১. গ্রীষ্মের দুপুরে ভাই-বন্ধু কিংবা সমবয়সীরা যখন পুকুরের পানি ঘোলাটে করতাম, তখন জ্যেঠা কিংবা চাচা অথবা বড় কেউ এসে বেত নিয়ে শাসন করতো। সবাই উঠে পালাতাম। কিন্তু ঘরে গিয়ে যখন বাবা-মাকে বলতাম তখন তারা বলতো ভালো হয়েছে। অন্যায় করেছিস বলেই তো শাসন করেছে।
আর বর্তমানে, বাবা-মায়েরা বলে; সে আমার ছেলেকে শাসন করার কে?
২. রমজান কিংবা ঈদুল আযহা অথবা লম্বা কোন ছুটির জন্য মাদ্রাসা/স্কুল বন্ধ হলে; যেদিন বন্ধের নোটিশ দেয়া হতো সেদিন বাড়ি ফেরার আগে সকল শিক্ষকদেরকে কদমবুচি করতাম( পায়ে ধরে সালাম,তবে কদমবুচি বলতে পায়ে চুম্বনকে বলে) আবার বন্ধের পর যেদিন প্রতিষ্ঠান খোলে সেদিনও এসে ক্লাসের
বর্তমানে, এরকম কিছু আর চোখে পড়ে না।
৩. গ্রাম্য ছেলেদের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম সাইকেল বা রিক্সা। যখন সাইকেল কিংবা রিক্সাকরে কোথাও যেতাম পথে শিক্ষকদের দেখলে সাইকেল-রিক্সা থেকে নেমে সালাম দিতাম। এরূপ যারা করতো না তাদেরকে বেয়াদব বলা হতো।
এখন শিক্ষকদের গাঁ ঘেসে মোটরসাইকেলের রেইস বাড়িয়ে চলে যায়, তাতে কিছু যায় আসে না!
৪. বাড়ির পাশে দোখানে মোরব্বিরা থাকাবস্থায় বসে চা-নাস্তা করতাম না। কোন চায়ের দোকানে শিক্ষক বা মোরব্বি থাকলে সেখানে প্রবেশ করাটা অভদ্রতা ছিলো। প্রয়োজনে তাদের অনুমতিতে বসতাম।তাও একপাশে গিয়ে,ন¤্রভাবে।
বর্তানে,এখন এগুলোর তোয়াক্কা করা হয়না।
৫. পড়ালেখার ক্ষেত্রে বড় ভাইদের থেকে পরামর্শ নিতাম। কোন গাইডটা নিলে ভালো হবে, কোন লেখকের বই পড়লে সহজ ইত্যাদি ইত্যাদি।
বর্তামানে, আমরা কি কম জানি?
৬. আমাদের কোন ক্লাসমিট কয়েকদিন ক্লাসে অনুপস্থিত হলে, দল বেঁধে তার বাড়িতে দেখতে যেতাম।
বর্তমানে, মোবাইলে খবর হয়তো নিই, না হয় প্রয়োজনও হয় না। ফেবুতে লিখে দেয় ও'স ঋববষরহম ঝরপশ.
৭. গ্রাম-গঞ্জে বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম চায়ের দোকানে টেলিভিশন কিংবা কেরাম খেলা। দোকানে বসে টেলিভিশন দেখা কিংবা কেরাম খেললে সেদিন আর ঘরে ভাত খেতে দেয়া হতো না।
বর্তমানে তো সিনেমা হলে গিয়েই মুভি দেখে ওরা।
৮. রাস্তায় যখন দেখতাম কোন প্রতিবেশী বৃদ্ধ/বৃদ্ধা ভারি বোঝা নিয়ে যাচ্ছে যা বহন করতে তাঁর কষ্ট হচ্ছে। তখন উনার বোঝাটা নিয়ে এগিয়ে দেয়াকে পূন্য মনে করতাম।
বর্তমানে, কী প্রয়োজন? যার বোঝা সেই নিক।
৯. গাড়ির সিট খালি না থাকলে মহিলা কিংবা বৃদ্ধদের জন্য নিজের সীট ছেড়ে দিতাম।
বর্তমানে, চোখে দেখেনি! সীট খালি না থাকলে উঠছে কেন?
আমাদের সময় যেগুলোকে শিষ্টাচার মনে করতাম , এগুলো বর্তমানে চর্চা হয় না। না জানি, শিষ্টাচারের সংজ্ঞা পরিবর্তন হয়েছে নাকি মানুষগুলো!
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১৮ রাত ১০:২৮