somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

এই সমাজ- ৩

১১ ই জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বারো তেরো বছরের বাচ্চা ছেলেরা দল বেঁধে মোবাইল চুরী করছে নিয়মিত। অথচ এই বয়সে ওদের স্কুলে পড়ার কথা। দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহন করার কারনে তারা চুরী করছে। চুরীর টাকা দিয়ে নেশা করছে। নিজের চোখে দেখা দু’টা ঘটনা বলি।

মিরপুর-১ এবং মিরপুর- ১০ নম্বর বেশ ব্যস্ত এলাকা। মানুষের ভিড়, বাস গাড়ির যানজট এবং ফুটপাতের দোকান সব মিলিয়ে বেড়াছেড়া অবস্থা। কেউ কেউ যখন মোবাইলে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হয় বা ফুটপাত ধরে হাঁটতে থাকে তখন অল্প বয়সী বাচ্চা ছেলেরা ছোঁ মেরে মোবাইল নিয়ে মুহুর্তের মধ্যে ভেনিশ হয়ে যায়। বিশেষ করে, কোনো মেয়ে যখন রাস্তা পাড় হয়, হাতে মোবাইল থাকুক বা হ্যান্ড ব্যাগের মধ্যে মোবাইল থাকুক বা টাকার ছোট্র পার্টস থাকুক। কয়েকজন ছেলে রাস্তা পার হচ্ছে এমন ভাব ধরে ব্যাগের মধ্যে থেকে মোবাইল বা পার্টস নিয়ে যায়। আপনি দশ বা পনের মিনিট দাঁড়িয়ে থাকলেই এই দৃশ্য দেখতে পাবেন। প্রতিদিন একই ঘটনা অহরহ ঘটছে। এই ঘটনা শুধু মিরপুর-১ বা ১০ নম্বর নয়, ঢাকা শহরের বহু এলাকায় রোজ এমন ঘটনা ঘটছে। গুলিস্থান, কমলাপুর রেলস্টেশন, সদরঘাট, সায়দাবাদ, গাবতলী, যাত্রাবাড়ি, ফার্মগেট, মহাখালী ইত্যাদি এলাকায়।

বাস জ্যামে দাঁড়িয়ে আছে। একলোক বাসের মধ্যে কথা বলছে। জানালা দিয়ে এক পিচ্চি ছোঁ মেরে মোবাইল নিয়ে দৌড়। বাস থেকে নেমে ঐ পিচ্চিকে ধরা সম্ভব নয়। মোবাইল নিয়ে দৌড় দেওয়ার কাজটা এইসব টোকাই শ্রেনীর বাচ্চারা খুব ভালো পাড়ে। এইসব বাচ্চারা এত এক্সপার্ট হলো কি করে? আবার ধরুন, ড্রাইভার গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে। পেছনে স্যার বা ম্যাডাম বসে আছেন। যদি জানালা খোলা থাকে তাহলে কোনো না কোনো টোকাই মোবাইল থাবা দিয়ে নিয়ে ঝেড়ে দৌড় লাগায়। কারন গাড়িতে বসলেই সবাই মোবাইল টিপায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আশেপাশে তখন আর খেয়াল থাকে না। একসময় চলন্ত সিএনজি থেকে টোকাইদের মোবাইল নিয়ে যাওয়াটা ফ্যাশনে পরিনত হয়েছিল। ধরুন, আপনি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, হাতে মোবাইল অথবা সাথে ল্যাপটপ চলন্ত বাইক থেকে মুহুর্তের মধ্যে আপনার কাছ থেকে মোবাইল বা ল্যাপটপ থাবা দিয়ে নিয়ে যাবে। বাইকের সাথে দৌড় দিয়ে আপনি পারবেন না। পুলিশের কাছে গিয়েও কোনো লাভ নেই। তাই প্রতিটা মুহুর্ত সর্তক থাকতে হবে আমাদের।

এবার একটু অন্য বিষয় নিয়ে আলাপ করি।
এই যে ঢাকা শহরে এত এত কমিউনিটি সেন্টার। সেখানে রোজ বিয়ে শাদী হচ্ছে। এই সমস্ত বিয়ের অনুষ্ঠানে প্রচুর খাবার নষ্ট হয়। যে গুলোকে আমরা জুঠা বা এঁটো খাবার বলি। এই জুঠা খাবার গুলো কেনার জন্য টেন্ডার হয়। বহু লোক এই টেন্ডারে অংশ নেয়। কমিউনিটি সেন্টারের সাথে চুক্তি করে এক বছরে জন্য। এক বছরে যত অনুষ্ঠান হবে এবং অনুষ্ঠানের খাবার নষ্ট হবে তা তারা কিনে নিবে। এক বছরের জন্য দুই লাখ বা আড়াই লাখ টাকা। এই খাবার গুলো কিনে তারা কি করে? আরেক শ্রেনীর লোক রাত বারোটার পর এঁটো খাবার গুলো কিনে নিয়ে যায়। তারপর ভ্যানে করে বাংলামোটর, কাওরান বাজার, মিরপুর মাজার, হাইকোট মাজার, গুলিস্থান এবং কমলাপুর বিক্রি করে। অসংখ্য টোকাই বা রিকোশাওয়ালা বা ছিন্নমূল মানুষেরা সেই জুঠা খাবার কিনে খায়। এক প্লেট ত্রিশ টাকা। আমি নিজে রিকশাওয়ালা আর টোকাইদের বেশ আগ্রহ নিয়ে খেতে দেখেছি।

এই যে বাসা বাড়িতে রোজ রোজ ময়লা জমে। রান্নাঘরে রান্না শেষ করে প্রতিদিন এক দুই বালতি ময়লা জমে। প্রতিদিন ময়লাওয়ালা এসে ময়লা গুলো নিয়ে যায়। আপনি মাস শেষে পঞ্চাশ বা এক শ’ টাকা দিয়ে দেন। ঝামেলা শেষ। কিন্তু এই ময়লা গুলো কোথায় যায়? কি হয়? বাসা বাড়ির এই সমস্ত ময়লা নিয়েও লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যবসা হয়। বহু টেন্ডার চালাচালি হয় এই সমস্ত ময়লা নিয়ে। রাস্তার পাশে যে সমস্ত ডাস্টবিন দেখেন, গন্ধে আপনি নাক কুঁচকে রাখেন। সেই সমস্ত ডাস্টবিন অনেক মূল্যবান। এক শ্রেনীর বড় ভাই সেই ডাস্টবিন নিয়েও ব্যবসা করে লক্ষ লক্ষ টাকার। খিলগা এলাকার ডাস্টবিনে রামপুরা এলাকার টোকাইরা আসবে না। আবার খিলগা এলাকার টোকাইরা রামপুরার ডাস্টবিনে যাবে না। এটা অলিখিত নিয়ম। যদি যায়- তাহলে মারামারি লেগে যায়। মারামারি যেন না লাগে তার জন্য আছেন বড় ভাই। বড় ভাইরা সব দেখাশুনা করেন।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৯
১৩টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটা গাছ কাঠ হলো, কার কী তাতে আসে গেলো!

লিখেছেন নয়ন বড়ুয়া, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:০৬



ছবিঃ একটি ফেসবুক পেইজ থেকে

একটা গাছ আমাকে যতটা আগলে রাখতে চাই, ভালো রাখতে চাই, আমি ততটা সেই গাছের জন্য কিছুই করতে পারিনা...
তাকে কেউ হত্যা করতে চাইলে বাঁধাও দিতে পারিনা...
অথচ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×