আমাদের বিক্রমপুরে একটা কথা আছে- ''ছোটলোকের পোলায় যদি জমিদারী পায়, কানের আগায় কলম গুঁজে বাইজী নাচায়।'' কথাটা একদম সত্য। আমাদের এই সমাজ আজ কলুষিত। পচে গেছে, নষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট হতে কিছু আর বাকি নেই। কবি ঠিক'ই বুঝতে পেরেছিলেন। তাই কবি বলেছেন,- ''আমি জানি সব কিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে।'' আজ কবির কথা সত্য হয়েছে। সব নষ্টদের দখলে চলে গেছে। আরেক কবি বলেছেন, ''উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ''। হান্ড্রেড পার্সেন্ট সত্য কথা। আমরা সবাই জানছি, দেখছি। কিন্তু কিচ্ছু করার নেই। আমার প্রিয় কবি বলেছেন, ''অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ। দিন যত গড়ায় মানুষের নোংরামি তত বাড়তে থাকে।
একটা ছেলে যখন দিনের পর দিন হাজার চেষ্টা করেও চাকরী না পায়... সেই বেকার ছেলেটা পরিবারের সবচেয়ে কাছের মানুষদের কাছেই উপেক্ষিত হয়। এটা প্রচন্ড যন্ত্রনার। একটা মেয়ের যখন বিয়ে হয় না সেই মেয়েকে কটু কথা শুনতে তার পরিবারের কাছ থেকেই বেশি! এটা প্রচন্ড লজ্জা আর অপমানের। একটা অটিস্টিক বাচ্চাও একসময় তার পরিবারে উপেক্ষিত হয়! কি অদ্ভুদ ব্যাপার...!!! যাদেরকে সেই কঠিন মুহূর্ত গুলোতে বেশি দরকার হয়, তারাই উপেক্ষা করে সবচেয়ে বেশি! নিজের মা-বাপ পর্যন্ত বদলে যায়। যে ছেলের ইনকাম আছে সেদিকেই তাদের নজর বেশি। বেকার ছেলে খেলে কি না খেলো সেদিকে তাদের নজর নেই। ভাবা যায়- নিজের জন্মদাতা বাপ-মা পর্যন্ত বদলে যায়!
আমাদের এলাকার মসজিদে মনে হয় নতুন মাইক লাগিয়েছে। প্রতিদিন হুজুর আমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে দেয়। মনে হয়- হুজুর আমার কাছের কাছে মাইক নিয়ে আযান দিচ্ছেন। আমি ধড়ফড় করে লাফ দিয়ে উঠি। আমার বুক কাঁপতে থাকে। আমার একবার ঘুম ভেঙ্গে গেলে আর ঘুম আসে না। আমি অনেক রাত্রে ঘুমাই। তিনটার আগে বিছানায় যাই না। ঘুম আসে না, তাই বিছানায় যাই না। বিছানায় গিয়ে ছটফট করার কোনো মানে হয় না। ভোরবেলা খুব আরামের ঘুম আসে। কিন্তু হুজুর ঘুমাতে দেয় না। আযান আমার খুব পছন্দ কিন্তু এই হুজুরের গলা ভালো না। ভোরবেলা আযানের ধ্বনি শুনলে মনটা ভালো হয়ে যাবার কথা কিন্তু হুজুরের কন্ঠ শুনে বিরক্ত লাগে। মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে মসজিদে গিয়ে নালিশ করে আসি।
ইচ্ছা করে নির্জন কোনো দ্বীপে চলে যাই। এই সমাজের কাউকে আমার পছন্দ হয় না। সব ভন্ড, সব লোভী, সব স্বার্থপর। দ্বীপে যাওয়ার সময় আমি কিছু গানের সিডি, বই আর সর্বক্ষণের সঙ্গী হিসেবে একটি ল্যাপটপ নিয়ে যেতে চাই। মনের সুখে থাকব। বই পড়বো, লিখব আর ভাববো জটিল সব বিষয় নিয়ে। জটিল বিষয় বলতে- লিখিত রূপে জ্ঞানগত ও তাত্ত্বিক আলোচনা, জীবনবোধ, জীবনদর্শন, আত্মসমালোচনা, গঠনমূলক সমালোচনা- এগুলোই সর্বোত্তম সাহিত্য। যাই হোক, আমার লেখা শেষ। তবে, বিদায় নেওয়ার আগে শিরোনাম নিয়ে দু'টা কথা বলি- তা না হলে অনেকে বলবেন, শিরোনামের সাথে লেখার মিল নাই কেন? এটা কেমন ফাজলামো?
ষষ্ঠ বা সপ্তম ইন্দ্রিয় মানুষের রয়েছে। আর সেই ইন্দ্রিয়ানুভূতি মোটেও অলৌকিক কিছু নয়। ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় সবার থাকে না। ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়টি সাধারণত বিশেষ বিশেষ কিছু লোকের মধ্যে সুপ্ত অবস্থায় থাকে। ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের অধিকারী ব্যক্তি অতি সহজেই ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারেন। সাইকিক দৃষ্টিতে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়কে বলা হয় বিধাতার আশীর্বাদ। মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিতে চৌকস বা মেধাবী বলা হয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:১৩