somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ সেক্টর "৭১"

০১ লা আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




জুয়া



যারা জুয়া খেলে তারা জানে, নিয়তি বলে একটা ব্যাপার আছে। ম্যাডাম সেকুরা এখন জুয়া খেলার খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছেন। তাকে এখন একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই সিদ্ধান্তের উপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে। বিশেষ করে সেক্টর ৭১ এর নাগরিকদের ভবিষ্যৎ তার একটি সিদ্ধান্তেই পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে। তবে চিন্তা করার জন্য তাকে কিছু সময় দেওয়া হয়েছে। তিনি তার উপদেষ্টাদের মতামত আগেই নিয়েছেন। এখন শুধু তিনি অফিসিয়ালি হ্যাঁ বললেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।


অ্যাডাম স্মিথ অনেক দিন ধরেই এই চুক্তির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিছুক্ষন পরেই ম্যাডাম সেকুরা চুক্তিতে সাক্ষর করবেন বলেই আশা করছেন। এই প্রজেক্টটাকে তার ব্যবসায়িক জীবনের একটা স্বপ্ন কিংবা আল্টিমেট গোল বলা যেতে পারে। সেক্টর ৪৭ এ তিনি অনেক চেষ্টা করেও এই প্রজেক্টের কাজ শুরু করতে পারেন নাই। একদিক দিয়ে ভালোই হয়েছে। নিজের জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সাথে সেটা একটা প্রতারনার মত ব্যাপার হয়ে যেত। যদিও স্মিথের কাছে মুনাফাই হচ্ছে প্রথম ঈশ্বর। তার শত্রুরাও সেটা খুব প্রচার করে বেড়ায়।কিন্তু তারা জানে না মুনাফাটা তার কাছে আসল ব্যাপার না। এই মুনাফা লাভের জন্য যে ব্যবসায়িক এবং রাজনৈতিক খেলাটা তাকে খেলতে হয়, এই খেলাটা তিনি খুব উপভোগ করেন। সেকুরার সাথে তিনি এই খেলাটাই খেলে এসেছেন বেশ কিছুদিন ধরে। যদিও সেকুরাকে টোপ গেলাতে তার কষ্ট হয়েছে। সাপোর্টিং হ্যান্ডের দরকার হয়েছে। সেক্টর ৪৭ এর ঝানু রাজনীতিবিদদের দিয়ে তিনি একটা ট্র্যাপ ক্রিয়েট করেছেন। সেকুরার চারপাশে থাকা দুর্নীতিবাজ নেতা এবং আমলাদের খুঁজে বের করেছেন। স্মিথ জানে, সঠিক সময়ে সঠিক মানুষকে ঘুষ দিতে পারা একটা আর্ট। এবং এই ব্যাপারে তিনি একজন দক্ষ আর্টিস্ট। যদিও তিনি জানেননা যে, তার জন্য খুব বিস্ময়কর কিছু অপেক্ষা করছে।


কার্ল আরেকটি পরাজয় বরন করে নেওয়ার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত। তিনি তার জীবনের সব মেধা, স্কিল সেক্টর ৭১ এর নাগরিকদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ইউটিলাইজ করেছেন। কিছু মতবাদের আলোকেই তিনি তা করতে চেয়েছেন। কিন্তু ফলাফল প্রায় শুন্য। সবাই জানে তার যুক্তি ঠিক। তিনি ভালোর পক্ষে কথা বলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত খুব কম মানুষই তার পাশে এসে দাঁড়ায়। যেমন তার চোখের সামনে সেকুরা পরিবেশ বিরোধী এক চুক্তিতে সাক্ষর করে ফেলছে। কার্ল গবেষণা করে, প্রমান করে সবার সামনে এ প্রকল্পের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরেছিলেন। সবাই কনভিনসড। কিন্তু সবাই নিরব। এ সেক্টরের নাগরিকরা এত বড় এক সিদ্ধান্তের দায়িত্ব সেকুরার উপর ছেড়ে দিয়েছে। এটা বিস্ময়কর। যদিও কার্ল জানেন, বিভিন্ন ভাবে নাগরিকদের একটা সামাজিক এবং অর্থনৈতিক জালে আটকে ফেলা হয়েছে। এ জাল ছিন্ন করে জনতাকে সংঘটিত করার জন্য ঠিক যেমন নেতা দরকার, তেমন নেতা এদেশে নেই। কার্ল নিজেও একজন ব্যর্থ নেতা।


একটা বদ্ধরুমে কয়েকজন যুবক মিটিং করছে। এটাকে একটা ষরযন্ত্রও বলা যেতে পারে। তারা সেকুরা প্রশাসনের উপর পুরোপুরি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তারা জানে সেকুরা কিছুক্ষনের মধ্যেই এক পরিবেশ বিরোধী প্রকল্পের অনুমোদন দিয়ে দেবে। যা সেক্টর ৭১ কে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দেবে। তারা নিজেদের প্রানের বিনিময়ে হলেও এ প্রকল্প বন্ধ করতে চায়। তবে সেকুরা প্রসাশনের বিরুদ্দে তারা তেমন কিছুই করতে পারবেনা। জনগন তাদের চিনেও না। কেউ তাদের কোন কথায় কান দেবেনা। রাস্তায় নামলেই তারা গ্রেপ্তার হয়ে যাবে। তাই এমন কিছু করতে হবে যেন জনতা জেগে ওঠে। তারা খুব দ্রুত কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। একে অপরের হাতে হাত রেখে শপথ পাঠ করে। কিছুক্ষনের মধ্যেই মিডিয়াকে খবর পাঠাতে হবে।

প্রস এ্যান্ড কন



রুহার চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে আছে লিও। তারা খুব কমন একটা খেলা খেলছে। এক জন আরেকজনের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকবে। যে প্রথম চোখের পলক ফেলবে সেই হেরে যাবে। রুহা জানে, লিও এ খেলায় হেরে যাবে। লিও সবসময় হেরে যায়। লিও শুধু সে খেলাতেই জিতে যে খেলায় সে জিততে চায়। লিও হচ্ছে সেক্টর ৭১ এর সবচেয়ে জনপ্রিয় মেন্টালিস্ট। অনেক গুরুত্বপূর্ণ তদন্তে সে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে। সে এমন ভাবে যে কোন সমস্যার সমাধান বের করে ফেলতে পারে যা কেউ স্বপ্নেও ভাবেনা। রাজনীতি, ক্ষমতা এসব নিয়ে সে খুব একটা মাথা ঘামায়না। তার কাজ হচ্ছে সমস্যা সলভের পথ খুঁজে বের করা। ক্ষমতাবান কেউ যখন কোন সিদ্ধান্ত নিতে একটা দ্বিধার মধ্যে পরে যায় তখন তারা লিওর সাহায্য চায়।

আমার কেন যেন মনে হচ্ছে ম্যাডাম সেকুরা আজ তোমায় ডাকবে। লিওর চোখের দিকে তাকিয়েই বলল রুহা। চোখের পলক ফেলে হার মানল লিও। তুমিও দেখি আমার সাথে থাকতে থাকতে অনুমান করতে শিখে গেছ। আসলে প্রতিটি মানুষই সবসময় কিছুনা কিছু অনুমান করে। কিন্তু সঠিক ভাবে অনুমান করা খুব কঠিন ব্যাপার। হেসে জবাব দেয় লিও। তবে তুমি পেরেছ। কারন সেকুরা ম্যাডাম তার সাথে দেখা করতে বলেছেন। আমি কিছুক্ষন পরেই তার সাথে দেখা করতে যাচ্ছি। তোমার কাছে কি কোন সমাধান আছে? জানতে চায় রুহা। সমাধান আমার কাছে না থাকলেও সেকুরা ম্যাডামের কাছে আছে। আমি শুধু তাকে সেটা খুঁজে বের করতে সাহায্য করব। রুহার ঠোঁটে আলতো করে চুমু দিয়েই উঠে দাঁড়ায় লিও।


লিও চলে যাওয়ার পর রুহা খুব দ্রুত কিছু কাজ সেরে ফেলে। সে একটা গোপন কোডের মাধ্যমে এক জায়গায় কিছু খবর পাঠিয়ে দেয়। রুহা জানে স্মিথের লোকজন সব জায়গাতেই আছে। সে নিজেও স্মিথের কোম্পানির গোপন এজেন্ট।প্রোফেশনাল ব্যাপারে রুহা খুব দক্ষ। তার উপর নির্দেশ ছিল লিওকে এমন ভাবে হত্যা করতে হবে যেন সে সেকুরার সাথে কথা বলার মাঝপথেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে। তার আগেও না, আবার পরেও না। এতে করে ম্যাডাম সেকুরা মানসিক ভাবে পুরোই ভেঙে যাবে। সে বুঝবে সেক্টর ৪৭ এর কথা না শুনে তার আর উপায় নেই।


ম্যাডাম সেকুরা গভীর বিস্ময়ে হলোগ্রাফিক ভিডিওতে কয়েকজন যুবককে দেখছেন। সেক্টরের সবগুলো জনপ্রিয় মিডিয়া সেটা সরাসরি সম্প্রচার করছে। কয়েকজন যুবক গায়ে আগুন জ্বালিয়ে আত্মাহুতির হুমকি দিয়েছে। তাদের একটাই দাবি। সেক্টর ৭১ এর জন্য ক্ষতিকর এবং পরিবেশের জন্য হুমকি এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবেনা। তারা সেকুরার মুখ থেকেই সেটা শুনতে চায়। দুই ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে তারা পুরো জাতির সামনে আগুনে পুড়ে আত্মাহুতি দেবে। সেখানে ধীরে ধীরে মানুষের ভীর বাড়ছে। কেউ কেউ বিচ্ছিন্ন ভাবে স্লোগান দেওয়ার চেষ্টা করছে। সেকুরা খুব স্পষ্ট ভাবেই বুঝতে পারছেন খুব দ্রুতই তার প্রসাশনের বিরুদ্ধে মানুষ একতাবদ্ধ হয়ে যাবে। তাদের আবেগটা তিনি অনুভব করতে পারছেন। কিন্তু তারা অনেক তথ্যই জানেনা। এই চুক্তিতে সই না করলে সেক্টর ৭১ কে অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তিনি জানেন সেক্টর ৭১ অনেক শক্তিশালী সেক্টরের উপরই নির্ভরশীল। তার মধ্যে সেক্টর ৪৭ হচ্ছে অন্যতম। তারা এই সেক্টরের কিছু দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ইচ্ছেমত সুবিধা আদায় করে নিচ্ছে। সেকুরার প্রশাসনে এমন কিছু মানুষ আছে যারা অর্থ এবং ক্ষমতার লোভে নিজের বউ বাচ্চাকেও বিক্রি করে দিতে পারে। কিন্তু তিনি এদের দ্বারাই অবরুদ্ধ হয়ে গেছেন। খুব নিঃসঙ্গ লাগছে তার। একজনের কথা খুব বেশী মনে পরছে। তার বাবাকে আজ মিস করছেন তিনি। যার নেতৃত্বে সেক্টর ৭১ একদিন একদল পিশাচের সাথে লড়ে স্বাধীন সেক্টর হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছিল।


কার্ল এখন যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সেখানে অনেক মানুষ ভীর করেছে। কিছু যুবক আগুন লাগিয়ে আত্মাহুতির হুমকি দেওয়ার পর থেকেই সেটা মিডিয়ার মাধ্যমে পুরো সেক্টরবাসী জেনে যায়। তার পর থেকেই এখানে মানুষজন এসে অবস্থান নিতে থাকে। বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে তারা স্লোগান দিচ্ছে। কার্ল যুক্তি দিয়ে যা করতে পারেনি, কয়েকজন যুবক আবেগ দিয়ে তা করে ফেলেছে। তাদের আবেগ মানুষকে স্পর্শ করেছে। তারা প্রতিবাদে সামিল হচ্ছে। সময়ের সাথে সাথে সংখ্যাটা বাড়ছে। কার্ল জানে আবেগ দিয়ে কোন মুভমেন্ট বেশীক্ষণ সারভাইভ করতে পারেনা। সঠিক নেতৃত্ব না থাকলে সে মুভমেন্ট খুব দ্রুত ধূর্ত কিছু মানুষের হাতে চলে যায়। যা বরং এই মুহূর্তে আরো বিপদজনক হতে পারে।


স্মিথ কিছুটা উত্তেজনা অনুভব করছেন। কয়েকজন আবেগপ্রবন যুবক শেষে এসে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি করে ফেলেছে। মানুষ এতদিন অনেকটাই চুপ ছিল। এখন সরব হচ্ছে। সেকুরা প্রশাসন যদি এটা নিয়ন্ত্রন করতে না পারে তবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে আরো সময় লেগে যাবে। স্মিথ এমনিতেই এই প্রকল্পের পেছনে অনেকটা সময় ব্যায় করে ফেলেছে। সেক্টর ৪৭ এর প্রশাসন তাকে সময় এবং সমর্থন দুটোই দিয়েছে। তবে তারাও আর অপেক্ষা করবে বলে মনে হয়না। এই মুভমেন্টকে অন্য দিকে প্রবাহিত করতে হবে। যেন তা গনমানুষের সমর্থন হারিয়ে ফেলে। সেক্টর ৭১ এ তাদের কিছু পেইড ব্রোকার আছে। এদের কাজে লাগাতে হবে। তবে সেটা পরে। আপাতত তিনি একটা সংবাদের অপেক্ষায় আছেন। সেটা হচ্ছে মেন্টালিস্ট লিওর মৃত্যুর খবর। তিনি জানেন রুহা তার কাজের ব্যাপারে খুব বেশী ডেডিকেটেড এবং দক্ষ।

কাউন্টার পলিসি



লিও সব সময় মানসিক এবং শারীরিক ভাবে ফিট থাকে। নিয়মিত মেডিটেশন এবং ব্যায়াম করতে তার একদিনও ভুল হয়না। এখন সে ম্যাডাম সেকুরার মুখোমুখি বসে আছে। কিন্তু সে খুব ডিজি ফিল করছে। কেমন যেন ঘুম ঘুম লাগছে। অথচ তার এখন খুব বেশী সজাগ থাকা প্রয়োজন। লিও তার হার না মানা মানসিক শক্তি দিয়ে সজাগ থাকার চেষ্টা করে। সে বুঝে গেছে তাকে পয়জনিং করা হয়েছে। তার হাতে খুব বেশী সময় নেই আর। রুহার প্রতি রাগ, ক্ষোভ, বিস্ময় এসব এখন মন থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। তাকে এখন সেকুরার সাথে খুব গুরুত্বপূর্ণ এক আলোচনায় অংশ নিতে হবে।

তুমি অনুমান করতে পারছ কেন আমার তোমাকে দরকার। আমি একটা ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিনা। আমরা এখন এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার। আমি যে সিদ্ধান্তই নেই না কেন আমাদের সেক্টর ক্ষতিগ্রস্থ হবে। সেভাবেই ওরা প্ল্যান করে রেখেছে। তবে আমি চাচ্ছি এমন সিদ্ধান্ত নিতে যেখানে ক্ষতিটা কম হবে। জনগন আমাকে ঘৃণা করলেও সেক্টরের ক্ষতিটা যেন কমানো যায়। এ ব্যাপারে তোমার মতামত বল! সেকুরা খুব বিষণ্ণ কণ্ঠেই কথাগুলো বলে লিওর দিকে তাকায়। তবে লিওকে কেমন যেন খুব ক্লান্ত মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে তার বসে থাকতেই কষ্ট হচ্ছে।

একজন মহান নেতা বলেছিলেন, “ As we have already learned how to sacrifice our own lives, now no one can stop us!” লিওর কথা শুনে সেকুরা কেমন যেন খুব চমকে ওঠে। কথাগুলো তার মধ্যে এক অন্যরকম আলোড়ন তোলে। লিও কথা বলা থামায় না। সে আরো বলে, এই sacrifice কখন কেমন হবে সেটা সময় নির্ধারণ করে দেয়। এখন আমাদের শত্রু কোন সেনাবাহিনী না যারা আমাদের আক্রমণ করে হত্যার চেষ্টা করছে। এখন আমাদের শত্রু তারা যারা আমাদের অর্থনৈতিক ভাবে নির্ভরশীল করে পঙ্গু করে ফেলছে। জুজুর ভয় দেখাচ্ছে। কিন্তু আমরা যদি আমাদের অর্থনীতির চাকা, উন্নয়নের প্রকল্পগুলো নিজেরা নিয়ন্ত্রন করতে শিখি তবে হয়ত সাময়িক ভাবে আমাদের কিছু আরাম বিনষ্ট হবে। তবে আমরা ধীরে ধীরে শক্তিশালী হতে থাকব। লিওর কথা বলতে খুব কষ্ট হচ্ছে। সে আরো অনেক কিছু বলতে চায়। কিন্তু তার কাছে মনে হয় সব অন্ধকার হয়ে আসছে। লিও হঠাৎ করে পরে যায়। সেকুরা দৌড়ে লিওর কাছে যায়! সে আতঙ্কে কাঁপছে।



কয়েকজন মানুষকে জনতার ভীরে খুব সরব হতে দেখা যায়। সব ধ্বংস করে ফেলতে হবে এমন বলে তারা জনতাকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করছে। কার্ল খুব দ্রুতই বুঝে যায় এরা আসলে আন্দোলনকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। তাদের এখানে পাঠানো হয়েছে। কারা পাঠিয়েছে তা বুঝতে অভিজ্ঞ কার্লের খুব বেশী সময় লাগেনা। তবে কার্ল জানে এবার সে এদের প্রতিহত করতে পারবে। সে ক্ষমতা তার আছে।


যে সংবাদটি শোনার জন্য স্মিথ অপেক্ষা করছে অবশেষে তা সে জানতে পারে। লিও ইজ ডেড। এখন সেকুরাকে খুব চমৎকার ভাবে ব্ল্যাকমেল করা যাবে। সে তৃপ্তির হাসি হাসে। রুহা আসলেই একটা রত্ন। এমন কাউকে পাওয়াটা আসলেই খুব সৌভাগ্যের ব্যাপার!



হঠাৎ করে মিডিয়ায় ঘোষণা আসে ম্যাডাম সেকুরা সেক্টর ৭১ এর নাগরিকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন। সবার দৃষ্টি সেদিকে চলে যায়। সবাই বুঝতে পারে এখন তিনি তার সিদ্ধান্ত জানাবেন। যে সিদ্ধান্তের উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। তিনি আসলেন। তাকে খুব আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছে। তিনি খুব দৃঢ়তার সাথে ঘোষণা করলেন সেক্টরের পরিবেশের জন্য ক্ষতি হয় এমন কোন চুক্তিতে তিনি সাক্ষর করবেন না। এমন কোন প্রকল্পের কোন অনুমোদন তিনি দেবেন না। সবার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন “ As we have already learned how to sacrifice our own lives, now no one can stop us!” সমগ্র সেক্টরবাসি অবাক বিস্ময়ে দেখেন ম্যাডাম সেকুরা হাউমাউ করে কাঁদছেন। সেক্টর ৭১ এ তখন এক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটে। যে যেখানে আছে সেখানে দাঁড়িয়ে ম্যাডাম সেকুরাকে স্যালুট জানায়। তাদের অনেকের চোখেই তখন অশ্রু এবং স্বপ্ন একসাথে খেলা করতে থাকে।


পরিশেষে


ষড়যন্ত্রের অভিযোগে স্মিথকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেক্টর ৪৭ এর রাজনীতিবিদদের এ সিদ্ধান্তে স্মিথ বিস্মিত হয়নি। তবে আরেকজনকে দেখে সে খুবই বিস্মিত হয়। যার জন্য আজ তার এই পরিনতি। যে তার সব গোপন তথ্য আর ষড়যন্ত্রের খবর মিডিয়ার কাছে ফাঁস করে দিয়েছে। এই প্রথম স্মিথ মানুষ চিনতে ভুল করেছে।

লিও চোখ মেলে দেখে তার দিকে এক জোড়া মায়াবি চোখ নিয়ে এক মানবি তাকিয়ে আছে। যার চোখ ছলছল করছে। সেক্টর ৭১ এর গোয়েন্দা বাহিনীর চৌকস অফিসার রুহাকে আজ একেবারেই অন্যরকম লাগছে। লিও হেসে বলে, বিষের বদলে ঘুমের ঔষধ দিয়েছিলে। তবে ডোজ কিছুটা কম দিলেই পারতে। তারা একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে। কেউ চোখের পলক ফেলছেনা। রুহা ঠিক করেছে আজ সে ইচ্ছে করেই হেরে যাবে।

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৪
৪৫টি মন্তব্য ৪৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×