somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওড়না নিয়ে কেন এতো টানাটানি?

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


২০১৭ সালে সরকারের বিনামুল্যে বিতরণকৃত ১ম শ্রেণির পাঠ্য বইতে ও-তে ওড়না চাই দেওয়া নিয়ে কেন এতো আলোচনা সমালোচনা? ওড়না তো কোন ধর্মীয় পোশাক নয়। ওড়না মেয়েদের শালীন পোশাক। নিশ্চয়ই শালীনতা শিক্ষা খারাপ কিছু নয়। যারা এই শালীন শিক্ষা নিয়ে এতো তর্ক বিতর্ক সৃষ্টি করছেন উনাদের বিকৃত চিন্তা ও মানষিকতা কি উনাদেরকে অন্তত একবার উনাদের বিবেকের কাঠগড়ায় দাড় করায়নি? নাকি উনাদের বিবেক এখানে অকার্যকর?

শালীনতা শিক্ষা শুধুমাত্র ১ম শ্রেণীতে নয়, প্রতিটি শ্রেণিতে দেওয়া উচিত। ছেলে মেয়ে উভয়ের জন্য দেওয়া উচিত। যারা পাঠ্য বইতে ও-তে ওড়না চাই দেওয়া নিয়ে বিকৃতি রচনা করছেন, তাদের মন মানষিকতা কতোটা বিকৃত তা কি ভাবার বিষয় নয়?

ওড়না কোন ধর্মীয় পোশাক নয়, ওড়না মেয়েদের শরীর ও লজ্জা ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ পোশাক। আমি একজন ভাই হিসেবে চাইবো আমার প্রিয় ভাই বোনটি শালীন পোশাক পরিধান করুক। আমি স্বামী হিসেবে চাইবো আমার প্রিয় সহধর্মিণী শালীন পোশাক পরিধান করুক। এবং কি আমি একজন সন্তান হিসেবে চাইবো আমার মা শালীন পোশাক পরিধান করুন। নিশ্চয়ই আমার প্রিয় ভাই, বোন, সহধর্মিণী, এবং মাও চাইবেন আমি শালিন পোশাক পরিধান করি ।নিশ্চয়ই আমার বোন, সহধর্মিণী, এবং মা আমার সাথে দ্বিমত হবেননা।নিশ্চয়ই আমার সাথে দ্বিমত নন দেশের ৯৫ ভাগ নরনারী। মাত্র ৫ ভাগ নরনারী আমার সাথে দ্বিমত আছেন, থাকবেন, ছিলেন। উনারা কারা? নিশ্চয়ই উনারা বিকৃত মন মানষিকতার অধিকারী। উনারা উনাদের বিকৃত মন মানসিকতা আমাদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চান। আমাদেরকে গড়ে তুলতে চান উনাদের মতো বিকৃত মন মানসিকতা সম্পন্ন।
উনাদের প্রতি আমার অনুরোধ আপনাদের বিকৃত মন মানসিকতা আমাদের মাঝে ছড়িয়ে দেবেন না । কারণ আমাদের শালীনতা আমাদের অহংকার। আমাদের গর্ব। লজ্জা আমাদের অমুল্য সম্পদ। দয়া করে আপনারা এ জাতিকে নির্লজ্জ বেপরোয়া করে তুলবেন না। এ জাতীর অহংকার গর্বকে ধংস করে দেবেন না। আমেরিকা হয়তো সুসভ্য জাতি কিন্তু শালীনতা নিয়ে তাদের বিন্দু মাত্র অহংকার করার মতো কিছু নেই। যা আমাদের আছে। আপনারা যদি মনে করে থাকেন সভ্যতা বা সুসভ্যতা মানেই অশালীনতা, তবে নিজের বিবেককে একবার প্রশ্ন করে দেখবেন কি আপনারা আপনার মা বোন বউ বাচ্চাকে কি অশালীন পোশাকে দেখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন?

কিছুদিন আগে যখন শিশুদের বইতে অ-তে অজগর ছিল, তখন একটা দল চিল্লাচিল্লি করেছিল কেন শিশুদেরকে শিক্ষা জীবনের শুরুতে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আজ উনারা কোথায়? উনারা কি নিজেদেরকে সফল ভেবে নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছেন? নাকী উনারাও আজ সেই ৫ ভাগের সঙ্গে আছেন?

আমার লেখাতে অসংখ্য বানান ভুল হয়। এখানেও না জানি কতটা বানান ভুল হয়েছে, এই ভয়ভীতি আমার মাঝে আছে বিরাজমান। এই বানান ভুলটা প্রধানত আমার যোগ্যতার অভাবে হয়। পরবর্তীতে আমার দক্ষতা অদক্ষতার অভাব। এখন অনেকটা বানান ভুল দিনদিন কমে আসছে, আমার সহলেখকদের সহযোগিতায়। অসংখ্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার প্রাণপ্রিয় সহ লেখকদের প্রতি।

আমি অযোগ্য ও অদক্ষ বলে হয়তো মেনে নেন আমার প্রিয় লেখকগণ আমার বানান ভুল হওয়াটা। কিন্তু সরকারি পাঠ্য বইয়ে বানান ভুল, ও লেখা বিকৃত করা মেনে নেওয়া যায়না কোন ক্রমেই। কারণ সরকারি পাঠ্য বই আমার মতো অযোগ্য ও অদক্ষ দ্বারা রচনা, সম্পাদনা, ও প্রকাশ করা হয়না। যারা সরকারি পাঠ্য বই রচনা, সম্পাদনা, ও প্রকাশ করেন উনারা স্ব-স্ব ক্ষেত্রে সুযোগ্য ও সুদক্ষ। এমন সুযোগ্য ও সুদক্ষ ব্যক্তিদের নিকট থেকে এমন ভুল আশা করা যায়না। কিন্তু সেটাই হয়েছে এবারের সরকারি পাঠ্য বইতে। সেটা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা মোটেও অহেতুক নয়। এটা আলোচনার সমালোচনার গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। নিশ্চয়ই এই আলোচনা সমালোচনা আগামি দিনের নতুন পাঠ্য বইতে ভুল না হওয়ার জন্য যথেষ্ট কাজে লাগবে। এই আলোচনা সমালোচনা নিশ্চয়ই আগামি দিনে রচয়িতা, সম্পাদক, ও প্রকাশককে সচেতন রাখবে নতুন সরকারি পাঠ্য বই প্রকাশে।

অল্প কিছু দিন আগে এনটিভির জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো “হাসো” অনুষ্ঠানে উপস্থাপক অভিনেতা সাজু খাদেম উপস্থিত চারজন তরুণীকে প্রশ্ন করেন বরিশালে দুধের উপর যা পরে তাকে কি বলে? না প্রশ্নটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাই একজন তরুণী প্রশ্নের উত্তর দেন “স্বর” বলে। কিন্তু না সাজু খাদেমের মতে উত্তরটা ভুল হওয়ায় সাজু খাদেম নিজের মতো সঠিক উত্তর দেন। উত্তরটা এতোটাই অশালীন, নির্লজ্জপনা ও যৌন হয়রানির মূলক যে, যা আমার লেখাতে উল্লেখ করা যাচ্ছেনা।

যখন একটা টিভি চ্যানেলে লাখ লাখ দর্শকের সামনে অশালীন, নির্লজ্জপনা ও যৌন হয়রানির মূলক অনুষ্ঠান করা হয়, তখন কেন প্রতিবাদের ঝড় উঠেনা আমাদের সুশীল ও মুক্তমনাদের বক্তব্য ও লিখনিতে ? তবে কি উনারা প্রকৃত সুশিল কিংবা মুক্তমনা নন? নাকী এমন অশালীন, নির্লজ্জপনা ও যৌন হয়রানিরকে উনারা সুশিল ও মুক্তমনা মনে করেন। নাকী উনারা শুধু মাত্র সরকারের সমালোচনা করতেই বেশী আনন্দ বোধ করেন।তাই উনারা এখন সরকারের বিনামুল্যে বিতরণকৃত ১ম শ্রেণির পাঠ্য বইতে ও-তে ওড়না নিয়ে এতো টানাটানি করছেন?
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:০৪
১৯টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×