প্রতি পুল থেকে সেরা চারটি দল দ্বিতীয় রাউন্ডে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলবে। পুল-এ থেকে সেরা চারটি দল। আর পুল-বি থেকে সেরা চারটি দল। এ১ বনাম বি৪, এ২ বনাম বি৩, এ৩ বনাম বি২, এ৪ বনাম বি১। পরবর্তী রাউন্ডে প্রতি গ্রুপ থেকে সেরা দুইটি দল পরবর্তী রাউন্ডে সেমি-ফাইনাল খেলবে। কিউএফ১ বনাম কিউএফ৩ এবং কিউএফ২ বনাম কিউএফ৪। সেমি-ফাইনালের সেরা দল দুইটি ফাইনাল খেলবে।
বাংলাদেশের পুল-এ তে গ্রুপ পর্বের খেলাগুলো হল-
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, মানুকা ওভাল, ক্যানবেরা: বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান, বাংলাদেশ সময় রাত ০৯.৩০টা, ০৩.৩০ জিএমটি। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, ব্রিসবেন ক্রিকেট গ্রাউন্ড, উলুংগাবা, ব্রিসবেন: বাংলাদেশ বনাম অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ সময় রাত ০৯.৩০টা, ০৩.৩০ জিএমটি। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড: বাংলাদেশ বনাম শ্রীলংকা, বাংলাদেশ সময় রাত ০৯.৩০টা, ০৩.৩০ জিএমটি। ৫ মার্চ ২০১৫, সেক্সটন ওভাল: বাংলাদেশ বনাম স্কটল্যান্ড, বাংলাদেশ সময় ভোর ০৪.০০টা, ২২.০০ জিএমটি। ৯ মার্চ ২০১৫, অ্যাডিলেট ওভাল: বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ সময় রাত ০৯.৩০টা, ০৩.৩০ জিএমটি। ১৩ মার্চ ২০১৫, সেডন পার্ক, হেমিলটন: বাংলাদেশ বনাম নিউজিল্যান্ড, বাংলাদেশ সময় রাত ০৭.০০টা, ০১.০০ জিএমটি।
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ বিশ্বকাপ ক্রিকেট শুরু হবার পর ১৫ মার্চ ২০১৫ তারিখে শেষ হবে প্রথম রাউন্ডের খেলা। ১৮ মার্চ ২০১৫ তারিখে শুরু কোয়ার্টার ফাইনাল রাউন্ড। ২১ মার্চ ২০১৫ কোয়ার্টার ফাইনাল রাউন্ড শেষ হচ্ছে। ২৪ মার্চ প্রথম সেমি-ফাইনাল আর ২৬ মার্চ দ্বিতীয় সেমি-ফাইনাল। ২৯ মার্চ ২০১৫ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল।
এবারের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ প্রথম রাউন্ডে মোট ছয়টি ম্যাচ খেলবে। এই ছয়টি ম্যাচ খেলার পর যদি সাত দলের মধ্যে অন্তত সেরা চার-এ পৌঁছানোর যোগ্যতা অর্জন করে, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ দ্বিতীয় রাউন্ডে অর্থ্যাৎ কোয়ার্টার ফাইনাল খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। যেখান থেকে সরাসরি নকআউট পর্যায়ের খেলা শুরু। বাংলাদেশের প্রথম মিশন হওয়া উচিত প্রতিটি ম্যাচকে আলাদাভাবে বিবেচনায় নেওয়া এবং প্রতিটি ম্যাচেই জেতার টার্গেট। এবারের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ হল অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। কারণ এবার এই দুই দেশ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আয়োজক দেশ। তারা ঘরের মাঠে খেলবে। সেখানে আমরা সর্বোচ্চ ঢেলে খেলতে হবে। আমাদের দ্বিতীয় শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি শ্রীলংকা ও ইংল্যান্ড। আমাদের দ্বিতীয় মিশন হবে অন্তত এই দুইটি দলের একটির বিরুদ্ধে আমরা মরণপন খেলব। এই দুইটি খেলার একটি আমাদের যে কোনো কৌশলে সর্বোচ্চ দক্ষতা দেখিয়ে জিততে হবে। আমাদের তৃতীয় ও সর্বশেষ প্রতিদ্বন্দ্বি স্কটল্যান্ড ও আফগানিস্তান। এমনিতে এই দুইটি দলের চেয়ে কাগজে কলমে আমরা শক্তিশালী। কিন্তু মনে রাখতে হবে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে যে কোনো দলই যে কোনো দিন তাদের সেরা নৈপুন্য প্রদর্শন করে ম্যাচে জিততে সক্ষম। তাই এই দুইটি ম্যাচকে কোনোভাবেই হালকা ভাবে দেখার সুযোগ নেই। কোনো দলকেই দুর্বল দল মনে করার কোনো কারণ নাই। তাই সর্বোচ্চ নৈপুন্য প্রদর্শন করেই ম্যাচ জিততে হবে। আমরা যদি অন্তত তিনটি ম্যাচ জিততে পারি, তাহলে কোয়ার্টার ফাইনালে যাবার জন্য আমাদের দরজা মোটামুটি খোলা থাকবে। চারটি ম্যাচ জিতলে তো আমরা অবশ্যই কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বোরগোড়ায় পৌঁছে যাবো। তবে আমরা যদি পাঁচটি ম্যাচ জিততে পারি, তাহলে আমরা নিশ্চিত কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছাবো।
যদিও আমার চাওয়া টাইগার্স ছয়টি ম্যাচেই জিতুক। তেমন যদি হয়, অন্তত এবারের বিশ্বকাপ ক্রিকেট মিশনকে আমরা মাথায় নিয়ে নাচবো। কারণ, এরপর আমাদের সামনে থাকবে মাত্র তিনটি ম্যাচ। আমাদের যে জিনিসটি মাথায় রাখতে হবে, আমরা আসলে মোট নয়টি ম্যাচ খেলার টার্গেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড এসেছি। মাত্র নয়টি ম্যাচ। এই নয়টি ম্যাচকে নয় দিন, সম্পূর্ণ আলাদাভাবে বিচার বিশ্লেষণ করে আমাদের ম্যাচ স্টাটেজি সেট করতে হবে। তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রথম ছয়টি ম্যাচ। এই ছয়টি ম্যাচ আমরা ছয়দিনে আমাদের সর্বোচ্চ নৈপুন্য প্রদর্শন করে লড়াই করে জিততে চাই। এটাই হওয়া উচিত সবচেয়ে লক্ষ্য।
আমরা যদি অনাকাঙ্খিতভাবে কোনো দলের কাছে হেরে যাই, আমাদের মনোবল যেনো ভেঙে না যায়। মনে করতে হবে আমরা সম্পূর্ণ নতুন আরেকটি ম্যাচ খেলতে নামছি। আর নতুন ম্যাচটি জেতার মত সামর্থ আমাদের আছে। শুধু আমাদের সেরা নৈপুন্য, সেরা দলীয় পারফর্মানেন্সটা দেখাতে হবে। মনে রাখতে হবে, আমরা চারটি ম্যাচ জিততে পারলে অন্যরা আমাদের কঠিন ভাবে হিসাবে নেবে। আমাদের হিসাবে নেওয়া মানে আমরাও বিশ্বকাপ ক্রিকেট কাপের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি।
বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ থেকে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের দিকে অধীর আগ্রহ, প্রত্যাশা, স্বপ্ন আর ভালোবাসা নিয়ে তাকিয়ে থাকবে। আমাদের মাসরাফি-বাহিনীকে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ অন্তর দিয়ে ভালোবাসে। আমরা বিশ্বাস করি, টিম টাইগার্স, আমাদের গর্ব। টিম টাইগার্স আমাদের বুক ভরে শ্বাস নেওয়ার এই সময়ের সবচেয়ে বড় অবলম্বন। আমরা বুক ভরে শ্বাস নেব। টিম টাইগার্সের এক একটি জয়কে আমরা নানান রূপ ও বৈচিত্রে উদযাপন করব। আমরা আনন্দে ভেসে যেতে চাই। টিম টাইগার্স আমাদের বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণকে আবার এক সারিতে এক মাঠে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আনন্দ করার সুযোগ করে দেবে। যেখানে সকল রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সামাজিক, উচ্চবিত্ত, নিম্নবিত্ত, কোনো শ্রেণী-বর্ণ থাকবে না। আমরা যেখানে সবাই টাইগার্স। আমরা যেখানে সবাই বাংলাদেশ। আমরা সবাই যেখানে বাংলাদেশী। টিম টাইগার্সের জন্য, মাসরাফি-বাহিনীর জন্য অন্তর থেকে ভালোবাসা।
টিম টাইগার্স
১. মাসরাফি বিন মোর্তাজা (অধিনায়ক)
২. সাকিব-আল হাসান (সহ-অধিনায়ক)
৩. মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক, ব্যাটসম্যান)
৪. তামিম ইকবাল (ব্যাটসম্যান)
৫. আনামুল হক (ব্যাটসম্যান, অতিরিক্ত উইকেটরক্ষক)
৬. মোমিনুল হক (ব্যাটসম্যান)
৭. মোহাম্মদউল্লাহ (অলরাউন্ডার)
৮. নাসির হোসেন (অলরাউন্ডার)
৯. সাব্বির রহমান
১০. রুবেল হোসেন (বোলার)
১১. আল-আমিন হোসেন (বোলার)
১২. তাইজুল ইসলাম
১৩. আরাফাত সানি
১৪. সৌম্য সরকার
১৫. তাসকিন আহমেদ
টিম টাইগার্স জয়তু। জয়তু টিম টাইগার্স।
....................................
২৬ জানুয়ারি ২০১৫
ঢাকা
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৫১