বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইউটিউবে বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশান মিলে ঢাকার বিভিন্ন দেয়ালে আরবিতে 'যেখানে সেখানে প্রস্রাব না করার' যে বার্তা লিখে দিচ্ছে, তা কি আদৌ ধর্ম মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশান করছে? নাকি কোনো ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর এটি একটি অভিনব কৌশল? এই কাজটি সত্যি সত্যিই বা কারা করছে? বাংলাদেশের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান হলেও দেয়ালে লেখা এসব আরবি কয়জনে পড়তে পারে? যেখানে সেখানে প্রস্রাব বন্ধ করার জন্য আরবিতে দেয়াল লিখন করলেই সমস্যার সমাধান হয় কিনা সেটি কি আমাদের ধর্ম মন্ত্রণালয় বা সিটি করপোরেশানের আক্কেলে আছে?
পাবলিক টয়লেট না বানিয়ে আরবিতে দেয়াল লিখন কোনো সমাধান নয়, হে মুর্খ ধর্মমন্ত্রণালয় বা অকর্মন্য সিটি করপোরেশান। জনসংখ্যার সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে পাবলিক টয়লেট বানাতে হবে। আরবিতে দেয়াল লিখন কোনো সমাধান নয়। বাংলাদেশে আরবিতে দেয়াল লিখন কেন বন্ধ করা হবে না, সে বিষয়ে আমি মহামান্য আদালতের দৃষ্টি আকর্ষন করছি। আইন করে এটা এখনই বন্ধ করা হোক। বিবিসি বলছে, বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রী মতিউর রহমানের এক বার্তা সম্বলিত একটি ভিডিও এটা প্রচার করছে। আর পাশাপাশি ঢাকার বিভিন্ন দেয়ালে এই আরবি লেখার সংখ্যা বাড়ছে।
মাননীয় সরকার বাহাদুর, ধর্মমন্ত্রণালয়ের এ ধরনের মুর্খামি কোনোভাবেই গ্রহনযোগ্য হতে পারে না। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. চৌধুরী মোহাম্মদ বাবুল হাসান বিবিসিকে বলেন, আরবি ভাষা পবিত্র কোরানের ভাষা, তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মনে আরবি ভাষার ব্যাপারে একটা ভীতি কাজ করে, তাই দেয়ালে আরবি লেখা দেখলে সেখানে লোকেরা প্রস্রাব করবে না। কত বড় মুর্খামি রে বাবা। এখনই এই বিষয়ে সতর্ক না হলে বাংলাদেশকে এই বিষয়ে চরম মূল্য দিতে হবে। এমনিতে বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশে ইসলামী জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থানকে আড়াল করার সরকারি প্রচেষ্টা দীর্ঘদিন ধরে হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিজ্ঞানলেখক অভিজিৎ রায় হত্যাকে আল কায়েদা নিজেদের বলে দাবি করছে। এফবিআই এটাকে চালাতে চাচ্ছে বাংলাদেশে মৌলবাদীদের উত্থান হিসেবে। এসবের মধ্যে ঢাকায় এভাবে আরবিতে দেয়াল লিখন করে যেখানে সেখানে প্রস্রাব করা বন্ধ করার কৌশল মোটেও কোনো সুস্থ মস্তিস্কের কাজ নয়। বিষয়টি নিয়ে সরকার নিরব থাকলে তা বাংলাদেশের জন্যই ভবিষ্যতে বড় ধরনের ঝুঁকি নিয়ে আসবে। অতএব সাধু সময় থাকতে এসব মুর্খামি বন্ধ করুন।
................................
৬ মে ২০১৫
ঢাকা