বাংলাদেশের মানুষের সবচাইতে প্রিয় কাজ হচ্ছে সংবাদপত্র পড়া। কী যে মজা পায় কিছুই বুঝি না। এমন না যে বিরাট জ্ঞানলাভ করে ফাটায় ফেলতেসে। আসল কারণ হলো বাস্তব কাহিনী বানানো কাহিনী থেকে অনেক বেশি রোমাঞ্চকর হতে পারে। ঠিক এমনই এক বাস্তব কাহিনী ১৯৫৯ সালের নানাবতী কেস। সেই কাহিনীর আদলেই এই নিয়ে তৃতীয় মুভি ‘রুস্তম’।
কাহিনী বেশি বলবো না। রুস্তম ( অক্ষয় কুমার) একজন দেশভক্ত নৌবাহিনী কমান্ডার। ছুটি পেয়ে বাড়ি আসার দুদিনের মধ্যেই পুলিশ থানায় গিয়ে নিজেকে আত্মসমর্পণ করে এবং জানায় যে তার হাতে একজনের খুন হয়ে গেছে। মামলা তো খুবই পরিষ্কার। খুনী নিজেই দোষ স্বীকার করেছে। কিন্তু আদালতের সামনে রুস্তমের জবাব “আমার কুনু দুষ নাই”। লাগে মহাভেজাল। আসল কাহিনীটা কী?
কাহিনী বেশ পেঁচানো হলেও মুভিটির মেকিং বেশ মজাদার। মুভির দ্বিতীয়ভাগ দেখে তো পুরাই কমেডি মুভি বলে মনে হয়। এরকম সিরিয়াস মুভিতে কমেডি আনার কারণে অনেক সমালোচকরা ক্ষ্যাপা হলেও আমার কাছে এটাই উচিত বলে মনে হয়েছে। নতুবা মুভিটি বেশ বোরিং বলেই মনে হতো।
কিন্তু কমেডির ব্যাপারটা ভালো হলেও মুভিটির কাহিনী এবং কাহিনীর সমাপ্তি মারাত্মক। আদালতের কেস নিয়ে যত খারাপ মুভিই হোক না কেন সেটা সাধারণত ভালোই লাগে। ধরুন, আসামী নায়কের বাঁচার কোন চান্স নাই। আসমান থেকে হঠাৎ এমন এক প্রমাণ এসে হাজির আর কেস খালাস। তবে এই মুভিটি মোটেও সেরকম যুক্তিহীন নয়। কেসের প্রতিটি ভাগ বেশ দারুণভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রথম মুভি হিসেবে পরিচালক টিনু সুরেশ সারদেশাই ভালোই করেছেন।
অভিনয়ের দিক দিয়ে অক্ষয় বরাবরের মতোই দারুণ। খুব বেশী অভিনয়শৈলীর দেখানোর সুযোগ না থাকলেও অক্ষয়ের স্থানে কোন খারাপ অভিনেতা থাকলে এই মুভির বারোটা বাজতো। এছাড়া গোয়েন্দা চরিত্রে পবন মালহোত্রা, বিচারক চরিত্রে আনাঙ দেশাই, সাংবাদিক চরিত্রে কুমুন্দ মিশ্র এবং কাজের বুয়া হিসেবে ঊষা নদকামিকে দারুণ লেগেছে।
মুভির নায়িকা চরিত্রে ইলিনা ডি ক্রুজকে সুন্দর লাগলেও অভিনয়ে তেমন কিছু করতে পারেন নি। এছাড়া এশা গুপ্তা এবং সচিন খেদেকারের অভিনয় তেমন ভালো লাগে নাই।
মুভির খারাপ দিক হচ্ছে খুবই গুরুত্বহীন একটি বিষয়। সেটি হচ্ছে ‘স্পেশার ইফেক্ট’। চরম ভুয়া টাইপ স্পেশাল ইফেক্ট দিলেও আমার মতে কিছুই যায় আসে না। মুভিটি চরম হিট খাইলেও সমালোচকদের মতে বাস্তব কাহিনীর অনেক প্যাঁচ এই মুভিতে দেখানো হয়নি। আমার মতে যতটুকু দেখানো হয়েছে তার চেয়ে বেশি দেখালে অনেক কিছুই বোঝা যেত না। সুতরাং হে সমালোচকরা, মুড়ি খাও।
বছরের সেরা মুভি হয়তো বলা যাবেনা তবে এক কথায় বেশ ভালো মুভি।
রেটিং – ৩.৫ / ৫.০
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:৫৯