somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আণ্ডার খিচুড়ি

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আপনি কি অবিয়াইত্যা? বাবা হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টের ছত্রতল হতে বহু দূরে যেখানে মাতৃ আঁচলের ছায়া পড়ে না, পোড়া কপাল নিয়ে সেইসব কোন এক জায়গায় পড়ে আছেন? অথবা আপনার বৌ কি ঝগড়া করে বাপের বাড়ি গেছে? ফ্রিজে কোন রান্না খাদ্য রেখে যান নাই| বুয়া আসে নাই? হোটেলের খাবার খেতে খেতে কি আপনার জিভে ঘা হয়ে গেছে? হ্যাঁ ভাই আপনাদের মতো হতভাগাদের তরেই আজকের এই নিবেদন।

রান্নার কথা উঠলেই লোকজনের মাথায় প্রথমে যেইটা আসে তা হল রান্নাঘরের চিত্র। এইটা ভুল। রান্নার উৎপত্তি তারও আগে, বহুদূরে যেখানে কৃষক শস্য ফলায়, মুরগীরা ডিম পাড়ে। আপনাকে অবশ্য অদ্দুর যেতে হবে না। দয়া করে বাজার পর্যন্ত যান আর নিচের লিস্টি অনুযায়ী জিনিসপত্রের ইস্তেমাল করেন।

উপকরণ :-
১. চাল
২. ডাল
৩. তেল
৪. লবণ
৫. পেঁয়াজ
৬. কাঁচা মরিচ
৭. রসুন
৮. হলুদ
৯. ডিম
১০. ডিজিটাল ক্যামেরা
১১. পিসি
১২. ইন্টারনেট কানেকশন
১৩. পানি
১৪. সবজি

এত বড় লিস্টি দেখে ভড়কে গেছেন? সরি, আন্ডার খিচুড়ি বলে তাকে আন্ডার এস্টিমেট করার কোন সুযোগ নাই। তবে লিস্টি দেখে ঘাবড়ানোর কিছু নাই। বেশিরভাগ জিনিসই আপনার ফ্রিজ-টিজ ঘাঁটলে পাওয়া যাবে। তো আসেন শুরু করি।

প্রথমে পিসি অন্য করেন, ফেসবুকে লগ ইন করেন তারপর স্ট্যাটাস দেন “খিদা লাগছে”।

দেশি পেঁয়াজ হলে দুই তিনটা লাগবে আর ইন্ডিয়ান জাম্বো সাইজের পেঁয়াজ হলে একটাই যথেষ্ট। পেঁয়াজটাকে সরু সরু করে কাটেন। কুচিকুচি করে কাটার নিকুচি করি, বহুত টাফ কাজ সেইটা।

এইবার গোটা তিন চারেক কাঁচা মরিচ কেটে ফেলেন।

সবজি কি কি আছে? এখন শীতকাল সুতরাং ফুলকপি থাকার কথা। দুই তিন টুকরা ফুলকপি ছাড়েন। গোটা দুই টমেটো। সিম টিম থাকলে সেইটাও ইস্তেমাল করা যেতে পারে। আলু টালু কিছু হবে? মোদ্দা কথা সবজি জাতীয় যা যা আছে সব নিয়ে আসেন।

আপনার বাসায় নিশ্চয় কফির মগ আছে? চা কফি না খেলেও অন্তত সিগারেটের এ্যসট্রে হিসাবে এক আধটা মগ থাকার কথা। ঐ মগের আধা মগ চাল আর বাকি আধা মগ ডাল নেন। অতঃপর সেইটাকে পানিতে ধুয়ে সার্ফেস হইতে আপনার ডান হাতের মধ্যমার মধ্যভাগ পরিমাণ পানি রেখে চুলার উপর বসিয়ে দিন। এতক্ষণ যেসব সবজি টবজির সাথে কাটাকুটি খেলেছেন, সবটা ঢেলে দিন। তারপর চায়ের কাপের আধা-কাপ পরিমাণ তেল আর এক চা চামচ পরিমাণ লবণ (কম বেশি হলে লেখক দায়ী নয়) এবং ছিটেফোঁটা হলুদ ছেড়ে দিয়ে মারেন ঘুঁটা। এইবার নিজের চুলায় আগুন দেন। সব শেষে গোটা তিনেক ডিম ভেঙে ছেড়ে দেন হবু খিচুড়ির বুকে, ভুলেও এখন আর ঘুঁটা দিবেন না। ডিম লেজে গোবরে হয়ে যাবে।

আবার ফেসবুকে যান এবং নতুন একটা স্ট্যটাস দেন :-

খর বায়ু বয় বেগে চারিদিক ছায় মেঘে ওগো মেয়ে তুমি চুলো পানে চাইও
তুমি ঢালো সরু চাল, আমি ঢালি মুগ ডাল তারপরে এ খিচুড়ি খাইও খাইও খাইও

দশ মিনিট অপেক্ষা করেন। দেখেন কেউ লাইক বা কমেন্ট করে কিনা আপনার স্ট্যাটাসে। তারপর পুনরায় চুলো পানে প্রত্যাবর্তন করে টেস্ট করে দেখেন লবণ ঠিক হল কি না। কম হলে খানিক লবণ ঢেলে দেন। বেশি হয়ে গেলে গুড লাখ উইথ ইওর খিচুড়ি।

এরপর মোটামুটি আর কিছু করার নাই। মাঝেমাঝে ফেসবুক থেকে উঠে চুলার আশেপাশে ঘুরঘুর করবেন। দেখবেন খিচুড়ি পুড়ে যেন না যায়। সব ‌ঠিকঠাক থাকলে আধঘন্টার মধ্যে পাক প্রকৃয়া শেষ হবার কথা।

তারপর আর কি। রান্না শেষ হলে খানিকটা খিচুড়ি প্লেটে তুলে আপনার ক্যামেরা দিয়ে একটা ছবি তুলেন এবং ফেসবুকে শেয়ার দেন। আমার রান্না খিচুড়ির কোন ছবি দিতে পারছিনা কারণ সব খেয়ে ফেলেছি।
১১টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×