***কেন হামাসের বিরোধিতা?? কারণ মুসলিম জাতির সত্যিকারের কোন নেতাই এমন অস্ত্র আর ক্ষমতার জন্য অন্ধ হয় নি... হতেও পারেনা... হামাসের মত অস্ত্রধারী খমতালোভীরা সবসময় যুদ্ধ ডেকে এনেছে এবং সেখানে নিরীহ মুসলিমরাই হতাহত বেশি হয়েছে। হামাস ফিলিস্তিনের অনেকের কাছেই নেতৃত্ব হিসেবে স্বীকৃত না। সেখানে সমগ্র মুসলিম তো প্রশ্নই ওঠেনা। ইসলামে ইয়াজিদের হাত দিয়ে অস্ত্র আর রক্তের মাধ্যমে ক্ষমতায় দখলের সুচনা ঘটে। সাধারণ মানুষ হত্যার মধ্যদিয়ে ইসলাম বাস্তবায়িত হতে পারেনা। ইসলামের নেতা আল্লাহ নির্ধারণ করেন। যারা সে পর্যন্ত ধৈর্য ধরতে পারেন না তারাই নিজেরা নিজেদের নেতা বা খলিফা হিসেবে ঘোষণা দিয়ে অস্ত্র দিয়ে বাস্তবায়ন করতে চায়। যেটাকে আমি ইসলাম বলতে পারিনা।
***হামাসের তুলনা ইসরাইলের সাথে দিলে যে অবস্থান দাড়ায় সেটাতে অবশ্যই হামাস সঠিক। কিন্তু ইসলামের সাথে হামাসের তুলনা দিলে হামাস সঠিক নয়। তাদের জনপ্রিয়তা তাদের কট্টর পন্থী বানিয়েছে। এর ফলে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে তালেবানদের মত করে শাসন করতে যেয়ে ইসরাইলকে নিরীহ মানুষ হত্যার উছিলা বানাতে সাহায্য করছে। আমার ক্ষমতার দরকার নাই বেঁচে থাকা দরকার। আর সেখান থেকেই আমি তাদের ধ্বংস চেয়েছি। হামাসের মত দল গুলো যতদিন থাকবে এরা ক্ষমতার জন্য নিরীহ মানুষদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবে। ইসরাইলের বিভিন্ন চক্রান্ত আর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে ২৫ জনকে হত্যা করলে ওরা ২৫০০০ মেরে ফেলে। বারবার ইসরাইল তাই করছে। এই রোজার মাসেও তাই করলো। সাধারণ মানুষ এইসব স্কোয়াডে থাকেনা অথচ তারাই মারা যায়। থাকনা মানুষ গুলো বেঁচে থাক। ক্ষমতা দিয়ে কি হবে যদি সবাই মারা যায়। কট্টরপন্থা ইমানের সাথে করবো মানুষের জীবনের সাথে না। যেখানে হামাস ছিলনা সেখানে ইসলাম প্রবেশ করেনি?? সারাবিশ্বে ইসলাম ছড়িয়ে পরার পিছনে কোন হামাসের দরকার হয়নি। কিন্তু ইসলামফোবিয়া ছড়িয়ে পরা, অস্ত্র আর ক্ষমতার রাজনীতি, হত্যাকাণ্ড আর রক্তপাত সৃষ্টি এগুলোর পিছনে এইসব হামাস জাতীয় দলগুলো রয়েছে। এরাই অন্যদের সুযোগ করে দিয়েছে ইসলাম সম্পর্কে নেতিবাচক বা সন্ত্রাসী শব্দটি ব্যবহার করার।
***তালেবানদের একসময় আদর্শ মানা হয়েছে। আজ আমরা জানি রাশিয়ার কাছ থেকে আফগান অঞ্চলে প্রভাব বিস্তার করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র আর অর্থ দিয়ে তালেবান বানিয়েছে। এই তালেবানের জন্য কত নিরীহ আফগান মারা গেল?? আলকায়েদা বাদ দিলাম। সাদ্দাম হোসেন?? তাকেও আমরা আদর্শ মানতাম। তিনি যে পরিমান মানবাধিকার লংঘন করেছেন তার খেসারত সাধারণ ইরাকিরা দিল। পাকিস্থান??? চরম কট্টরপন্থী খমতালোভি গোষ্ঠী আর সামরিক বাহিনী সাধারণ পাকিস্থানি জনগনের হত্যাকাণ্ড ডেকে এনেছে। আমি অবশ্য এটাকে আল্লাহর বিচার বলে মনে করি। ৭১ সালে নিরীহ মানুষ হত্যার বিচার যদি পাকিস্থান করতো আল্লাহ এইরকম গজব নাজিল করতো না। এই ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর অধিকাংশের অর্থ আর অস্ত্র দেয় কার?? আরবের ঐ সব ব্যবসায়ী ধনকুবের যারা ইহুদিদের সাথে সুদের ব্যবসা করে। ইমানের চাইতে টাকা আর বিলাস নিয়ে মত্ত থাকে কিংবা ঐসব কাফিররা যারা বিভিন্ন দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দিয়ে অস্ত্রের ব্যবসা করে অর্থনীতি দাড় করায়। কিংবা বিভিন্ন চক্রান্ত করে ক্ষমতা দখলকরে থাকতে চায়। আর ইসলাম কায়েম করানোর স্বপ্ন দেখিয়ে টাকা আর অস্ত্র দিতে থাকে। আমরাও যারা রক্ত গরম, ক্ষমতা পাওয়ার লোভে মত্ত, কিসের আল্লাহ খলিফা পাঠাবেন? কবেই বা পাঠাবেন?? আমি কি কোরআন হাদিস কম জানি বা মানি?? এইসব কিছু না ভেবে ওদের সেই বিছানো ষড়যন্ত্রে পা দেই। আর ইসলাম কায়েম করার নামে সাধারণ মুসলিমদের উপর ইঙ্গ-মার্কিন, ইসরাইল, ভারতীয় সেনাবাহিনী ডেকে আনি। সারা বিশ্বের অমুসলিমদের কাছে ইসলামকে সন্ত্রাসী হিসেবে তুলে ধরি।
হযরত আলী(রাঃ) মৃত্যুর পরে... খিলাফাতের দ্বন্দ্ব শুরু হলে নবীজি(সাঃ) খুব কাছের সাহাবাগণ জীবিত থাকলেও কেন তারা সে সময় রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে না ধরে ক্ষমতা গ্রহণের লালসা বাদ দিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে জীবন জাপন অত্যন্ত কঠিন এবং সম্পুর্ণ ভিন্ন পরিবেশে চলে গেলেন অনেকে যুদ্ধও করলেন কিন্তু কখনোই খমতার দিকে তাকালেন না। সারা জীবন পার করলেন আর সেখানেই শায়িত হলেন। আজ পর্যন্ত সেই সব সাহাবাদের এবং তার অনুসারীদের কেউ সন্ত্রাসী বলতে পারলো না। সকল ধর্মের মানুষ তাদের কাছে নিরাপত্তা পেত। তাদের মেনে চলতো। আব্বাসিয়, উমাইয়া, ফাতিমিদ বংশ সম্পর্কে আমরা জানি, তাদের মেলা কৃতিত্ব। কিন্তু কিভাবে আফ্রিকায়, ভারতে, ইন্দোনেশিয়াতে, চীনে, বলকান অঞ্চলে, মালয়েশিয়াতে এবং সারা বিশ্বে এতো মুসলিম হয়ে গেল?? কোন হামাস?? কোন তালেবান?? কোন ব্রাদারহুড?? কোন হিজবুল্লাহ?? এই মুসলিম বিশ্ব তৈরি করেছে?? তারা কেউ করেনি। তাহলে কেন তাদের ইসলামিক নাম ধারী মানবসৃষ্ট রাজনৈতিক কর্মকান্ডে এইসব নিরীহ মুসলিমরা মারা যাবে?? কেন এইসব বেদাত (নতুন) সিস্টেমের ধ্বংস চাইবো না। আমার নবী (সঃ) বেদাত থেকে সাবধান থাকতে বলেছেন কারণ বেদাত এর মধ্য দিয়ে শয়তান প্রবেশ করে। আর কত হত্যা আর রক্তপাত হলে এইসব হামাস দের বিশ্বাস হবে যে তাদের ডেকে আনা বেদাতের মধ্যদিয়ে শয়তান নিরীহ মুসলিমদের হত্যা করছে... ধ্বংস হোক এরা...
*** মুসলিম জাতির সত্যিকারের কোন নেতাই এমন অস্ত্র আর ক্ষমতার জন্য অন্ধ হয় নি... হতেও পারেনা..." - ইসলামিক ইতিহাস কী তাই বলে ? মুহাম্মদ কি ক্ষমতা চান নি......? ক্ষমতার উত্তরাধিকার নিয়ে কি খোদ মুহাম্মদের নিকটজনের মধ্যে লড়াই বাঁধে নি??
***কাউকে ডেকে নিয়ে বসানো... এবং সকলের সম্মতিতে বসা... অস্ত্রের মাধ্যমে শক্তি প্রয়োগ করে বসা এক নয়... ইসলামের ইতিহাস আর মুসলিম শাসকদের ইতিহাসের মাঝে পার্থক্য আছে... যদিও আমরা গুলিয়ে ফেলে নাম দিয়েছি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি... মুহম্মদ (সঃ) ক্ষমতা চাননি... মদিনা সনদ এবং মক্কা বিজয় তার প্রমাণ... সেই সাথে উত্তরসূরি নির্ধারণ না করে দিয়ে তিনি চূড়ান্ত প্রমাণ দেন তিনি ক্ষমতার জন্য পৃথিবীতে আসেন নি। ক্ষমতা তার জন্য সাধারণ কিছুই ছিল। তার পরবর্তী চারজন উত্তরসূরির মাঝে সমস্যা ছিল না। চার জনের একজনকে নিয়ে কিছু বিপথগামী সমস্যা তৈরি করেছিল। যারা আজও বিপথগামী... হযরত আলী (রাঃ) তাদের অনেক চেস্থা করেও, রাজধানী মদিনা থেকে কুফা তে নিয়েও ফেরাতে পারেননি। তারা প্রথম ইসলামে ভাঙ্গন তৈরি করে...। ক্ষমতার লোভে অন্ধ আমরা আজ যাদের আদর্শ মনে করি অথচ তারা বাতিল... এরা হচ্ছে শিয়া... (ইরান)। মুসলিমদের ইতিহাসে ের পর যারা এসেছে তারা কেউ আর ইসলামের ইতিহাস না। সবাই স্বঘোষিত খলিফা আর ক্ষমতা লোভি। সুতরাং তাদের প্রসঙ্গ আলাদা...