somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ লাশকাটা ঘর (তৃতীয় পর্ব)

২৬ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৩:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দরজায় টোকা দিলাম,আম্মু রাগান্বিত স্বরে চেচিয়ে বলে উঠলো, সারাদিন কোথায় থাকিস? বাড়িতে যে আমরা আছি সে খেয়াল কি আছে তোর? আর ভালো কথা ইদানীং তো ভালোই অভ্যস শুরু করেছিস! কয় প্যাকেট সিগারেট লাগে দিনে? পেকে গেছিস? এসব একদম ঠিক হচ্ছেনা কিন্তু একদম না। তোর বাবা ফোন করলে হল,তার কাছে নালিশ দিবো " তোমার ছেলের কয়েক প্যাকেট সিগারেট লাগে দিনে "। মায়েদের এই একটা সমস্যা ছেলে দোষ করলে তখন বাপের ছেলে হয়ে যায় আর ছেলে ভালো কিছু করলে ছেলে মায়ের হয়ে যায়।

আম্মুর সাথে কথা না বলাই ভালো হবে,যতক্ষন কথা বলব ততক্ষন চেঁচাবে। সোজা নিজের রুমে গিয়ে উঠলাম। দরজা লাগিয়ে আয়েশ করে শুয়ে পড়লাম বিছানায়। জানালায় চোখ গেলো,সেখানটায় একটা খয়েরী রঙের কাগজ পড়ে আছে। বুঝতে বাকি রইলোনা এটা এ্যনিলা রেখেছে। এ্যনিলা পাশের বিল্ডিং এ থাকে চার তলায়,দেখতে সুন্দরী।

এ্যনিলার সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক কলেজ থেকেই শুরু। একদিন তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম " আচ্ছা তুমি কি কখনো খয়েরী রঙ ছাড়া বাকি রঙ পছন্দ করেছো? সে জানালো,তার কাছে রঙ মানে হল খয়েরী। অদ্ভুত ব্যাপার। মানুষ রঙ দিয়েও হাজার অনুভূতি জড় করে ফেলে।

মেয়েটা রোজ দুপুরে গোসলে যাওয়ার আগে একটা করে কাগজ আমার জানালার ধারে ছুড়ে দেয়,অবশ্য তার কাগজ পাওয়ার জন্য আমি জানালার গ্লাস খোলা রাখি। আমি জানি ও হয়ত ছুড়ে মারেনা,কোন কিছুতে আটকিয়ে জানালায় রাখে। কখনো কখনো কাগজে কিছু লেখা থাকে কখনো শূন্য থাকে। কখনো প্রিয় লিখে মাঝের সব খালি রেখে শেষে ইতি টেনে এ্যনিলা লিখে। আমি জানি এটাতে এক ধরনের সুখ আছে।

একটা জিনিস মানুষ প্রতিদিন প্রতিবার সাজিয়ে গুছিয়ে করতে পারেনা। তা বলে কি সে কাজটা করবেনা? করবে,কিন্তু ভিন্ন উপায়ে।

কাগজ টা না রেখেই গোসল করতে ডুকে গেলাম। আম্মুর চেঁচামেচি সহ্য হচ্ছেনা,তাই যত দ্রুত সম্ভব গোসল সেরে খাওয়াদাওয়া করতে হবে।

খাবার পর্ব শেষ করে সিগারেট টানতে ছাদে উঠা মাত্রই মনে হল এ্যনিলার দেয়া কাগজের কথা। অনেকদিন ধরে শূন্য কাগজ দিচ্ছে,ভাবলাম আজকে হয়ত কিছু লিখেছে। যদিও আমাদের মাঝে ফোনে কথা হয় তবুও কাগজের ব্যাপারটা অন্যরকম। সিগারেট এ কয়েকটান দিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। কাগজটা খুলে দেখি আবারো শূন্য!! ইদানীং মেয়েটা পাগলামি একটু বেশি শুরু করেছে।

আসরের আজান পড়ে গেলো,

বাঁশিওয়ালা লোকটার খোজ করতে হবে। জামা-প্যান্ট পরে বের হলাম। কোথাও আজকে বসব না। সোজা স্কুলের বারান্দায় গিয়ে উঠবো। কয়েকটা সিগারেট আর ম্যাচবক্স কিনে রওনা হলাম। আম্মুর জ্বালায় দিয়াশলাই আর কেনা যাবেনা।

- চাচা ভালো আছেন?

- এইতো আছি,তুমি না ঐদিন?

- হ্যা আমিই এসেছিলাম। কি অবস্থা আপনার?

- চলছে,বসো এখানে তাড়া না থাকলে!

- নাহ, ভবঘুরে মানুষগুলোর তাড়া আছে কিনা আমার জানা নেই,এরা হুট করে নিজেকে ব্যস্ত বানিয়ে রাখতে পছন্দ করে। আপনার সাথে কথা বলতে এসেছি,আড্ডা দিব।

- হা হা হা,তুমি গুছিয়ে কথা বলতে পারো।

- নাম কি আপনার?

- রফিক,মোহাম্মদ রফিক।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৩:১৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×