নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁ ঘাটের ইজারাদার সেলিনা ইসলামের লোকজন তাঁকে অপহরণ করতে পারে বলে ধারণা করছেন শাহেদ কায়েসের সহযোগী মিস্টার আনিস। কবি ও সংস্কৃতকর্মী শাহেদ কায়েস দীর্ঘদিন ধরেই সোনারগাঁ উপজেলার মায়াদ্বীপ এবং নুনেরটেক চরের বালু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছিলেন। এর আগে তিনি বালু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ বালু উত্তোলন প্রতিরোধ কমিটি’ গঠন করেন। গত ১০ জুন ২০১৩ কবি শাহেদ কায়েস বালু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে মায়াদ্বীপ এবং নুনেরটেক রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তারপর থেকেই তাঁকে বিভিন্ন সময় নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য যে কবি ও সংস্কৃতকর্মী শাহেদ কায়েস সোনারগাঁয়ের মায়াদ্বীপ এবং নুনেরটেকের অবহেলিত জনগোষ্টীদের ভাগ্যোন্নয়নে গঠন করেন সুবর্ণগ্রাম ফাউন্ডেশন। তিনি এই ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। মায়াদ্বীপে কবি শাহেদ কায়েস তিনটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা সবাই ঋষি পাড়ার এবং জেলে পাড়ার। কবি শাহেদ কায়েস আমার বন্ধু। ভারতে কম্পিউটার সায়েন্সে পড়াশুনা করার পর বিদেশী স্কলারশিপ ত্যাগ করে নিজ এলাকায় প্রান্তিক ছেলেমেয়েদের জন্য শিক্ষার আলো হাতে তিনি নিরলস পরিশ্রম করছেন। মায়াদ্বীপের তিনটি স্কুল সম্পর্কে প্রায়ই আমাদের মধ্যে কথাবার্তা হতো। সুবর্নগ্রাম ফাউন্ডেশান নামে যে প্রতিষ্ঠান কবি শাহেদ কায়েস শুরু করেছেন, সেটার অনেক প্রোগ্রামের সঙ্গে আমি অনেক সময় জড়িত ছিলাম।
মেঘনার বালু সস্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়েই কবি'র উপর এই হামলা হল খুবই পরিকল্পিতভাবেই। আমরা এই হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। পাশাপাশি বালু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সরকারকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আহবান জানাই। দীর্ঘদিন ধরে একশ্রেণীর বালু ব্যবসায়ীরা মেঘনার বালু নিয়ে ব্যবসা করে আসছিল। বালু সন্ত্রাসীদের অবাধ বালু উত্তোলনের কারণে মেঘনা নদী এখন ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন বালু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি। এমনিতে বালু সন্ত্রাসীদের স্বেচ্ছাচারিতায় মেঘনা নদী এখন স্বাভাবিক ভারসাম্য রক্ষায় ব্যর্থ হচ্ছে। মেঘনা নদীর স্বাভাবিক গতি প্রকৃতির উপর অসংখ্য পরিবারের জীবন যাপন পরিচালিত হয়। বালু সন্ত্রাসীদের আক্রমণে সেই স্বাভাবিক জীবনযাপন এখন হুমকির মুখে। বিষয়টি নিয়ে কবি শাহেদ কায়েস প্রতিবাদ করায় তার উপর এই জঘন্য হামলা হয়েছে বলেই আমরা অনুমান করি।
সোনারগাঁও পুলিশ এবং প্রশাসন বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে যথোপযুক্ত বিচারে সচেষ্ট হবেন বলেই আমরা বিশ্বাস করি। কবি শাহেদ কায়েস দ্রুত সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক কাজকর্মে আবারো প্রাণ সঞ্চার করবেন বলেই আমরা হৃদয়ে শক্তি রাখতে চাই। আমার বন্ধু রাজীব নূরকে ফোন করে আমি শাহেদের সর্বশেষ অবস্থা জেনে একটু প্রাণ ফিরে পেলাম। আশা করছি বিষয়টি সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন যথাযথভাবে মূল্যায়ন করবেন। নইলে একজন কবি ও সংস্কৃতকর্মীকে প্রাণনাশের হীনচেষ্টার প্রতিবাদে সংস্কৃত অঙ্গন ফুঁসে উঠবে বলেই আমি বিশ্বাস করি। কবি শাহেদ কায়েস যতো দ্রুত আরোগ্য লাভ করে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন ততোই আমরা উদ্বিগ্ন থেকে স্বস্থি পাব। কবি শাহেদ কায়েসের উপর বালু সন্ত্রাসীদের নগ্ন হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৩৬