somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাট নিয়ে আন্দোলন কতোটা যৌক্তিক !!!

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশে বর্তমানে ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় (প্রকৌশল, কৃষি ও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সহ), ৮৩টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, ৬৪টি মেডিকেল কলেজ ও ১৭টি প্রকৌশল কলেজ রয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার সুযোগ না পায়, মূলত তারাই এসব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও প্রকৌশল কলেজে ভর্তি হয়। 'প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট ১৯৯২' পাস হবার পর ১৯৯২ সালে নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটি দিয়ে বাংলাদেশে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা কত? পাঁচ লাখ? সাত লাখ? দশ লাখ? নাকি আরো বেশি? এই সংখ্যাটি জানার চেষ্টা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ওয়েবসাইট ভিজিট করে সেখানে কিছু পাওয়া গেল না। বরং খুব কষ্ট লাগল এই ভেবে যে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যেটি পরিচালক প্রতিষ্ঠান, তাদের ওয়েবসাইটের এই দুর্দশা দেখে। আমার ধারণা পৃথিবীর সবচেয়ে গরীব ওয়েবসাইট হলো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ওয়েবসাইট। যে কারণে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মোট সংখ্যাটি চট করেই বলতে পারছি না। যাহোক এবার আলোচনার বিষয়ে আসি।

গতকাল থেকে বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে উত্তাপ। দেশে বর্তমানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল। কিন্তু হঠাৎ করে কী এমন ঘটল যে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উত্তপ্ত হয়ে উঠল? দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অষ্টম বেতন কাঠামোর বেতন ও গ্রেড নিয়ে সন্তুষ্ট না হয়ে গতকাল কর্মবিরতি পালন করেছেন। আর ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্রছাত্রীরা টিউশন ফি'র উপর বর্ধিত ৭.৫% ভ্যাট (ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স বা মূল্য সংযোজন কর) প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন করছেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন কাঠামো নিয়ে হয়তো সরকারের সঙ্গে একটা বোঝাপড়া হয়ে যাবে। তখন তাদের আন্দোলনের অটোমেটিক সমাপ্তি ঘটবে। কিন্তু গতকাল ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্রছাত্রীদের অহিংস আন্দোলনে পুলিশের হামলা-নির্যাতনে বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রী আহত হবার পর, আজ সারা দেশে অন্তত ১০০টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও প্রকৌশল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষার উপর ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি'র প্রতি সংহতি প্রকাশ করে আন্দোলন শুরু করেছে। আজ ঢাকার বিভিন্ন রাস্তায় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা রাজপথে অবস্থান নিয়ে গোটা রাজধানী ঢাকা প্রায় যান চলাচলের জন্য অচল করে দিয়েছেন। সাধারণ মানুষের চলাচল এখন চরম দুর্ভোগে রূপ নিয়েছে।

ন্যাশনাল বোর্ড অব রেভিনিউ বা এনবিআর বলছে, ৭.৫% ভ্যাট বসানো হয়েছে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর, যেখানে টিউশনি ফি'র উপর কোনো ভ্যাট ধরা হয়নি। এনবিআর-এর এই ব্যাখ্যাটি ছলছাতুরিপূর্ণ। কারণ, অর্থনীতির একজন ছাত্র হিসেবে আমি ভ্যাট সম্পর্কে যা বুঝি, তা হলো চূড়ান্ত ভোক্তাই আসলে এই মূল্য সংযোজন করের বোঝা বহন করেন। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর আরোপিত ৭.৫% ভ্যাট শেষ পর্যন্ত মালিকপক্ষ যে ছাত্রছাত্রীদের উপর নানান কিসিমের বায়না ধরে আরো উচ্চ হারে আদায় করবেন, আর যে কারণে টিউশন ফি বেড়ে যাবে, আর যার মাসুল দিতে হবে ছাত্রছাত্রীদের। এটা বোঝার জন্য কারো পণ্ডিত বা গবেষক হবার দরকার হয় না। অর্থ্যাৎ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর আরোপিত ৭.৫% ভ্যাট কার্যত ছাত্রছাত্রীদের মরার উপর খরার ঘা।

পুলিশ অহিংস ছাত্রছাত্রীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা করে সেটিকে রাতারাতি দেশব্যাপী একটি পূর্ণাঙ্গ আন্দোলনে পরিনত করায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। নইলে আজ হয়তো দেশের অন্যান্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতেও একই রকম শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি হতো। সরকার শিক্ষার উপর এই বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত এখন এই আন্দোলনকে শক্তি প্রয়োগ করে দমানো কঠিন হবে। শুধু কঠিন নয় মারাত্মক ভুল হবে। কারণ স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশে ছাত্রছাত্রীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান যখন পুলিশের হামলায় আন্দোলনে রূপ নিয়েছে, এখন সেটাকে যতই দমন করার কৌশল নেওয়া হবে, ততোই এর ঝুঁকি বাড়বে। প্রথম ঝুঁকি হলো ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনকে খুব সহজে দমানো সম্ভব নয়। এছাড়া এখান থেকে অন্য নানান কিসিমের আন্দোলনের সুযোগ বের করবে সরকার বিরোধী পক্ষ। বিষয়টি বুঝতে সরকার বাহাদুর যত দেরি করবেন তত জল ঘোলা হবে। দুর্ভোগ বাড়বে সাধারণ জনগণের। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্থ হবে দেশের লাখ লাখ ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার পরিবেশ।

স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের শিক্ষাজীবন থেকে মূল্যবান ছয়টি বছর ঝড়ে গেছে। তখন আমাদের সঙ্গে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের সরাসরি সংঘর্ষ ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। স্বৈরাচার সরকারের পতনের মাধ্যমে আমাদের সেই আন্দোলন সফল হলেও সেখান থেকে বাংলাদেশে যে গণতন্ত্রের উত্তরণ ঘটেছে, সেই গণতন্ত্রের চেহারা আমরা দীর্ঘ ২৫ বছর দেখলাম। যে লাউ সেই কদু। মানে খুব সোজা। গণতন্ত্র হোক, রাজতন্ত্র হোক আর স্বৈরাচার হোক, শাসক মানেই শাসক। জনগণের জন্য তাদের কোনো দয়ামায়া নেই। বরং জনগণের ট্যাক্সের টাকায় শাসক খুব মৌজস্ফূর্তিতে জীবন কাটায়।

আমাদের মাস্টার্সের রেজাল্ট হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। আর আমাদের সার্টিফিকেটে পাসের সাল উল্লেখ করা হয় ১৯৯২। আমাদের জীবন থেকে যে মূল্যবান বছরগুলো নানান কিসিমের আন্দোলনের মাধ্যমে কেড়ে নেওয়া হলো, তা কিন্তু কেউ ফিরিয়ে দিতে পারেনি। ফলে ২০০০ সালেই সরকারি চাকরিতে আবেদন করার নির্ধারিত ৩০ বছর বয়স ফুরিয়ে গেল। আমরা হয়ে গেলাম এই রাষ্ট্রের বেকার নামক এক বোঝা। যে বোঝা এখনও বয়ে বেড়াচ্ছি। কারণ, ওই সার্টিফিকেট গুলো আমি নিজে পুড়িয়ে সেই ছাই উড়িয়ে দিয়েছি। আমি বুঝতে পেরেছি, এদেশে সার্টিফিকেট দিয়ে আমার অন্তত কিছু হবে না। কারণ আমি বড় কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই। বড় কোনো রাজনৈতিক দলের কোনো নেতার পেছনে হাঁটারও আমার স্বভাব নেই। আমার কোনো মামা-খালুও নাই, যাকে আমি অনুরোধ করব যে একটা চাকরি দেন। সুতরাং সার্টিফিকেট ছাড়াই আমি এই ১৫ বছর বেঁচে আছি কেবল ক্রিয়েটিভ কাজকর্ম করে। কিন্তু শুধু লেখালেখি করে জীবন চালানো যে কত কঠিন, তা আমার চেয়ে ভালো অভিজ্ঞতা হয়তো অনেকের নেই। নিজেকে অনেক সমৃদ্ধ করেছি কেবল পড়াশুনা করে। আমার যেহেতু সার্টিফিকেট নাই, তাই কোথাও চাকরির আবেদনও করতে পারি না। কিন্তু রাষ্ট্রের কোনো অনিয়ম দেখলে চুপ করে থাকার অভ্যাসও আমার মধ্যে নাই।

পাবিলক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বেতন কাঠামো নিয়ে অখুশি। যা নিয়ে আমি আগে বলেছি, শিক্ষকরা কনসালটেন্সি করেন, ক্লাসে সময় দেন না। তাই তাদের বেতন বাড়ানোর দাবিতে আমার কোনো সায় নাই। কারণ এরা ছাত্রছাত্রীদের যে সময় দেবার কথা সেটি না দিয়ে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকে ভাড়ায় ক্লাস নিতে যান। যেটা তাদের বাড়তি আয়ের একটা খাত হলেও এটা অনৈতিক। কারণ আমাদের ট্যাক্সের টাকায় তাদের বেতন দেওয়া হয়। তাদের নিজস্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের বেশি সময় দেবার কথা। তাদের বেতন বাড়লেও কনসালটেন্সি বা অন্যত্র ভাড়া খাটার অভ্যাস হুট করেই যে সবাই ছেড়ে দেবেন, এমন কোনো গ্যারান্টি নাই।

কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়াশুনা করে তাদের শিক্ষার মান নিয়ে যত কথাই থাকুক, আগে উচ্চবিত্তের ছেলেমেয়েরা কেবল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ত। এখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পেড়ে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্তের ছেলেমেয়েরাও বাড়ি, চাষের জমি বিক্রি করে, মায়ের গহনা বিক্রি করে, এনজিও থেকে সুদের টাকার ধার নিয়ে, তারপর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করাচ্ছেন। এখন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মোটেও কেবল উচ্চবিত্তের ছেলেমেয়ে বলার সুযোগ নাই। এখন সব শ্রেণীর উচ্চ-মধ্য-নিম্নবিত্তের ছেলেমেয়েরাও সেখানে পড়ছে। সেখানে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকপক্ষ কিন্তু উচ্চবিত্ত। সরকারের আরোপিত ভ্যাট বা ট্যাক্স তাদের দেওয়ার কথা থাকলেও আসলে চালাক চতুর সেই মালিকরা সেটি ছাত্রছাত্রীদের ঘাড়ে নানান কিসিমের দোহাই দিয়ে চাপিয়েছে। ফলে ছাত্রছাত্রীদের ভ্যাট প্রত্যাহারের আন্দোলনের যথেষ্ঠ যুক্তি আছে।

সরকার বাহাদুরেরা মালিকদের প্রতি সব সময় বড় প্রাণের টান অনুভব করেন। আর সাধারণ জনতাকে ভোদাই মনে করেন। আর ভোটের সময় আসলে সেই ভোদাই আমজনতার কাছেই নানান কিসিমের প্রতিশ্রুতি নিয়ে খাতির পাতানোর চেষ্টা করেন। ভোট শেষ তো জনতা আবার সেই আমজনতাই থেকে যায়। মাঝখান থেকে স্বৈরাচার এরশাদের পর খালেদা-হাসিনারা ক্ষমতায় আসে। মাগার রাষ্ট্রের চেহারা সুরতের কোনো বদল হয় না। সিস্টেম আর পাল্টায় না। এ কোন বিচিত্র দেশ রে ভাই !!!

বাংলাদেশে এখন শর্টকাট টাকা পয়সার মালিক বনে যাওয়াকেই সফল জীবন ধরা হয়। যারা পরীক্ষায় পাস করতো না, তারা এখন সংসদে বসে আমাদের জন্য আইন বানায়। বাংলাদেশের রজনীতি একটা দুষ্টচক্রের হাতে বন্দি। এরা যেখানে যেটি করতে হবে তা না করে আমজনতাকে দুর্ভোগ দেবার ফন্দি বের করেন।

মাননীয় অর্থমন্ত্রী, অর্থনীতির একজন ছাত্র হিসেবে আপনাকে ছোট্ট একটা অনুরোধ করি, শুধু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় নয়, শিক্ষাখাতে আরোপিত সব ধরনের কর প্রত্যাহার করুন। গাড়ির উপর উচ্চহারে ট্যাক্স বসান। এই গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় রাজধানী ঢাকা বারো ঘণ্টা ট্রাফিক জ্যামে অচল থাকে। মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত কেউ গাড়িতে চলে না। আমাদের গাড়িতে চলার প্রয়োজনও নাই। মাগার ভালো পাবলিক ট্রান্সপোর্ট চালু করুন। গাড়ির উপর উচ্চহারে ট্যাক্স বসান। দেখবেন ঢাকার রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কমে যাবে। আমাদের মূল্যবান কয়েক কোটি শ্রমঘণ্টা বাঁচবে। যাতে আমজনতা দুর্ভোগের হাত থেকেও বাঁচবে। আর আপনার বাজেটের ঘাতটির টাকাও গাড়ির উপরে উচ্চহারে ট্যাক্স বসালে সেখান থেকে তা ব্যালেন্স হবে।

রাজধানী ঢাকায় দেখা গেছে, একজন বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে কেবল ড্রাইভার একটা প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নানান কিসিমের ট্রাফিক জ্যাম সৃষ্টি করার জন্য দায়ী। হিসাব খুব সোজা। উচ্চহারে ট্যাক্স বসানোর পর যারা গাড়ি চালানোর সামর্থ রাখবে, তারা চালাক। কিন্তু বেশি মানুষকে গাড়িতে চলার সুযোগ দিয়ে ঢাকার রাস্তা আপনি অচল করে দিয়েছেন। যোগাযোগ মন্ত্রীর চেয়ে ঢাকার রাস্তায় যানজটের জন্য আপনি বেশি দায়ী বলে আমি মনে করি।

ঢাকায় যানজটের জন্য প্রাইভেট কার এক নম্বর সমস্যা। উচ্চহারে ট্যাক্স বসান, দেখবেন সবাই পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চলার অভ্যাস করবেন। ফুটপথ আরো বড় করেন। দেখবেন সবাই হাঁটবে। এই জাতি দিন দিন যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকবে তবু মাগার হাঁটবে না। হাঁটার অভ্যাস করার জন্য প্রাইভেট কার কমানো প্রয়োজন। আর উচ্চহারে কর বসালে দেখবেন রাস্তায় অটোমেটিক প্রাইভেট কারের সংখ্যা কমে গেছে। দেশের পাবলিক ট্রান্সপোর্টের বেহাল দশা। সেখানে আবার ফিটনেস নাই। পুলিশের নানান কিসিমের ধান্দাও ঢাকার যানজট সৃষ্টির অন্যতম কারণ। এই আসল কারণগুলো জেনে বুঝে সেভাবে ব্যবস্থা নিন। না বুঝেই শিক্ষাখাতে ট্যাক্স বসালেন, এইটা কি মামু বাড়ির আবদার। কইলাম আর দিয়ে দেবেন।

হিসাব খুব সোজা। ছাত্রদের ক্ষেপিয়ে পৃথিবীর কোনো সরকার স্বস্থিতে থাকতে পারেনি। ১৫৪ জন সাংসদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে ক্ষমতায় বসা এই দুর্বল সরকারও যে স্বস্থিতে থাকবে, তার গ্যারান্টি কিন্তু আপনার কাছে নাই মাননীয় অর্থমন্ত্রী। অতএব জল বেশি ঘোলা হবার আগেই শিক্ষাখাতের ভ্যাট প্রত্যাহার করুন। আগে কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা মাথায় রাখলেই সরকারের চলত। এখন দিন বদলে গেছে। এখন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হতে কতক্ষণ!!

দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে যে ভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে, এটা শাসকদের একটা নীলনকশার অংশ। আমাদের রাজনীতিবিদরা নিজেদের ছেলেমেয়েদের বিদেশে ভালো স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করান। আর দেশের পাবলিকের ছেলেমেয়েদের জন্য নিজেদের কৌশলের ঘুটি বানান। নিজেদের ফাই ফরমাস খাটানোর জন্য অনুগত ভৃত্য বানানোর জন্য এই যে শিক্ষা পদ্ধতি রয়েছে, এখানে নানান কিসিমের যে গলদ আছে, তা নিয়ে কারো মাথাব্যথা নাই। সরকারের নানান কিসিমের ব্যয় সামাল দেবার জন্য গ্যাসের দাম বাড়ানো, বিদ্যুতের দাম বাড়ানো, শিক্ষাখাতে ভ্যাট বাড়ানো, এগুলো কোন সুশাসন হতে পারে না।

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পুলিশ বাহিনী গতকাল একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলা করেছে। আজ কিন্তু রাস্তায় সারা দেশেই ১০০ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী নেমেছে। আগামীতে এটি যে বাড়বে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কথায় বলে না, বুদ্ধিমানরা দেখে শেখে, আর বোকারা ঠেকায় পড়ে শেখে। জনদুর্ভোগ না বাড়িয়ে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুষ্ঠু পড়াশুনার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ছাত্রছাত্রীদের ন্যায্য দাবিকে মেনে নেবার মধ্যে কোনো আহম্মকি নেই। যত দ্রুত তা মেনে নেবেন, ততোই জনদুর্ভোগ কমাতে তা কার্যকর হবে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও এর থেকে দ্রুত ফিরে আবার ক্লাসে মনযোগী হবেন, পড়াশুনায় মনযোগী হবেন। আমরা এটাই প্রত্যাশা করি। ছাত্র আন্দোলন আপনারা নিজেদের সুবিধায় বহুবার ব্যবহার করেছেন। কিন্তু এবারের ছাত্র আন্দোলনে শাসকদের কোনো সুবিধা নেই। রাজনীতির মাঠে কিন্তু এখান থেকে সুবিধা আদায় করার অনেক লোক আছে, অনেক খেলাও এখনো বাকি। কারণ শ্লোগান যখন 'নো ভ্যাট, কর গুলি'। শিক্ষাকে আপনারা পণ্য বানাতে পারেন না। শিক্ষা স্বাস্থ্য মোটেও পণ্য নয়। এটা জনগণের অধিকার। শিক্ষাকে পণ্য হিসেবে ভ্যাটের আওতায় আনার অর্থমন্ত্রীর এই অযৌক্তিক যুক্তিকে মোটেও সমর্থন করা যায় না। অতএব সাধু সাবধান।

..................................
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫
ঢাকা

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৬
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×