somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নির্বাচন পরবর্তী কৌশল - কোন সমঝোতা নয়, দাবীতে অটল থাকুন

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হয়ে গেল ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচন। অভীষ্ট লক্ষ্য সিদ্ধ হয়েছে বলে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দুপক্ষই দাবী করছে। এক বিচারে দুপক্ষের দাবীই সঠিক। আওয়ামী লীগের লক্ষ ছিল নির্বাচন হতে দেয়া, সেটা হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির লক্ষ্য ছিল রুখে দেয়া, সেটাও হয়েছে মানুষ ভোট না দিতে যাবার কারনে। কলামিস্ট গাফফার চৌধুরী দাবী করেছেন এই নির্বাচনটি হতে দেয়ার মাধ্যমে বিএনপির পরাজয় হয়েছে। সেটা সত্য, কারন এই নির্বাচনে দেশ এবং দেশের মানুষ হেরেছে। বিএনপি তো আর দেশের বাইরের কোন সত্ত্বা নয়।

এ ধরনের র্নিবাচন দেশে নূতন নয়। কিংবা নির্বাচনহীনতাও নূতন কিছু নয়। শেখ মুজিব সোজা সাপ্টা মানুষ ছিলেন। তিনি এরকম ফাউল নির্বাচন না করে বরং সংবিধানে লিখে দিয়েছিলেন ক্ষমতায় থাকার কথা। এতে আর সেবার অহেতুক নির্বাচনের পথে যেতে হয় নি, হয়েছিল অর্থ এবং শ্রম সাশ্রয়।

এ নির্বাচনে আমাদের কি কোন পাওনা নেই? হ্যা রয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে এখনও প্রয়োজনীয় তা এত মাশুল গোনার পরে সম্পূর্ন প্রমানিত হল। এই নির্বাচনটি ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিহীন একটি নির্বাচন। যা হয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বাধিক সহিংস এবং সর্বাধিক অর্থহীন। এত বেশী প্রার্থী আর কোন নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয় নি। বিচারপতি খায়রুল হকের ফর্মূলা ব্যর্থ হল, ব্যর্থ হল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পবিত্র বানী, "স্বাধীন নির্বাচন কমিশনই সুষ্ঠু নির্বাচনের গ্যারান্টি দিতে পারে।" কিংবা "অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় সেভাবে এদেশেও নির্বাচন হবে।" কোনটাই ঠিক হল না। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনতা চায় নি কিংবা অন্যান্য দেশের মত সুষ্ঠু নির্বাচনও হয় নি।

এমতাবস্থায় বিরোধী দলের করনীয় কি? তারেক রহমান অসহযোগের ডাক দিয়েছেন এবং আর কোন সমঝোতা নয় বলে দাবী করেছেন। এটিই সঠিক পথ। কারন এর আগে খালেদা জিয়া বহুবার সমঝোতার কথা বলেছিলেন। তারানকোকে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এমনকি হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখেও নির্বাচন সম্ভব বলে মত দিয়েছিলেন যদি ক্ষমতা খর্ব করা হয়। প্রচুর ছাড় দেবার পরেও সরকারী দল কর্নপাত করেনি। বরং এসব বিষয়গুলোকে সরকারী দলের মুখপাত্রদের কাছ থেকে খালেদা জিয়ার দুর্বলতা হিসেবে দাবী করা হয়েছে, "আন্দোলন করতে না পেরে খালেদা এখন সমঝোতার কথা বলছেন", "বিএনপি এখন আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি", "বিএনপির আন্দোলনের মুরোদ নেই।" সুতরাং বিএনপির দেয়া সমঝোতাকে সরকার পায়ে ঠেলে দিয়েছে। এখন আর কোন সমঝোতার প্রস্তাব বিরোধী দলের পক্ষ থেকে হবার নয়। তাহলে এত এত মৃত্যুর কোন অর্থ থাকে না। বিরোধী দল আর যেন নির্বাচনের কথা এই মুহুর্তে না ভাবে। কেননা সমঝোতার দ্বারা এখন নির্বাচন হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবী উপেক্ষিত হবে। বিএনপি জনদাবীর প্রতি সম্মান দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ করেছিল।
সাধারন মানুষ এখনও তত্ত্বাবধায়ক সরকারই চায়। ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতায় রেখে নির্বাচন আমরা চাই না। এতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড একেবারেই তৈরী হয় না। যদিও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নাও থাকতে পারে। কিন্তু জেনেশুনে নিশ্চিত ভাবে যেখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে না, সেই ব্যবস্থা মেনে নেয়া যায় না।

বিরোধী দল এই মুহুর্তে আন্দোলন করছে একটি অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে। এই সরকার জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয় নি, তাই অবৈধ। অবৈধ সরকারের সাথে আগ বাড়িয়ে কোন সমঝোতা করা যায় না। একমাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে দাবী আদায় করা যায়। এবং সে দাবী একটিই : তা হল সরকারের সম্পূর্ন পদত্যাগ।

আরেকটি কথা। দেশের মানুষ রয়েছে খুবই বিপদে। এই আন্দোলন যাতে কোন ভাবেই সাধারন মানুষের বিরুদ্ধে না যায়। এই আন্দোলনে মানুষের সমর্থন রয়েছে তার কারন সাধারন মানুষ তাদের ভোটের অধিকার ফেরত চায়। কিন্তু বিরোধী দল যেন এই আন্দোলনে অবৈধ সরকারকেই প্রতিপক্ষ বানায়, সাধারন মানুষকে নয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৪
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটা গাছ কাঠ হলো, কার কী তাতে আসে গেলো!

লিখেছেন নয়ন বড়ুয়া, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:০৬



ছবিঃ একটি ফেসবুক পেইজ থেকে

একটা গাছ আমাকে যতটা আগলে রাখতে চাই, ভালো রাখতে চাই, আমি ততটা সেই গাছের জন্য কিছুই করতে পারিনা...
তাকে কেউ হত্যা করতে চাইলে বাঁধাও দিতে পারিনা...
অথচ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×