somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোটা পদ্ধতি সংস্কার এখন সময়ের দাবি!

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশ স্বাধীন হয়েছে ৪৭ বছর হয়ে গেল। অথচ দেশে যে কোনো আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে জনমত যাচাই বাছাই করার রেওয়াজ এখনো চালু হয়নি। কোটা পদ্ধতি নিয়ে যখন এতোই সুরসুরি, তো কোটা পদ্ধতি থাকবে নাকি থাকবে না, থাকলে কতটুকু থাকবে, এর উপর জনমত যাচাই করা হোক। জনমত যাচাই করে সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত জানাক।

খামাখা মুক্তিযুদ্ধের খোটা দিয়ে কোটাকে হজম করার সুযোগ নাই। মুক্তিযোদ্ধারা এই কোটার ভাগ খাওয়ার জন্য কেউ যুদ্ধ করে নাই। দেশের জন্য অকুতোভয় দুঃসাহস নিয়েই তাঁরা বীরের মতো যুদ্ধ করেছেন। সেই হিসাবে এই কোটা পদ্ধতি বরং মুক্তিযোদ্ধাদের সেই দুঃসাহস ও দেশপ্রেমের উপর এক ধরনের মেরুদণ্ডহীনতার প্রলেপ। বরং দুঃস্থ ও আহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যথাযথভাবে সরকারি সহায়তা খুবই প্রয়োজন।

এখনো মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় প্রচুর ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। ইতিপূর্বে পাঁচবার মুক্তিযোদ্ধার তালিকা করার পরও সে তালিকা সঠিক হয়নি। প্রতিবারই তালিকা করার সময় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেড়েছে এবং পুরনো তালিকা থেকে বাদ পড়েছে অনেক নাম। সরকার বদল হয় আর মুক্তিযোদ্ধার তালিকাও সরকারের ইচ্ছামতো বদল হয়। পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এসব তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সর্বনিম্ন সংখ্যা ছিল ৭০ হাজার ৮৯৬ এবং সর্বোচ্চ সংখ্যা ২ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি। বর্তমানে ১ লাখ ৩৪ হাজার নতুন আবেদন নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ষষ্ঠ তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে।

কিন্তু প্রশ্ন হলো, একাত্তরে যুদ্ধের সময় কেবল রাজাকার-আলবদর-আলশামস ও পাকিপন্থীরা ছাড়া দেশের বাকিদের কে মুক্তিযোদ্ধা নয়? যে তালিকা করা উচিত ছিল, সেই রাজাকার-আলবদর-আলশামসদের তালিকা না করে, আপনারা করলেন মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা। এটা সম্পূর্ণ একটা ভুল পদ্ধতি ছিল। সেই ভুল থেকেও আমরা এখনো কোনো শিক্ষা নেই নাই। তখন থেকেই যাঁদের মেরুদণ্ড আছে অথচ দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, তাঁরা এই তালিকায় ইচ্ছে করেই নাম লেখাননি। কিন্তু সুযোগ সন্ধানী তেলবাজ-চামচারা তখন থেকেই এই তালিকায় ঢোকার জন্য গোষ্ঠীবন্ধ।

একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে কেন কোটা পদ্ধতিতে মেরুদণ্ডহীনের মতো সরকারি চাকরি নিতে হবে? যাদের মা-বাবারা বীরের মতো যুদ্ধ করেছেন, তাঁদের সন্তানরা কিনা মেরুদণ্ডহীন এক খোটার চাকরি গ্রহণ করবে? আর সেই মেরুদণ্ডহীনতাকে লালন-পালন করার নাম মুক্তিযুদ্ধের খোটা? কোটা না বলে এটাকে সরাসরি খোটা বলুন। যাদের মেরুদণ্ড আছে তারা কেউ এই খোটা বা দয়াদাক্ষিণ্যের চাকরি করে না।

বরং এই কোটা পদ্ধতির নামে যে দুর্নীতি ও অনিয়ম লালন-পালন করা হচ্ছে, তার সংস্কার এখন সময়ের দাবি। যে কোনো বিষয়ে সরকারের সমালোচনাকে এখন বিরোধীপক্ষ হিসাবে ট্রিট করার একটা রেওয়াজ চালু হয়েছে। অথচ সরকারের ভালো কাজের প্রশংসা করলেও তা কারো তেমন নজরে আসছে না। কারণ এই তোষামোদী জাতির এটা একটা কুঅভ্যাসে পরিণত হয়েছে।

সীমিত পর্যায়ে নামমাত্র একটা কোটা পদ্ধতি থাকতে পারে। কিন্তু তাই বলে সেটা কোনোভাবেই ৫৬ শতাংশ মানার মতো নয়। একুশ শতকে যে দেশের ৫৬ শতাংশ কোটায় সুবিধা পায়, সেই দেশে চামচা তৈরি হবে না তো কর্মঠ মেধাবী তৈরি হবে? আগে ঠিক করেন আপনারা কী চান? চামচা ও অকর্মন্য কর্মীবাহিনী নাকি মেরুদণ্ড আছে এবং যোগ্য ও সবল কর্মঠ কর্মীবাহিনী। তারপর খোটা মারেন। সবকিছুতে মুক্তিযুদ্ধের সংমিশ্রণ লাগিয়ে গা বাঁচানোর চামচা বৃত্তি বন্ধ হওয়াটা খুব জরুরি।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১:৫৪
১৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×