somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

বিদ্রহীসূত
পাঠকের মুগ্ধতাই আমার লেখার প্রেরণা, সত্য প্রচার আমার লেখার উদ্দেশ্য আর মিথ্যাকে বিনাশ করে দিকেদিগন্তে সত্যের আলোকচ্ছটার বিচ্ছুরণই আমার লেখার চূড়ান্ত লক্ষ্য।

মসজিদের ইমাম নিয়োগের আগে জাতির ইমাম নির্বাচন জরুরি

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নামাজের ইমাম আর সমাজের ইমাম আলাদা নয়। ফকীহরা এমনও বলেছেন যে, নামাজের ইমামতি করতে অক্ষম ব্যক্তি খলিফা পদেরও যোগ্য থাকেন না। কিন্তু মুসল্লিদের দয়ার দানে বেতনপ্রাপ্ত একজন ইমাম মসজিদে থাকবেন সমাজে যার সামান্যও কর্তৃত্ব থাকবে না এমন ব্যবস্থা ইসলামে ছিল না- এটা ঐতিহাসিক সত্য। সুতরাং এটি দীনের মধ্যে সংযোজন বা বে’দাত ছাড়া আর কিছুই নয়।

তাহলে প্রশ্ন হলো মুসলমানদের সমাজে ইমাম কে হবেন আর মসজিদগুলোতে ইমামতির ধরনটাই বা কী হবে। এ বিষয়ে কিছুক্ষণ আগেই খানিকটা বলে এসেছি। বিষয়টি বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা বুঝতে হলে আমাদেরকে ইসলামের গোড়ায় যেতে হবে। প্রথম কথা হচ্ছে এমন একটি জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে হবে যারা আল্লাহর সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হবে। তারা এই কথার মধ্যে থাকবে যে তারা আল্লাহর হুকুম ছাড়া কারো হুকুম মানবে না। আল্লাহর ঘোষণা মোতাবেক তারা হলো মো’মেন।

এই মো’মেনদের কোনো খণ্ড খণ্ড জাতি সত্ত্বা নাই, আজকে আমরা যেটা দেখছি যে বাংলাদেশের মুসলমান, ভারতের মুসলমান, আরবের মুসলমান আলাদা, ইরানের মুসলমান, আফ্রিকার মুসলমান- তাদের কারো সাথে কারো জাগতিক জীবনের কোনো সম্পর্ক নেই, ইসলামের আকিদা কিন্তু এটা নয়। ইসলামে জাতি হবে একটা, তাদের ভূখণ্ডও হবে একটা, তাদের লক্ষ্য থাকবে অভিন্ন, তাদের নেতা, ইমাম হবেন একজন, সকল ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত হবে একটি। তিনি আল্লাহর হুকুম দ্বারা পুরো জাতিটাকে পরিচালিত করবেন। তিনি যেমন জাগতিক জীবনের নেতৃত্ব দিবেন তেমনি আধ্যাত্মিক জীবনেরও নেতৃত্ব দিবেন।

কারণ ইসলাম একাধারে মানুষের দেহ-আত্মা এবং দুনিয়া-আখিরাতের পথ নির্দেশ করে। এই জন্য রাষ্ট্রকে যেমন তিনি পরিচালনা করবেন তেমনি তিনি জাতির সদস্যদের নামাজেরও ইমামতি করবেন। তিনি তার যাবতীয় কার্য নির্বাহের জন্য বিভিন্ন এলাকায় তাঁর পক্ষ থেকে আমির নিযুক্ত করবেন। সেই আমিরগণ ইমামের নির্দেশ মোতাবেক তাঁর অধীনস্থ সকলকে পরিচালনা করবেন, তাদের সমাজের নেতৃত্ব দিবেন, তাদের নামাজেরও নেতৃত্ব দিবেন।

এই নামাজের গুরুত্ব কতটুকু সেটা বোঝা দরকার। আল্লাহ পবিত্র কোর’আনে অন্তত ৮২ বার নামাজ প্রসঙ্গে বলেছেন। নামাজ হচ্ছে আল্লাহর হুকুমসমূহের উপর জাতি যেন ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারে, তারা যেন সুশৃঙ্খল, সময়ানুবর্তী হতে পরে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হতে পারে, নেতার প্রতি আনুগত্যশীল হতে পারে, ভাই ভাই হতে পারে, সদাসর্বদা আল্লাহর হুকুমের অভিমুখী থাকতে পারে সেটার জন্য এই প্রশিক্ষণ হচ্ছে সালাহ। কাজেই একটা হচ্ছে প্রশিক্ষণ আরেকটা হচ্ছে ময়দানে তার বাস্তবায়ন। নামাজে যেটার প্রশিক্ষণ নেওয়া হবে বাস্তব সমাজে সেটার প্রতিফলন ঘটবে।

কাজেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নেতৃত্বদানকারী সমাজেরও নেতৃত্ব দিবেন। খোলাফায়ে রাশেদীনের সময় এটাই হয়েছে। সেজন্য আল্লাহ রসুল যদি জাতির উদ্দেশে কোনো বক্তব্য দিতেন সেই বক্তব্য আমিরদের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে যেতে যেতে একটি প্রত্যন্ত এলাকার মসজিদেও পাঠ করে শোনানো হয়েছে।

কিন্তু পরবর্তীতে যখন ইসলামের চেহারা পাল্টে গেল এবং একটা সময়ে জাতির রাজনৈতিক কর্তৃত্ব, আইন বিচার ইত্যাদি চলে গেল ব্রিটিশদের হাতে। আর ধর্ম ব্যাক্তিগত পর্যায়ে কোনোমতে টিকে রইল। দীনের ব্যপারে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কোনো কর্তৃপক্ষ আর রইল না, দুনিয়াবি সমস্ত নেতৃত্ব (ইমামত) চলে গেছে ব্রিটিশদের কব্জায়। ধর্ম যখন ব্যক্তিগত পর্যায়ে চলে গেল, তখন নামাজও ব্যক্তিগত উপাসনায় পর্যবসিত হলো। তখনই প্রশ্ন এলো যে কে নামাজ পড়াবে, আমির তো নেই, ইমাম তো নেই। যখন জাতি ঐক্যবদ্ধ ছিল, এক ইমামের অধীনে ছিল তখন এই প্রশ্ন ওঠে নি।

এই প্রশ্নের সমাধান করার জন্যই সামান্য বেতনের বিনিময়ে একজন পাঞ্জেগানা নামাজের ইমাম নিয়োগ দেওয়ার প্রথা প্রবর্তন করা হলো। সেই থেকে এই প্রথা কায়েম হয়ে গেল, সেখান থেকে জাতি আর উঠতে পারে নি, ওঠার চেষ্টাও করে নি।

এখন এই জাতির মুখ্য কর্তব্য হলো, পাড়া মহল্লার মসজিদের ইমাম নির্ধারণ, নিয়োগ, বেতন নিয়ে চিন্তা না করে আগে জাতির একজন ইমাম (নেতা) নির্ধারণ করা। তাঁর অধীনে তওহীদের ভিত্তিতে এক জাতি হওয়া। তখন সেই ইমামের সিদ্ধান্তে জাতির প্রত্যেকটি মসজিদে কে ইমামতি করবেন এবং তার সংসার কী করে চলবে এসব প্রশ্নের সমাধান করা হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:৫৫
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×