গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর সারাদেশের ব্যাচেলর মেস ভাড়ায় আগের চেয়ে কঠোর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। পুলিশের দাবি জঙ্গি কার্যক্রমে মেসবাড়ি ব্যবহার হচ্ছে। এ অবস্থায় শুধু ব্যাচেলর মেস নয়, সকল ভাড়াটিয়ার তথ্যই পুলিশ সংগ্রহ করছে। এসব তথ্য এখন যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। কেউ মিথ্যা তথ্য দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে মেস ভাড়া দিতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু বাড়ির মালিকরা বাড়তি সতর্কতার কারণে এখন বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিচ্ছেন ব্যাচেলর ভাড়াটিয়াদের। এখন হাজার হাজার ব্যাচেলর তাহলে কোথায় যাবেন? চাকরি বা পড়াশোনার জন্য যেসব ব্যাচেলর শহরে আসেন, তারা তাহলে থাকবেন কোথায়?
সাম্প্রতিক জঙ্গি ইস্যুতে জননিরাপত্তার কারণে পুলিশ যে কারো তথ্যই সংগ্রহ করতে পারে। সংগৃহীত তথ্যের একটি সেন্ট্রাল ডাটাবেস থাকলে বিষয়টি নজরদারি করতে পুলিশের আরো সুবিধা হবে। নগর থেকে ব্যাচেলরদের তাড়িয়ে দিয়ে জঙ্গি সমস্যার আদৌ কোনো সমাধান হবে না। বরং এটি ভবিষ্যতে বুমেরাং হওয়ার আশংকা মোটেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। পুলিশ বরং নগরের প্রতিটি থানায় একটি সেল খুলতে পারে। যেখানে নগরের ব্যাচেলররা নিজ দায়িত্বে পুলিশের চাহিদা অনুযায়ী সকল তথ্য দিয়ে আসবে। বিনিময়ে পুলিশ একটি আইডি কার্ড ইস্যু করতে পারে। কারণ যারা এখন উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থী তাদের কারো জাতীয় পরিচয়পত্র নেই। তাই এরকম ব্যাচেলরদের পুলিশকে নতুন আইডি কার্ড ইস্যুর দায়িত্ব নিতে হবে।
জননিরাপত্তার স্বার্থে কেবল মেসের সদস্যের কেন, সবারই তথ্য পুলিশের কাছে থাকা উচিত। অল্পসংখ্যক জঙ্গির অপরাধের দায় লাখ লাখ ব্যাচেলর মেস সদস্যের ওপর গণহারে চাপানো যাবে না। পাশাপাশি পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়া সবাইকেই আন্তরিক হতে হবে। আবার কাউকে খামাখা পুলিশি হয়রানি করার কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে সেই দিকটিকে পুলিশকেই নিশ্চিত করতে হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে নগরে আগুন লাগলে উপাসানালয় কিন্তু রক্ষা পায় না।
...................................
২৭ জুলাই ২০১৬
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:২১