চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য ট্রেনে বসে আছে “রুপন্তি” তার ঠিক সামনেই একটা সুদর্শন ছেলে বসা। রুপন্তি আড়চোখে সেই ছেলেটির দিকে দেখছিল। এমন সময় একটা ভিক্ষুক এসে ছেলেটির কাছে হাত পেতে বলল “ভাইজান পাঁচট্যা ট্যাকা ভিক্ষা দ্যান ভাইজান”। ছেলেটি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল; “তুমি ভিক্ষা কর কেন? কাজ করে খেতে পার না?” ভিক্ষুকটা বলল; “ভাইজান কাম কই পামু? কাম পাইলে কি আর ভিক্ষা করতাম?”। ছেলেটি বলল; “আচ্ছা আমি যদি তোমাকে কাজ দেই তুমি করবে?”
রুপন্তি বিস্ময়ে তাকিয়ে থেকে তাদের কথা শুনছিল। ছেলেটি ট্রেন থেকে নেমে গিয়ে সামনের দোকান থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে কিছু ম্যাগাজিন ও খবরের কাগজ কিনে দিল ঐ ভিক্ষুকটাকে।
ভিক্ষুক বলল; “ভাইজান আমি ৫ ট্যাকা ভিক্ষা চাইলাম আপনে দিলেন না, আর অহন আমারে ৫০০ ট্যাকার জিনিষ কিন্না দিলেন?”।
ছেলেটি বলল; “উঁহু আমি একেবারে তোমাকে টাকা টা দেই নি, তুমি এইগুলো বিক্রি করে তোমার লাভের অংশ রেখে বাকি টাকা আমাকে ফেরত দিবে। আর বিক্রি করার সময় কিছু টাকা চেয়ে নিবে। খুশি হয়ে যে যা দেয় সেটাই নিবে”।
রেললাইনে দুর্ঘটনাজনিত কারণে ট্রেনটি ষ্টেশনেই থেমে ছিল। ঠিক দু’ঘণ্টা পর ঐ ভিক্ষুকটি ৭০০ টাকা নিয়ে ফিরে আসল। ছেলেটিকে ৫০০ টাকা ফেরত দিতে চাইল কিন্তু ছেলেটি বলল; “এটা তোমার কাছেই রেখে দাও, এই টাকা দিয়ে আরও ম্যাগাজিন ও খবরের কাগজ কিনে সেগুলো বিক্রি কর এবং এভাবে লাভের টাকা জমিয়ে একটা দোকান দাও”।
ভিক্ষুকটার দুচোখ বেয়ে অঝরে জল ঝরতে লাগল, কাঁদতে কাঁদতে সে বলল; “ভাইজান আপনে মানুষ না ফেরেশতা, আল্লাহ্ আপনের ভালা করুক ভাইজান”।
রুপন্তি বিস্ময়ে অবাক হয়ে সবকিছু দেখছিল। মাত্র দু’ঘন্টা আগে যে ছেলেটি ভিক্ষা করত তাকে কিভাবে পাকা ব্যবসায়ী বানিয়ে দিল এই অসাধারণ ছেলেটি। মুহূর্তেই ছেলেটির প্রেমে পড়ে গেল "রুপন্তি"।