somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

থিয়েটার আর্ট ইউনিটের নতুন চমক ‘মর্ষকাম’!!!

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুক্রবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হলো থিয়েটার আর্ট ইউনিটের নতুন নাটক ‘মর্ষকাম’। নাটক শুরু হবার আগে প্রয়াত নাট্যকার ও নির্দেশক এসএম সোলায়মানের তিনটি নাটক নিয়ে নাট্যগ্রন্থ ‘নাট্যত্রয়ী’র মোড়ক উন্মোচন করেন এসএম সোলায়মানের শাশুড়িমাতা। তখন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন তিন প্রজন্ম। নির্দেশক রোকেয়া রফিক বেবী, বেবী আপার মা ও কন্যা তরুণ নাট্যকার আনিকা মাহিন একা। একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট নাট্যব্যাক্তিত্ব প্রয়াত এসএম সোলায়মান-এর বিখ্যাত ৩টি রূপান্তরিত নাটক 'ইন্সপেক্টর জেনারেল', 'আহ কমরেড' ও 'কোর্ট মার্শাল' নিয়ে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অনার্য প্রকাশ অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশ করেছে নাটকের বই ‘নাট্যত্রয়ী’। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন শিল্পী শাহীনুর রহমান। বইটি পাওয়া যাবে একুশের বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনার্য প্রকাশের ১৮৩ নম্বর স্টলে। আমি বইটির সাফল্য কামনা করি।

নাট্যত্রয়ীর মোড়ক উন্মোচনের পর মঞ্চস্থ হয় তরুণ নাট্যকার আনিকা মাহিন একা রচিত ও রোকেয়া রফিক বেবী নির্দেশিত থিয়েটার আর্ট ইউনিটের নতুন নাটক ‘মর্ষকাম’। এটি থিয়েটার আর্ট ইউনিটের ১৯তম নাট্যপ্রযোজনা। শুক্রবার ছিল 'মর্ষকাম'-এর তৃতীয় প্রদর্শনী। 'মর্ষকাম' মূলত একটি পলিটিক্যাল স্যাটায়ার। যেখানে একটি ক্ষমতাধর পরাশক্তি চলমান বৈশ্বিক রাজনীতিতে কীভাবে বিশ্বের বিভিন্ন স্বাধীন দেশের ক্ষমতাবানদের নিয়ন্ত্রণ করে, তা তিনটি পৃথক এপিসোডে উপস্থাপিত হয়।

নাটকে মূলত প্রতিটি এপিসোডে পাঁচটি চরিত্র ঘুরে ফিরে নানান ঘটনা পরম্পরা উপস্থাপন করে। যেখানে মূল সুরটি হলো চলমান পরিবর্তিত বিশ্ব রাজনীতিতে একটি পরাশক্তি ল্যাটিন আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়ার তিনটি দেশে ক্ষমতা ও আগ্রাসন, বাণিজ্য এবং যুদ্ধ লাগিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার প্রেক্ষাপট। প্রথম এপিসোডের কাহিনীকে যদি কিউবান বিপ্লবের আগে মার্কিন প্রশাসনের হস্তক্ষেপে জেনারেল ফালজেনসিও বাতিস্তার ক্ষমতা দখলের সঙ্গে তুলনা করি, দ্বিতীয় এপিসোডে হয়তো আফ্রিকার নাইজেরিয়ার তেলের খনি নিয়ে মার্কিন আগ্রাসনের সঙ্গে মিলানো যাবে। আর তৃতীয় এপিসোডে হয়তো মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিনদের পুতুল সরকার সৌদি রাজপরিবারের ক্ষমতা ও আগ্রাসন কেন্দ্রীক ঘটনার সাদৃশ্য দেখতে পাই।

নাটকে প্রতিটি এপিসোডে মূলত পাঁচটি চরিত্র ঘুরে ফিরে আসে। এরা হলো পরাশক্তির প্রতিনিধি মিস্টার এক্স এবং তাদের নিয়ন্ত্রিত সেই তিন রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, অর্থমন্ত্রী, সচিব ও জেনারেল। এরা এই পলিটিক্যাল স্যাটায়ারে সবাই ক্লাউন। নাটকে বৈশ্বিক রাজনীতিতে দুর্বল রাষ্ট্রের অবদমিত ভাবমুর্তি প্রতিটি এপিসোডে সুস্পষ্টভাবেই ফুটে ওঠে। যেখানে ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকে দূর থেকে নিয়ন্ত্রিত পরাশক্তির ছোবল, থাকে বুর্জোয়া পুতুল সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, থাকে সেই পাপেট সরকারের ক্ষমতা ও শোষণের বিরুদ্ধে আন্দোলন, প্রতিরোধ, বিপ্লব ও প্রতিবিপ্লব। থাকে বিপ্লবের জয়গাঁথা, বারবার ক্ষমতার পালাবদলের কঠিন বাস্তবতা। সময় গড়িয়ে যায় কিন্তু দৃশ্যপট বদলায় না। যেন একই কাহিনী কেবল ভৌগলিক অবস্থান ও সংস্কৃতি ভেদে ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশনা।

হয়তো এই নাটকের কাহিনীর শুরু আড়াই শো বছর আগে বা ফ্রান্সে শিল্প বিপ্লবের সময়কার, অথবা হতে পারে এই কাহিনীর প্রেক্ষাপট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে একটি পরাশক্তির পররাষ্ট্রনীতির আড়ালে বলি হওয়া ল্যাটিন আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়ায় ক্ষমতার পালাবদল ও আগ্রাসন এবং শোষন ও প্রতিরোধের প্রতিচিত্র বা পটভূমি। অথবা হতে পারে বঙ্গীয় দেশের চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতার একটি কল্পিত এপিটাফ।

কিন্তু চূড়ান্ত বিশ্লেষণে 'মর্ষকাম' নাটকের ক্যানভাস চলমান বৈশ্বিক রাজনীতির এক উজ্জ্বল পটভূমিকেই কয়েকটি ক্লাউন চরিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। যেখানে অ্যালেগোরিক্যাল স্পেসের সাহায্যে কেবল দুর্বল স্বাধীন রাষ্ট্রগুলোর অবদমিত প্রতিমুর্তির প্রতিচ্ছবিই প্রতিফলিত হয়। নাটকের সবচেয়ে শক্তিশালী জায়গাটি হলো এই নাটকের থিম। চলমান বৈশ্বিক রাজনীতির যে ডিসকোর্স এখানে উপস্থাপিত হয়, তা দর্শকের মানসপটে মুহূর্মুহু ঘাই মারে। সেই ঘাই দর্শক যতটা বুঝতে পারেন, নাটকের মূল বক্তব্য ততটা যেন স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

'মর্ষকাম' নাটকের সবচেয়ে আলোচিত জায়গাটি হলো এই নাটকের সেট। শিল্পী শাহীনুর রহমান এই নাটকে যে সেট ডিজাইন করেছেন, সেখানে সেট নিজেই এই নাটকের একটি শক্তিশালী চরিত্রের রোলপ্লে করে। তিনটি এপিসোডে ভিন্ন ভিন্ন সেট ডিজাইনে শাহীনুর রহমান যে ডাইমেনশন এনেছেন, তা সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকার মঞ্চ থিয়েটারে প্রচলিত সেটের বিপরীতে সম্পূর্ণ নতুন ও অপ্রচলিত আঙ্গিক। নাটকে তিনটি এপিসোডে সেটের যে ভ্যারিয়েশান, ক্ষিপ্রতা ও গতি, সেই তুলনায় বরং নাটকের তিনটি এপিসোডে একই ধরনের ক্লাউনদের একই চরিত্রে পুনঃপুণ উপস্থাপনে কিছুটা জড়গতি রয়েছে। স্থান, কাল পাত্র ভেদ থাকলেও ঘটনার আরো ডাইমেনশান আনা যেত। বরং তিনটি এপিসোডেই নির্দেশক রোকেয়া রফিক বেবী বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও ক্ষমতার পালাবদলকে কৌশলে প্রয়োগের ঝুঁকি নিলে, নাটকটি আরো দর্শকদের মধ্যে ইন্টার-এক্টিভ করতো বলেই আমার মনে হয়েছে।

'মর্ষকাম' নাটকে ডিজিটাল প্রজেকশান ব্যবহারের মাধ্যমে নাটকটির গতি ও মাত্রাকে প্রচলিত থিয়েটার থেকে একধাপ এগিয়ে বরং এটিকে আন্তর্জাতিক মান দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এর আগে ঢাকার থিয়েটারে যেটি নাট্যকার ও নির্দেশক কামালউদ্দিন নীলু ব্যবহার করেছেন। নির্দেশক কামালউদ্দিন নীলু'র নাটক 'দি কমিউনিকেটর' ছিল একটি ডিকনস্ট্রাকটিভ পারফরম্যান্স বা অবিনির্মিত উপস্থাপনা। যেখানে সমকালীন পাশ্চাত্যতত্ত্বনির্ভর, প্রসেনিয়াম ধারায় উপস্থাপন এবং উত্তর-আধুনিক নাট্য প্রযোজনার বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল ছিল। যেখানে ট্রাভেলারের আত্ম-উপলব্ধিজাত অনুভূতি সাধারণ দর্শক তার নিজের মতো করেই গ্রহণ-বর্জন বা সংশ্লেষণ করতে পারতেন।

দর্শকের উপলব্ধি বা ভূমিকা বিবেচনাও সেখানে প্রাধান্য পেয়েছিল। কোনো একক কাহিনির গন্ডিতে মোটেও আটকে ছিল না 'দি কমিউনিকেটর'। বরং বিচ্ছিন্ন নানান কিসিমের বিষয় ও উপলব্ধির প্রেক্ষিতে দর্শকের সঙ্গে যোগাযোগই ছিল কমিউনিকেটরের প্রধান উদ্দেশ্য। সেখানে উপস্থাপনায় স্থান, কাল, বিষয়, অনুভূতি, মানসিকতা অনুসারে সৃষ্ট হয়েছিল বিশ্ববাস্তবতার অভিজ্ঞতায় প্রতিদিনের উপস্থাপনা। পাশাপাশি সেখানে কমিউনিকেটর ভিজুয়াল অ্যাফেক্ট, আলো, সংগীত ইত্যাদি নানা মনোযোগকরণ কৌশলে দর্শককে সমকালীন বাস্তবতার উপলব্ধিতে সহযোগ সৃষ্টি করেছিল। দর্শককে মোহাচ্ছন্ন না রেখে কমিউনিকেটর ছোট ছোট স্কেচের ভেতর দিয়ে সমকালীন বিশ্ব ও বিষয় বাস্তবতায় সত্য উপলব্ধিকে নির্দেশ করেছিল। কমিউনিকেটরের আত্মদ্বন্দ্বজাত চিন্তনীয় পারিপার্শিকতা সেখানে সত্য প্রকাশে অনবদ্য হয়ে উপস্থাপিত হয়েছিল।

তরুণ নাট্যকার আনিকা মাহিন একা'র 'মর্ষকাম' নাটকে যে ক্যানভাস, সেখানেও একটি অ্যালেগোরিক্যাল স্পেসকে চলমান বৈশ্বিক রাজনীতির আলোকে উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু তিন এপিসোডে ভিন্ন কথনের উপস্থিতি হলেও দর্শক কিছুটা যেন একঘেয়েমিতে আক্রান্ত হন। আর সেই একঘেয়েমিকে কাটাতে বরং নাটকের সেট অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু আলোক পরিকল্পনায় কিছুটা দুর্বলতা ও সেটের সঙ্গে পারফর্মারদের টাইমিংয়ে কিছুটা ধীরগতি ও ত্রুটির কারণে হয়তো নাটকে সেই কাংঙ্খিত ক্ষিপ্রতা কিছুটা ম্রিয়মান হয়েছে।

নাটকে সংগীত, সুর, তাল, লয় বিশেষ বিশেষ নাট্যমুহূর্ত তৈরিতে মিউজিক ও আলোর যে সত্যিকার মিথস্ক্রিয়া হবার কথা ছিল, সেটি হয়তো শুক্রবারে শো'তে আলোক পরিকল্পনায় সামান্য দুর্বলতা ও টাইমিংয়ের অভাবে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে। বিশেষ করে গানের লিরিক উদ্ধার করার বিষয়টি দর্শকদের জন্য একটি কঠিন পরীক্ষা মনে হয়েছে। তবে কাহিনীর সঙ্গে মিল রেখে স্থান ও কালকে সঠিকভাবে তুলে ধরার জন্য মিউজিকে যে সুর ও গতি ছিল, সেটি বেশ চমৎকার। হয়তো পরবর্তী মঞ্চায়নে এসব দুর্বলতা কাটিয়ে উঠলে 'মর্ষকাম' নাটকটি দর্শকদের জন্য নতুন খোরাক যোগাবে।

নাটকে পলিটিক্যাল স্যাটায়ার করতে গিয়ে নির্দেশক রোকেয়া রফিক বেবী হয়তো ঘটনার সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মিলগুলোকে ইচ্ছা করেই এড়িয়ে গেছেন। বরং বাংলাদেশের ঘটনাকে এই নাটকে অ্যাডাপ্ট করলে এটি দর্শককে বর্তমান বৈশ্বিক রাজনীতির কার্পেট কূটনীতি বুঝতে আরো বেশি সুযোগ করে দিত। নাটকে অনিকেত পাল বাবু যে কোরিওগ্রাফি করেছেন, এটি পারফর্মাদের জন্য একটু কঠিন মনে হয়েছে, হয়তো পরবর্তী মঞ্চায়নে এটি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। তবে নাটকের পটভূমি ও ডিসকোর্সের সঙ্গে কোরিওগ্রাফি'র ডাইমেশান বেশ চমৎকার।

'মর্ষকাম' নাটকের কস্টিউম বেশ চমৎকার ও আকর্ষনীয়। নির্দেশক রোকেয়া রফিক বেবী নিজেই এই কস্টিউম ডিজাইন করেছেন। আমার কাছে দ্বিতীয় এপিসোডের কস্টিউম সবচেয়ে কার্যকরী মনে হয়েছে। প্রথম ও তৃতীয় এপিসোডের কস্টিউমও সুন্দর কিন্তু দ্বিতীয় এপিসোডে যতটা চমক, সেই তুলনায় প্রথম ও তৃতীয় এপিসোডে কিছুটা কম নম্বর পাবেন বেবী আপা। সংগীতে সেলিম মাহবুব ল্যাটিন আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়ার যে মিশেল ঘঠিয়েছেন, এটি বেশ চমৎকার। তবে লিরিক বোঝার জন্য কোরাসের উপর আরো কাজ করতে হবে।

এই নাটকে দর্শক সবচেয়ে বেশি মজা পেয়েছে বিদ্রুপাত্মক পরিভাষায় তৈরি নাটকের ডায়লগে। যেমন সৌরশক্তির পরিবর্তে যৌনশক্তি'র প্রয়োগ। দর্শক তখন মঞ্চের সত্যিকার ক্লাউনদের সঙ্গে যেন একাত্ব হয়ে যান। সাম্প্রতিক সময়ে বোলপুরের শান্তি নিকেতনের লিপিকা হলে আমি কলকাতার কালিন্দী নাট্যদলের উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের 'মার্চেন্ট অব ভেনিস' নাটকটি দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। সেই নাটকে সেট ও আলোর মধ্যে অসাধারণ মিথস্ক্রিয়ায় দেখেছি। পাশাপাশি পারফর্মারদের চৌকশ পরিবেশনা নাটকটিকে যেমন গতি দিয়েছিল, 'মর্ষকাম' নাটকের সেট-এ সেই গতিটা আবারো চোখে পড়লো। তবে 'মার্চেন্ট অব ভেনিস'-এ যে দ্রুততায় এবং আলোর মিথস্ক্রিয়ার মধ্যে দ্রুততম সময়ে ও নান্দনিক ক্ষিপ্রতায় সেট বদল হয়েছে, 'মর্ষকাম' নাটকে সেই গতিটা আমি মিস করেছি। বরং টাইমিং ও গতিতে কিছুটা দুর্বলতা ছিল।

'মর্ষকাম' নাটকের প্রথম এপিসোডের পারফর্মিং কিছুটা দুর্বল মনে হয়েছে, সেই তুলনায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় এপিসোড অনেক বেশি শক্তিশালী। বিশেষ করে প্রথম এপিসোডে জেনারেল চরিত্রটি খুব দুর্বল ছিল, সেখানে সেলিম মাহবুব বা মোহাম্মদ বারী অভিনয় করলে আরো শক্তিশালী উপস্থাপনা হতো বলে আমার মনে হয়েছে। তৃতীয় এপিসোডে একজন আগন্তুক থাকেন বাড়তি চরিত্র, এটি বরং আমার কাছে অন্য দুই এপিসোডের চেয়ে ভালো লেগেছে। এমন বাড়তি ক্যারেক্টার প্রথম দুই এপিসোডে থাকলে বরং নাটকটি আরো বেশি ডাইমেনশান পেত।

গত বছরের ১ নভেম্বর 'মর্ষকাম নাটকটির প্রথম মঞ্চায়ন হয়। শুক্রবারেরটি ছিল নাটকটির তৃতীয় মঞ্চায়ন। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন মেহমুদ সিদ্দিকী, নুরুজ্জামান বাবু, মাহফুজ সুমন, এসআর সম্পদ, সজল চৌধুরী, সেলিম মাহবুব, স্বাধীন শাহ, রিয়াজ হোসেন, সরকার জামান, মোহাম্মদ বারী, চন্দন রেজা, ফেরদৌস আমিন বিপ্লব, লেমন, পিয়ার মোহাম্মদ, রাকিব, জায়েদ হোসেন, মাজিদুল মিঠু, সোনিয়া নাসরিন, সূচি চৌধুরী, সুমন আকন্দ, আকাশ মোদক, আবির সায়েম, ফারহানা আক্তার প্রমুখ। নাটকটির সেট করেছেন শিল্পী শাহীনুর রহমান। মিউজিক করেছেন সেলিম মাহবুব। কস্টিউম করেছেন রোকেয়া রফিক বেবি। কোরিওগ্রাফি করেছেন অনিকেত পাল বাবু। আলোক পরিকল্পনা করেছেন আব্দুল আলীম। শব্দ প্রক্ষেপন করেছেন জাকির হোসেন রাসেল ও আবির সায়েম। প্রজেক্ট নিয়ন্ত্রণ করেছেন আবির সায়েম।

'মর্ষকাম' নাটকটি লিখেছেন তরুণ নাট্যকার আনিহা মাহিন একা। প্রয়াত এসএম সোলায়মান ও রোকেয়া রফিক বেবীর সুযোগ্য কন্যা একা যে বিশাল ক্যানভাসের নাটক লিখেছেন, এটি আমাদের প্রত্যাশাকে আরো বাড়িয়ে দিল। ভবিষ্যতে একা'র হাতে আরো ভালো নাটক রচিত হবে বলেই আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। নির্দেশক রোকেয়া রফিক বেবী 'মর্ষকাম' নাটকে যে পলিটিক্যাল স্যাটায়ার দর্শকদের উপহার দেন, তা চলমান বৈশ্বিক রাজনীতির এক চেনা পরিবেশ হলেও দর্শকদের অন্তর্জগতে এক অনুরণন সৃষ্টি করাতে ও নতুন করে ভাবাতে প্রলুব্ধ করে।

ধন্যবাদ থিয়েটার আর্ট ইউনিটের সকল কর্মী ও শুভাকাঙ্খীকে। হাউজফুল দর্শকদের উপস্থিতিতে একুশের বইমেলা ফেলে 'মর্ষকাম' দেখা মোটেও বিফলে যায়নি। যারা এসএম সোলায়মানের নাটক পছন্দ করেন, তাদের আনিহা মাহিন একা রচিত ও রোকেয়া রফিক বেবী নির্দেশিত 'মর্ষকাম' নাটকটিও ভালো লাগবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। বিশেষ করে থিয়েটার আর্ট ইউনিট যে সবসময় নতুন নাটকে নতুন চমক দেয়, সেই বিষয়টি আবারো শুক্রবার প্রমাণ করলো। জয়তু থিয়েটার আর্ট ইউনিট। জয়তু মঞ্চ নাটক।

....................................
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:৫৫
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×