূরের। একটা মোটিভশন টাইপ। এদিকে ল্যাপটপটা ভালো সার্ভিস দিচ্ছে না। নেটের স্প্রীডও বড্ড খারাপ। সামু ব্লগ খুললেও শান্তিতে কাজ করতে পারছি না। মিনিটে দুইবার একা একাই লগআউট হয়ে যাচ্ছে। একটা পোষ্ট পড়ে মন্তব্য করতে যেতেই- বলছে লগিন করতে। অথচ মাত্র'ই লগিন করলাম। আধা ঘন্টাতে কমপক্ষে পনের বার লগিন করতে হলো। এখন রাত একটা বেজে গেছে। ঘুমাবো। শুভ রাত্রি। সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন।)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১:০৫