somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেউ চুরি করে ভোট কেউবা সরকারি পাসপোর্ট!!!

২১ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সরকারি পাসপোর্ট ব্যবহার করে মানবপাচারের ঘটনা শোনার পর আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে হয় আকাশ থেকে পড়ল? পাসপোর্ট অধিদপ্তর যে বাংলাদেশের একটি প্রধান দুর্নীতির আকড়া, এটা মনে হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নতুন করে শুনলো? পাসপোর্ট পেতে হলে পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগে। দেশের বাইরে যেতে হলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স লাগে। এই দুটো কাজেই যে কত লাখ দুর্নীতি হয়, তা কি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানে না? অবশ্যই জানে, আর জানে বলেই এই প্রাকটিস বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর থেকেই হয়ে আসছে। এখনো হচ্ছে। এটা বন্ধ করার কোনো সদিচ্ছা কোনো সরকারেরই ছিল না। বর্তমান সরকারেরও নেই। নইলে এর আগে হাজার হাজার মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট সহ কতজন যে কতবার ধরা পড়লো, তারা কারা? তাদের পাসপোর্ট করে দিতে কি ভীনগ্রহ থেকে লোক এসেছিল? রোহিঙ্গাদের অনেকেও এই মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট করে নানান পথে বাংলাদেশের নাগরিক পরিচয়ে বাইরে গেছে, এখনো যাচ্ছে। এসব মনে হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানে না? এসব ঘটনা দু-এক দিন আলোচনায় থেকে আবার নাগরিক ব্যস্ততায় চাপা পড়ে যায়। মিডিয়ার কাছে নতুন খবর আসলে এসব খবরও চাপা পড়ে যায়। মানুষ এসব দুদিন পরেই ভুলে যায়। আর সেই সুযোগে এসব অপরাধ একটি মেগা ধারাবাহিক নাটকের মত চলতেই থাকে। পাসপোর্ট অফিস ও পুলিশের যৌথ প্রযোজনায় এই মেগা সিরিয়াল বাংলাদেশে মোটেও নতুন কোনো ঘটনা নয়।

বাংলাদেশের দুর্নীতি পরায়ন এই দুষ্টু চক্র খুব ভালো করেই জানে, ধরা পরা কোনো ঘটনা দু-একদিন আলোচনায় থাকার পর আবার ঢাকা পড়ে যায়। ওই দু-একদিন কোনো মতে 'সাময়িক বরখাস্ত' টাইপের সাজা মাথায় নিয়ে পার করতে পারলেই, আবার সব ঘটনাই ঘটানো যাবে। এই প্রক্রিয়াটি তো আর চিরতরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে না। তো এক মুন্সীর জায়গায় তখন আরেক মুন্সী আসবে। নতুন উদ্দামে নতুন রেটে আবার এসব অপকর্ম শুরু হবে। কিভাবে সেটা বোঝার জন্য আমাদের ফুট পথ থেকে পুলিশের হকার উচ্ছেদ বা পার্ক ও রাস্তার পাশের টং দোকান উচ্ছেদে পুলিশি অভিযানগুলো একটু খেয়াল করলেই ব্যাপারটা বুঝতে কারো অসুবিধা হবে না। হকার বা টং দোকানগুলো দিনের মধ্যে পুলিশ নানান অযুহাতে নানাভাবে উচ্ছেদ করে। কিন্তু দিনশেষে বা পরদিন সেগুলো আবার যথাস্থানে ঠিক আগের মতই বসে। মাঝখানে ওদের সাথে পুলিশের আরেকটা নতুন রেটে সাময়িক মৌখিক চুক্তি হয়। পুলিশ ছাড়াও এসব হকার ও টং দোকানদের ক্ষমতাসীন দলের চ্যালাচামুন্ডাদের কয়েক দফায় চাঁদা দিতে হয়। ব্যাস, মামলা খালাস। কিন্তু হকার বা টং দোকান স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করার কোনো সরকারি উদ্যোগ কখনোই কার্যকর হয় না।

একই ঘটনা এই পাসপোর্ট অফিসের বেলায়ও প্রযোজ্য। আগে তো আগারগাঁওয়ের পাসপোর্ট অফিসের বাইরে দালালদের হাজার হাজার চেম্বার ছিল। পাসপোর্ট অফিসে কি কি হয়, কোথায় কি কিভাবে করতে হয়, তা আমার চেয়ে ওখানের বারান্দায় যে ছোট্ট ছেলেটি আইকা/গাম নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, সে অনেক ভালো জানে। এখন দালালদের সেই চেম্বারের আদলটায় একটু পরিবর্তন ঘটেছে। ডিজিটাল যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এখন দালালদের কাজ কর্মেও আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। এসব পুলিশ জানে না বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব খবর রাখে না, এটা একদম অকল্পনীয় ব্যাপার। বরং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন দপ্তর বা অধিদপ্তরের একশ্রেণীর অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে এসব অপকর্ম রাজার হালেই হয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ থেকে ভিসা ছাড়া যেসব দেশে যাবার সুযোগ এখনো বেশি, এসব কাজে সেসব রুটই বেশি ব্যবহৃত হয়। আর সরকারি পাসপোর্টে যেসব দেশে বিনা ভিসায় যাওয়া যায়, সেসব দেশে সরকারি অনাপত্তি সনদ আর সরকারি আদেশ জাল করেই একজনকে সরকারি পাসপোর্ট দিয়ে সহজেই পাচার করার কাজটি করা যাচ্ছে। এই গোটা জালিয়াতি চক্রের সাথে পাসপোর্ট অফিস ও পুলিশের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরাসরি জড়িত। এদের সহায়তা ছাড়া কোনোভাবেই সরকারি আদেশ নিয়ে পাসপোর্ট বানিয়ে বাইরে যাওয়া একেবারেই অসম্ভব।

এতো গেল পাসপোর্ট অফিস আর পুলিশের ব্যাপার। আমাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে কি সবাই ধোয়া তুলসি পাতা? পাসপোর্ট অফিসের এই চক্রের সাথে বিমানবন্দরেও তাদের একটি বিশেষ চক্র এই কাজে সরাসরি জড়িত। যারা বিমানবন্দরে এদের ইমিগ্রেশান ছহিছালামতে করে পার করে দেবার কাজটি করে দেয়। আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই চক্রের সবাইকেই চেনে। খুব ভালো করেই চেনে। এমন কি এর সঙ্গে দেশের বড় বড় হোমরা ছোমড়া রাঘব বোয়ালরাও জড়িত।

সাগরপথে মানবপাচারের ঘটনা নিয়ে এখন সারা বিশ্বের মিডিয়ায় বাংলাদেশের নাম প্রতিদিন উচ্চারিত হচ্ছে। সাগর পথে মানবপাচারের সেই কাজের হোতা কারা? বড় বড় ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ এমন কি জনপ্রতিনিধিরা এসব অপকর্মে যে জড়িত, তা আমাদের পুলিশ খুব ভালো করেই জানে। সোজা কথায় এই চক্রের কাজকর্ম বন্ধে সরকারের সদিচ্ছা হয় না বলেই তা বন্ধ হয় না। সরকার এদের লাই দেন বলেই এসব অপকর্ম এখনো চলছে। সরকারি অনুমোদন নিয়েই চলছে।

পাসপোর্ট অফিসে হয়রানি বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে কাজে লাগানোর পর থেকে এখন একজন নাগরিক নিজেই বিনা বাধায় পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে কাগজপত্র জমা দিয়ে পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছেন। কিন্তু পাসপোর্ট অফিসে যত ধরনের অনিয়ম, অপকর্ম হয়, তা তো আর বন্ধ হয়নি। দালালদের এখন একটু ঘুর পথে সেই কাজগুলো করতে হয়। কারণ, পাসপোর্ট অফিসে তো সেই একই রক্ত মাংসের মানুষগুলোই বসে আছে।

দৈনিক প্রথম আলো'র খবর বলছে, ''দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় সরকারি কর্মকর্তারা ২০১২ সাল থেকে তুরস্কে ভিসা ছাড়াই যেতে পারেন। সেখান থেকে তাৎক্ষণিক ভিসা নিয়ে যাওয়া যায় ইউরোপের অন্যান্য দেশে। এই সুযোগটাই নিচ্ছেন একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি। আর এ কাজে সহায়তা দিচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তারাই। অনেক দিন ধরে এভাবে মানব পাচার হলেও এবারই প্রথম তা ধরা পড়ল। তুরস্ক সরকারের দেওয়া এক চিঠির সূত্র ধরে বিষয়টি জানাজানি হয়। তবে ঠিক কতজন এই পথে সরকারি কর্মকর্তা সেজে চলে গেছেন, তা জানা যায়নি। এর জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ চারজনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেওয়া এক চিঠিতে তুরস্ক বাংলাদেশের সরকারি পাসপোর্ট ব্যবহারকারী এ রকম তিনজনের একটি তালিকা পাঠিয়েছে। এঁরা হচ্ছেন তফিকুল ইসলাম (৫১২৫৮৪৫), মামুনুর রশিদ (৬১২৬০৪২) ও আমিন উদ্দিন (১১২৬৬৩৯)। চিঠিতে জানানো হয়েছে, তুরস্কের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সন্দেহ করে এমন আরও ব্যক্তির নাম পাঠানো হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, তুরস্কের পাঠানো এ অভিযোগের পর বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে এর সত্যতা পায়। কোন কোন কর্মকর্তা এসব পাসপোর্টে স্বাক্ষর করেছেন, কারা সিল মেরেছেন, কার নির্দেশে তা তৈরি হয়েছে—এসব যাচাই-বাছাই করা হয়। তদন্ত শেষে ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে চিহ্নিত করে অধিদপ্তর। তাঁরা হলেন পাসপোর্ট অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মুন্সী মুয়ীদ ইকরাম, সহকারী পরিচালক এস এম শাহজাহান, উচ্চমান সহকারী মো. শাহজাহান মিয়া এবং মো. সাইফুল ইসলাম। এই চারজনকেই মিথ্যা তথ্য ও জাল অনাপত্তি সনদ দেখিয়ে সরকারি কর্মকর্তা নন এমন নাগরিকদের ‘অফিশিয়াল পাসপোর্ট’ দেওয়ার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিভাগীয় তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে সহকারী পরিচালক এস এম শাহজাহান এখন মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট প্রদানে সহায়তার জন্য সৌদি আরবে আছেন।

বরখাস্তের আদেশ দেওয়া চিঠিতে পাসপোর্ট অধিদপ্তর বলেছে, প্রাপ্যতাবিহীন ব্যক্তিদের ‘অফিশিয়াল পাসপোর্ট’ দেওয়ায় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। যাঁরা সরকারি কর্মকর্তা সেজে ‘অফিশিয়াল পাসপোর্ট’ নিয়ে তুরস্কে গিয়েছেন, তাঁদের পাসপোর্ট আবেদনপত্র যাচাই করে দেখা গেছে যে আবেদন গ্রহণের প্রক্রিয়ার সঙ্গে পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ওই পাসপোর্টের আবেদনপত্র গ্রহণ ও ইস্যু প্রক্রিয়ায় জড়িত থেকে কর্মকর্তারা কর্তব্যে অবহেলা ও গুরুতর অসদাচরণ করেছেন।

তবে পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, তদন্তে সরকারি কর্মকর্তা সেজে বিদেশে যাওয়া শতাধিক ব্যক্তির নাম বের হয়ে আসতে পারে। আর এগুলো তো হঠাৎ করে হচ্ছে না, অনেক দিন ধরেই চলছে। তেমন আভাসই পাওয়া যাচ্ছে। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, যাঁরা এভাবে বিদেশে গেছেন, তাঁরা জঙ্গি বা অন্য যেকোনো দলের বা গোষ্ঠীর লোক হতে পারেন। আবার সাধারণ কেউও হতে পারেন।''

এবার পাঁচ মিনিট চোখ বন্ধ করে একটু ভাবুন, বাংলাদেশের পাসপোর্ট অফিস কত বড় ভয়ংকর অপরাধে জড়িত। এদের সহায়তা নিয়ে বিশাল কোনো জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যরা অনায়াসেই বাইরে যেতে পারে। বাইরে গিয়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়ে সরকারি পাসপোর্ট থাকায় তারা আবার আরামসে দেশে ফেরত আসতে পারে। আর জঙ্গিরা যে এই রুটটি ব্যবহার করছে না, এটা তো কেউ নিশ্চিত করতে পারছে না। তাহলে কি ধরে নিতে হবে, আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সবকিছু জেনেশুনেও না জানার ভান করছে?

আমি তো মনে করি, বাংলাদেশের পুলিশ দেশের কে কে ভালো মানুষ, কে কে কি কি অপরাধ করে, কে কে কি কি চোরাচালানে জড়িত, কে কে মানবপাচারে জড়িত, কে কে পাসপোর্ট জালিয়াতিতে জড়িত, কে কে স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িত, কে কে নারী ও শিশু পাচারে জড়িত, কে কে চাঁদাবাজিতে জড়িত, কে কে অবৈধ সম্পত্তি বানানে জড়িত, কে কে সরকারি সম্পত্তি দখলে জড়িত, কে কে সংখ্যালঘুদের উচ্ছেদের সঙ্গে জড়িত, এদের সবাইকেই খুব ভালো করেই চেনে। আর সরকার বাহাদুরের সদিচ্ছা থাকলেই কেবল এসব প্রতিটি চক্রের সকল রাঘব বোয়ালদেরই পুলিশ হাতে নাতে মাত্র এক সপ্তাহের নোটিশেই ধরতে সক্ষম। কিন্তু যারাই সরকারে থাকে, তাদের সঙ্গেই এসব কুচক্রের রাতারাতি সখ্যতা তৈরি হয়। কারণ সেই সখ্যতায় টাকার লেনদেন আছে। তাই সরকার বাহাদুর ইচ্ছে করেই এসব লালন-পালন করে। তাতে কিছু লোকের দুচার পয়সা আয়-রোজগার হয়। এরা দলীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মোটা অংকের চাঁদাটাদা দেয়।

বাংলাদেশের মত গরীব একটি দেশে এসব ঘটনা ঘটবে, এটাই তো বরং স্বাভাবিক। এসব ঘটতে না দিলে তো দেশ নরওয়ে-সুইডেনের মত অতি ভালোতে পরিনত হবে। তা তো আমাদের সরকারের সদিচ্ছায় নেই। দেশের মানুষের গড় আয় ১৩১৪ মার্কিন ডলার। চোরাই পথে মানবপাচার যত বেশি হবে, ততই দেশে রেমিটেন্স ঢুকে মাথাপিছু গড় আয় আরো দ্রুত বাড়বে। দেশ শনৈ শনৈ করতে করতে গরীব থেকে মধ্যম আয়ের দেশে, মধ্যম আয় থেকে ধনিক দেশে পরিনত হবে। আহা আর কি চাই???

বরং সরকার বাহাদুর যেটা মন থেকে যেটা চায়, সেটা হল, এসব অপরাধী চক্রের কাজকাম নিয়ে আলাপ আলোচনা কম হোক। তুরস্কের মত দু'চারটা দেশ দু'চারটা চিঠি দিয়ে এসব বিষয়ে সরকারকে অবগত করলে, তার জন্য সাময়িক বরখাস্ত নিয়ম তো আছেই। এটা নিয়ে এতো উতলা হলে তো চলে না রে ভাই। দেশে এরচেয়ে কত বড় বড় কাজ আছে, যা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এগুলো তো কোনো আলোচনার বিষয়ই না। এগুলো সরকারের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আরো সুস্পষ্ট করে বললে বলতে হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সাময়িক বরখাস্ত নিয়মে সরকার এসব খুব ভালোভাবেই ট্যাকেল দেবার মত সামর্থ্য রাখে বটে।

একটা জিনিস সবাইকে মনে রাখতে হবে, কোনো সরকারই কিন্তু কখনোই বলে নাই যে, দেশ থেকে এসব অপরাধ চক্রকে শিকড় সহ উৎপাটন করবে। বরং জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি ও বিভিন্ন দাতা দেশের সুপারিশে এসব দিনদিন বছর বছর কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েই আমাদের সরকারগুলো ক্ষমতায় আসে। সেই হিসাবে এখানে বরং সরকার বাহাদুরের তো কোনো দোষই নাই। কারণ আমাদের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘এটা ভয়ংকর ঘটনা। এমন প্রথম শুনলাম। অনাপত্তি সনদও জাল, আবার জিও জাল। এ ঘটনায় যাদেরই জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে।’ আহা সাধু সাধু।

বরং আসুন আমরা সবাই মিলে আওয়াজ তুলি, বাংলাদেশের পাসপোর্ট অফিস, বিমানবন্দর, পুলিশ এদের মত ভালো প্রতিষ্ঠান বিশ্বে আর দ্বিতীয়টি নেই। আগামীতে এসব প্রতিষ্ঠান নিজেদের সুনাম অক্ষুন্ন রেখে আরো ভালো কাজ করে যাবে। হয়তো সেদিন আর বেশি দূরে নয় যেদিন, বাংলাদেশের এসব প্রতিষ্ঠান নোবেল শান্তি পুরাস্কারেও ভূষিত হবে। তখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত থাকলে আমরা মাননীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকেই সেই পুরস্কার আনার জন্য যাইতে দেখব। ততক্ষণ সবাই নাকে সরিষার তেল দিয়ে ঘুমান।

প্রথম আলোর এ সংক্রান্ত রিপোর্টের নিচে অনেকেই অনেক মন্তব্য করছেন। আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে জনাব আবু হানিফের মন্তব্য। তিনি লিখেছেন, 'কেউ চুরি করে ভোট-কেউ পাসপোর্ট!!' এই লাইনটা দিয়ে কেউ এখন ইচ্ছে করলে গান বানাতে পারেন।

............................
২১ মে ২০১৫
ঢাকা


সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৩:২১
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রোএক্টিভিটি এবং কম্পাউন্ড ইফেক্ট: আমার গুরুত্বপূর্ণ দুইটি শিক্ষা

লিখেছেন মাহদী হাসান শিহাব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১১



আমার গুরুত্বপূর্ন দুইটা লার্নিং শেয়ার করি। এই দুইটা টুল মাথায় রাখলে দৈনন্দিন কাজ করা অনেক সহজ হয়। টুল দুইটা কাজ করতে ও কাজ শেষ করতে ম্যাজিক হিসাবে কাজ করে।

এক.

স্টিফেন কোভের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রসঙ্গ রূপান্তরঃ ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা এবং যৌনতা বিষয়ক কিছু আবশ্যিক আলাপ

লিখেছেন সায়েমার ব্লগ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৩

প্রসঙ্গ রূপান্তরঃ
ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা এবং যৌনতা বিষয়ক কিছু আবশ্যিক আলাপ

১।
যৌন প্রাকৃতিক, জেন্ডার নয়।জেন্ডার মানুষের সৃষ্টি (social, cultural construction)। যৌনকে বিভিন্ন সমাজ বিভিন্ন সময়ে যেভাবে ডিল করে, তাঁকে ঘিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্মৃতির ঝলক: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনুভূতি এবং মনের শান্তির খোঁজে

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০১



সরল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সংমিশ্রণে একটি ঘূর্ণায়মান পথ জুড়ে ঘুরে বেড়ানোর অবস্থানে আমি খুব শান্তি অনুভব করি। নদীর জল ছুঁয়ে পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের সঙ্গে এক আন্তরিক সংযোগ অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×