পানিকে জল বলিলে সে যে হিন্দু হইয়া যায় এ (কু) শিক্ষা ছোটবেলায় পেয়েছি। পড়শি হিন্দু মাসি আমাদের কাছে জলতেষ্টা বলিলে তিনি পানি পাইতেন না। পানি বলিতে হইবে না হলে মাসি তুমিতো জল খাইতে পারিবে না। মাসিকে মুসলমান বানানোর সেই চেষ্টা, সেই শিক্ষা কিভাবে আমাদের মধ্যে ঢুকিয়াছে তাহা বলিতে পারিবনা। তবে পরম্পরায় হইয়াছে বলিয়াই আমার বিশ্বাস।
পরম্পরায় কি ভাবে আসিল? উনারা কোথা থেকে পাইলেন? আমি জানি না। আমি মুসলমান। আমি নামাজ পড়ি। কিছুটা ভয়ে কিছুটা হুরপরী সম্মৃদ্ধ জান্নাতের লোভে। কুরআন পড়ি কারন ধর্ম উহাকে দারুন ভাবে উতসাহিত করেতেছে। কুরানে কি লিখা আছে তা জানিবার জন্য আমি পড়িনা। কারন আমি আরবি বুঝি না। আরবি আমার ভাষা নয়। আল্রাহর কাছে রহমত কামনা করি বাঙলায়। খোদা তুমি আমাকে রহম করো। বেহেস্ত নছিব কর।
কুরাআন হাদিস ইজমা কিয়াস কোন আইনেই বলা হয় নাই আরবি ছাড়া অন্য কোন ভাষায় খোদাকে ডাকা যাইবে না। বা ডাকিলে পরওয়ার দিগার উহা শুনিতে পারিবে না। বা শুনিলেও আরবীতে না বলার কারনে উক্ত দোয়া কবুল হইবেনা। হাদিসে লিখা আছে ‘’ইন্নামা আমালু বিন নিয়ত’’ মানে হচ্ছে তুমার নিয়ত কি, উদ্দেশ্য কি তার উপরই কর্মফল।
কিন্তু এই বং্গ দেশে পানিকে জল বলিলে যে কি গোনাহ!
পরম্পরায় কি ভাবে আসিল তা না বলতে পারলেও একটু ধারণা করা যায়। তুমি মুসলিম তুমি হিন্দু এই সাম্প্রদায়িক বিষবাস্প ছড়াইবার জন্য এ আয়োজন।
জল শব্দটি্ ইঙরেজী ওয়াটার শব্দের বাঙলা প্রতি শব্দ। ইঙরেজরা জলকে ওয়াটার বলিয়াই আল্লাহার কাছে দাবী করে গিভ আস সেফ ওযাটার। আমরা বলি রাব্বুল আলামিন আমাদের আর্সেনিক মুক্ত নিরাপদ পানি(জল) দাও। ‘পানি’ শব্দটি সম্ভবত ফারসি থেকে এসেছে। আরবীতে উহাকে শরাবও বলে থাকে। আমরা সাম্প্রদায়িক ধারণাকে সমাজে ছড়াইয়া দিতে নিজ ভাষা জলকে ত্যাগ করিয়া ফারসি ভাষা পানিকে গ্রহন করিয়া মুসলমানিত্ব পাকা করিতেছি।
তেমনিভাবে কিছুদিন যাবত উলুধ্বনি নিয়াও হৈচৈ হইতেছে। বর্ষ বরণ কেন উলুধ্বনী দিয়া শুরু হইয়াছে। তাহা নিযা আমাদের মধ্যে ব্যপক তোলপাড় হইয়াছে।
আমি যতটুকু জানি, উলুধ্বনি হিন্দুদের কোন ধর্মীয় অঙশ নয়। এটি হিন্দু অধ্যুষিত বাঙালীদের একটি আচার। আনন্দ উল্লাস জয় প্রকাশ করিবার জন্য তাহারা উলুধ্বনিকে ব্যবহার করে থাকে। ভারতে অনেক হিন্দু সম্প্রদায় কখনোই উলুধ্বনি দেয় না। কারন এটা হিন্দু ধর্মের কোন অঙশ না এ্টা বাঙালী কালচার মাত্র। মিশরের কিছু অঞ্চলের মুসলমানর বিজয় উল্রাসে উলুধ্বনি ব্যবাহার করে থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০১০ দুপুর ১২:৫০