মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের আজ ১৪৩তম মহাপ্রয়াণ দিবস। রবীন্দ্রনাথের বয়স যখন ১২ বছর তখন মাত্র ৪৯ বছর বয়সে কবি মারা যান। তিনি ছিলেন তাঁর সময়ের সবচেয়ে বেশি ভাষা জানা একজন আধুনিক বাঙালি। তিনি বারোটি ভাষা জানতেন। ইংরেজি ছাড়াও ল্যাটিন, গ্রিক, ফারসি, হিব্রু, তেলেগু, তামিল ইত্যাদি ভাষায় তিনি কথা বলতে পারতেন। ইংরেজি ছাড়াও তিনি ফারসি ও ইটালিয়ান ভাষায় কবিতা লিখতেন।
মাইকেল বিয়ে করেছিলেন দুটি। প্রথম স্ত্রী রেবেকা ম্যাকটাভিশ ছিলেন ব্রিটিশ মহিলা। রেবেকার গর্ভে কবি'র দুই পুত্র ও দুই কন্যার জন্ম হয়। কিন্তু প্রথম বিয়েটি টেকেনি। দ্বিতীয়বার তিনি বিয়ে করেন এক ফরাসি তরুণি হেনিরিয়েটা সোফিয়াকে। সোফিয়ার গর্ভে কবি'র এক ছেলে নেপোলিয়ান ও এক মেয়ে শর্মিষ্ঠা'র জন্ম হয়। আজকের বিখ্যাত টেনিস খেলোয়াড় লিয়েন্ডার পেজ কবি'র বংশধর। লিয়েন্ডার পেজের মা জেনিফার পেজ হলেন মাইকেল দত্তনের মেয়ে। মাইকেল দত্তন সম্ভবত নেপোলিয়ন বা শর্মিষ্ঠা'র ছেলে।
মাইকেল মধুসূদন দত্তের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো 'মেঘনাদবধ কাব্য', 'তিলোত্তমা সম্ভব', 'দি ক্যাপটিভ লেডি', 'ব্রজাঙ্গনা', 'বীরাঙ্গনা' 'রত্নাবলী', বঙ্গবাণী ইত্যাদি। উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হলো 'শর্মিষ্ঠা', 'কৃষ্ণকুমারী', 'পদ্মাবতী', 'সুলতানা রিজিয়া', 'রসালো স্বর্ণলতিকা' ইত্যাদি। আর দুটি প্রহসন হলো 'বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ' ও 'একেই কি বলে সভ্যতা'। এছাড়া 'হেকটর বধ', 'ভিশনস অব দ্য পাস্ট', 'সনেট ও অন্যান্য কবিতা' গ্রন্থ উল্লেখযোগ্য। তিনি বাংলা সাহিত্যের আধুনিক কবিতার জনক, বাংলা নাটকের জনক, বাংলা প্রহসনের জনক। এছাড়া তিনি বাংলা ভাষায় সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। ইংরেজ রোমান্টিক কবি লর্ড বায়রন কর্তৃক কবি দারুণভাবে প্রভাবিত ছিলেন। তবে তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি রামায়ণের উপাখ্যান অবলম্বনে অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত 'মেঘনাদবধ কাব্য' নামক মহাকাব্য। বাংলা সাহিত্যে এখন পর্যন্ত কনটেন্ট ও স্টাইলে এটি শ্রেষ্ঠ মহাকাব্য।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:০৪