somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজিন রিভিউ: Terminator Genisys

০৩ রা জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুভি নির্মাতারা অনেক কষ্টে খেটেখুটে একটি মুভি বানায়। সেটি বানানোর আগে কত কাহিনী। কাহিনী বানাও, চিত্রনাট্য লেখো, অভিনেতাদের রাজী করাও। আর কর্পোরেটদের চাপতো আছেই। টাকা ডুবলে কিন্তু তুই শ্যাষ। পরবর্তীতে যখন অসাধারণ কিছু তৈরি হয় তখন সবাই বলা শুরু করে:”এই যমুনা সেতু আমি বানাইছি”। টাকার বোমা যখন পশ্চাতদেশে ফুটে তখন আর থামাথামি নাই। আরেকটি বোমা ফুটাও বাবা। শুরু হয়ে যায় সিকুয়েলের সুনামি।

তেমনি ১৯৮৪ সাল থেকে শুরু টার্মিনেটরের সিকুয়েলের খেলা। ১৯৯১ সালের দ্বিতীয় পর্বটি মুভির ইতিহাসে অন্যতম সেরা হলেও পরবর্তীতে সবগুলো মুভি টাকা বানানোর খেলা হয়ে গেছে। সেই টার্মিনেটর সিরিজের একেবারে পঞ্চম পর্ব : “টার্মিনেটর জেনিসিস”। আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার বলে কথা। না দেখে উপায় আছে?

কাহিনী জানা যাক। ২০২৯ সালের মানব বাহিনী পুরাই বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের মত। “স্কাইনেট”কে একের পর এক বাংলাওয়াশ দিচ্ছে। কোন উপায় না পেয়ে মানব বাহিনীর মাশরাফি জন কনর ( জ্যাসন ক্লার্ক) এর মা জননী কে মারার জন্য “স্কাইনেট” একটি রোবট পাঠায় টাইম মেশিনে করে। মা এর রক্ষাকর্তা হিসেবে জন কনর সেই টাইম মেশিনে করেই পাঠায় তার এক যোদ্ধা কাইল রিস ( জাই কর্টনী) কে। ১৯৮৪ সালের জন কনরের মা সারাহ কনর ( এমিলিয়া ক্লার্ক) কে বাঁচাবো। কী মজা কী মজা। কিন্তু গিয়া দেখা গেল কাহিনী তো গেসে ভচকাইয়া। সারাহ কনরকে বাঁচাইবো মানে? ১৯৮৪ সালে সারাহ কনর দেখি এখন ডেনেরিস টার্গেরিয়ান এর ন্যায় প্রস্তুত তার ড্রাগন নিয়া।

টার্মিনেটর মুভি মানেই একশান মুভি। এটিও একশান মুভি। কিন্তু প্রথম দুটি পর্বের সাথে তুলনা চলে আসায় একশানগুলি পুরোপুরি ভুয়া টাইপ মনে হয়েছে। মুভিটির কাহিনীটি মূলত টার্মিনেটর -১ এর কাহিনী থেকেই এদিক ওদিক করে বানানো হয়েছে। কাহিনী অনেক গাজাখুঁড়ি হয়ে গেলেও আমার মতে সয়ে যায়। তবে এই মুভির সবচাইতে বড় দিক হলো মুভির হাসির দৃশ্যগুলি। মুভিটি সব মিলিয়ে বেশ হাস্যরসাত্মক। বউ-শ্বাশুড়ির সম্পর্কের ন্যায় মুভিটিতে জামাই-শ্বশুড় নিয়ে এক ধরণের দ্বন্দ্ব আছে যেটি দেখতে বেশ মজা লাগে।

টার্মিনেটর মুভির নাম শুনলে একজনের নামই মনে আসে। সেটি হচ্ছে আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার। তৃতীয় মুভিটিতে শোয়ার্জেনেগারকে যখন বেশ বয়স্ক লেগেছিল তখনই বোঝা যাচ্ছিল এই মুভি আর হবেনা। চতুর্থ মুভিটি খারাপ না হলেও আর্নল্ডের অনুপস্থিতি একদমই ভালো লাগেনাই। সেখান থেকে আর্নল্ডকে একজন বয়ষ্করুপে পুনরায় উপস্থিত করার জন্য পঞ্চম মুভিটিকে বাহবা দিতেই হয়।

টার্মিনেটর হিসেবে পুরাই ফাটায় ফেলসে আর্নল্ড শোয়ার্জেনেগার। যতগুলি দৃশ্যে আর্নল্ড ততগুলো দৃশ্যে দারুণ উপভোগ করেছি। আর্নল্ডকে অভিনেতা হিসেবে বেশ দুর্বল বলে বিবেচিত করা হলেও এই চরিত্র আর্নল্ড ছাড়া কারো পক্ষে সম্ভব না। মুভির একটি সংলাপের মতই : “ বুইড়া হইসি কিন্তু এখনো যে কাউরে মাইরা হুতাইলবাম”। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি হোক কিংবা একশান মুভির মাইর, সবকিছুতেই জনপ্রিয় এই সুপারস্টার।

গেইম অব থ্রোনসের কল্যাণে বর্তমানে অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী এমিলিয়া ক্লার্ক এই মুভিটিতেও বেশ ভালো করেছেন। তবে কেন জানি মনে হয়েছে সারাহ কনর হিসেবে তেমন খুব একটা মানায়নি।

মুভিটির সবচাইতে বাজে অভিনয় করেছেন কাইল রিস চরিত্রে জাই কর্টনী। কে রে ভাই এইডা? দেখলেই সকাল-বিকাল থাপড়াইতে মন চায়। মুভিটিতে তার চরিত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু পুরাই ডুবাইসে। এছাড়া জেসন ক্লার্কের অভিনয় মোটামুটি হয়েছে। জে কে সিমনসের মত বিখ্যাত অভিনেতাকে অহেতুক রাখা হয়েছে।

মুভিটির মার্কেটিং টিমের সমস্যাটি কী এখনো বুঝলাম না। ট্রেলারগুলাতে পুরা কাহিনী গুইলা খাওয়ায় দিসে। আমি সবাইকে অনুরোধ করবো মুভিটি দেখার আগে ট্রেলারগুলি না দেখার জন্য।


মুভিটির পোস্ট ক্রেডিট একটি দৃশ্য আছে সুতরাং আমার মতো নাম দেখানো শুরু হলেই দৌড় না দিলেও পারেন। মুভিটি নিয়ে খুব বেশি আশা ছিল না। তবে খুব একটা খারাপও করেনি। সব মিলিয়ে মোটামুটি একটি টাইম পাস মুভি। তবে টার্মিনেটর সিরিজকে এগিয়ে নেবার জন্য এই মুভিটি একটি সুযোগ করে দিয়েছে সেকারণে পরবর্তী মুভিটি দেখার আশা পোষণ করছি।

রেটিং – ২.৫ / ৫
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৪২
১৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×