somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবাণুনাশকের অকার্যকারিতা ও এর বিশ্বব্যাপী বিস্তার

০৭ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ১২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ ৭ই এপ্রিল। বিশ্বস্বাস্থ্য দিবস। এবারের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে- “জীবাণুনাশকের অকার্যকারিতা ও এর বিশ্বব্যাপী বিস্তার”।

চারপাশ থেকে আমাদের শরীরে প্রতিনিয়তই জীবাণুর আক্রমণ চলছে- ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, পরজীবি ও ফাঙ্গাস দ্বারা। কিন্তু শরীরের নিজস্ব সহজাত ক্ষমতা তা প্রতিরোধ করে। আর যখন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, তখনই লাগে নির্দিষ্ট ঔষধ দিয়ে জীবাণু মারার প্রচেষ্টা চালানো। যখন শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পূর্নভাবে ভেঙ্গে পড়ে তখন সর্দি, কাশি বা ফ্লু-র মত সাধারন সংক্রমণেও মানুষ মারা যেতে পারে। যেমনটি এইডস এর ক্ষেত্রে ঘটে। তাই এখনই প্রয়োজন জীবন বাঁচাতে অ্যান্টিবায়োটিকের পরিমিত ব্যবহার নিশ্চিতকরন। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকাতে প্রতি বছর সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে অসংখ্য মানুষ মৃত্যুবরন করে। অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন রক্ষা পাচ্ছে, রোগের বিস্তার কমছে। কিন্তু বর্তমানে অ্যান্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতা অনেক জীবাণু নিয়ন্ত্রনকে অসাধ্য করে তুলেছে। ইচ্ছামত অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের ফলে যক্ষা, এইচআইভি এইডস, যৌনবাহিত রোগ, কালাজ্বর, ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড ও নিউমোনিয়ার মত রোগ প্রতিরোধে অনেক প্রচলিত ঔষধ ঠিকমত কাজ করছে না। তাই এব্যাপারে আমাদের দ্রুত অধিকতর সচেতন হতে হবে এবং সমন্বিত ব্যবস্থা নিতে হবে। কারন দেখা যাচ্ছে, গত কয়েক দশক আগে যে ঔষধ রোগ-জীবাণুর বিরুদ্ধে বিপ্লব ঘটিয়েছিলো, আজ তাতে তেমন কাজ হচ্ছে না। তাছাড়া অনেক সময় জীবাণুর বিরুদ্ধে ঔষধসমূহ কাজ করে না নানাকারনে। এর প্রধান কারন মূলতঃ অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার, প্রাকৃতিক নিয়মেই জীবাণুদের ঔষধের বিরুদ্ধে আরো অপ্রতিরোধ্য হওয়া ও উক্ত গুণ তাদের বংশ পরস্পরায় বয়ে নিয়ে যাওয়া, প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্পমাত্রার ডোজ ব্যবহার করা, নিম্নমানের ঔষধে সঠিক পরিমানে ঔষধ না থাকা, নির্দিষ্ট রোগের জন্যে সঠিক ঔষধ সেবন ও তার পুরো কোর্স সম্পন্ন না করা। সংক্রমণ প্রতিরোধে দূর্বল নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা, হাঁস-মুরগী, পশু পালন ও মৎস্য চাষে নিম্নমাত্রা ও বিধি বহির্ভূত ঔষধ ব্যবহার, অপ্রতুল রিসার্চের মাধ্যমে নতুন ঔষধ আসতে দেরী হওয়া ও অপ্রতিরোধ্য জীবাণু চিহ্নিত করতে না পারা, হাসপাতালে রোগীর দীর্ঘদিন অবস্থান ইত্যাদি। এসব থেকে মুক্তি পেতে প্রয়োজন অ্যান্টিবায়োটিক-এর পরিমিত ব্যবহারের উন্নতিকরন ও অপ্রতিরোধ্য জীবাণুর পরিবাহিত হওয়ায় বাধাদান। আসলে অ্যান্টিবায়োটিকের এমন অবিবেচনাপ্রসূত ব্যবহারে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়ছে। সহজে রোগ সারছে না, দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিতে হচ্ছে, মৃত্যুর হার বাড়ছে ও দামী ওষুধের প্রয়োজন হচ্ছে। ফলে চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে পড়ছে। তাই এর অকার্যকারিতা রোধে প্রয়োজন একটি জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা। সঠিক ব্যবস্থাপনা ও প্রয়োগে চিকিৎসক, ফার্মাসিস্টদেরকে ও সংশ্লিষ্ট অন্যদেরকে দক্ষ করে তোলা। হাসপাতালে সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রনে কমিটি গঠন ও এর কার্যক্রম নিশ্চিত করা। মানসম্মত ঔষধ উৎপাদন, বাজারজাতকরন ও বিধিবদ্ধ ব্যবহার নিশ্চিত করতে কঠোর আইন প্রয়োগ করা। তা না হলে কোন পার্থক্য থাকবে না পৌরণিক কাল ও ভবিষ্যতের মাঝে। বহু বছর আগে মানুষ মারা যেত অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ ছিল না বলে অতি সাধারন রোগে ভুগে । আর ভবিষ্যতে মানুষ মরবে এর অপব্যবহারের ফলে অর্থাৎ অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েও জীবাণুর বিরুদ্ধে কোন কাজ হবে না বলে। অতএব সাধু সাবধান! এখনই সময় সমাজের সবাইকে সচেতন করার।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×