somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টাইগার সমর্থক বলছি

১৬ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৯৭ সাল থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাথে আছি , যেদিন খালেদ মাসুদ পাইল্ট মার্টিন সুজীর প্রথম বলে ছক্কা মেরে আই সিসি ট্রফি জেতার স্বপ্ন দেখায় । আর শেষ বলে হাসিবুল হোসেন শান্ত র সিংগেল নেয়া আর বোলিং করার সময় পাইলটের পিচের অর্ধেক দৌড়ে চলে যাওয়া র বাকিটা ছিল ইতিহাস।


সেদিন জন্ম নিয়েছিল এক নতুন নখ দন্তহীন এক ব্যাঘ্র শাবকের । শুরুর পথ টা ছিল অনেক ভংগুর , দুর্গম । চলতে চলতে অসংখ্য হোচট , তারপর ও মাঝে মধ্যে দুই একটা নতুন শিকার পেয়ে অদম্য আনন্দে দুর্বার এগিয়ে চলা । ১৯৯৯ সাল স্বপ্নের বিশ্বকাপ , নিতান্ত শিশু একটা টীম পেয়ে নিউজিল্যান্ড , অস্ট্রেলিয়া আমাদের সাথে ছেলেখেলা করল । আমাদের সব থেকে দ্রুত গতির বোলার শান্ত র বলের স্পীড ছিল ১২০ কিমি যা স্পিনার কুম্বলে আর আফ্রিদী র ডেইলি স্পীড । তারপর ব্যাঘ্র শাবক রা হাটি হাটি পা করে আগাচ্ছিল । এরপর আসল আমাদের সব থেকে গুরুত্বপূর্ন ম্যাচ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে । ২০০ র নীচে চেজ করতে গিয়ে ভালোই আগাচ্ছিল স্কটল্যান্ড। হ্যামিল্টন হাফ সেঞ্চুরী করে ত ম্যাচ বের করে নিয়ে যাচ্ছিল , কিন্তু এক মিরাকুলাস রান আউটে বোলারের হাতে লেগে স্ট্যাম্প ভেঙ্গে গেল । তারপর বাকিটা ইতিহাস। সেদিন ও ছিলাম বাংলাদেশের সাথে ।


এরপর মহাশক্তিশালী পাকিস্তান। অত্যন্ত তুচ্ছ তাচ্ছিল্য ভরা চাহনি দিয়ে খেলা শুরু করে । ১০০ মাইল বেগে বল করা শোয়েব আখতার কে ফ্লিক করে মারা চারটা এখন ও চোখে ভাসে । ব্যাটিং করতে নেমে পাকিস্তান টের পেল বাঘ যখন ধরে যমেও তখন ভয় পায়। এরপর বাকিটা ইতিহাস। সেদিন আমরা আনন্দ করেছিলাম যেন বিশ্বজয় করেছি। অস্ট্রেলিয়া কাপ জেতার পর ও এমন আনন্দ করেছিল নাকি আমার সন্দেহ। কিন্তু আমরা কাউকে গালি দেই নি , অসম্মান করি নি , অপমান করিনি । মাঠের বাইরে দেয়া সমস্ত অপমানের জবাব আমরা মাঠে দিয়েছি।।


২০০৩ সালের কাপে আমরা যখন কানাডা , কেনিয়ার সাথে হেরে লজ্জা আর অপমানে মাথা হেট করে আসি তখনো বাংলাদেশ দলের সাথে ছিলাম। তারপর বহু দিন , বহু রাত কেটেছে একটা জয়ের আশায় । রাতের পর রাত চোখে পানি নিয়ে ঘুমাতে গেছি কালকে জয় হবেই এই আশায় বুক বেধে । প্রায় ২ বছর পর যেদিন হয় পাই সেদিন ও বাংলাদেশের সাথে ইও ছিলাম।


২০০৭ সালে স্টার স্পোর্টসের সব অ্যাডে শচীন , দ্রাবিড় আর গাংগুলী । সর্বকালের সেরা টীম নিয়ে ভারত চ্যাম্পিয়ন হবার হিসাব কসছে । আমরা যাতে বেশী ম্যাচ না পাই সেজন্য ৪ দলের গ্রুপ করে। মন্দীরা বেদী , চারু শর্মা খেলা শুরুর আগে প্রি ম্যাচে যেসব ভেটকী দেয় তার দাত ভাঙ্গা জবাব আমরা মাঠেই দিয়া আসি । খেলা শেষে মিস মন্দীরা কান্তে বাকি রাখছিল । তারপর দক্ষিন আফ্রিকা কে হারানো ছিল ইতিহাস । আমরা কাউকে গালি দেই নি , কটাক্ষ করিনি , অপমান করে হ্যাশ ট্যাগ দেই নি। আমরা রেস্পেক্ট আদায় করে নিয়েছি। অপমান আর গালির বদলা আমরা ব্যাটে বলে দিয়েছি , মুখ দিয়ে নয়।
২০১২ সালের এশীয়া কাপে ভারত যখন ফাইনালে যাওয়ার চিন্তাতে বিভোর আমরা তখন ঘাড় ধরে হিসাবে রাখতে বলেছি ৫ উইকেটে জিতে। তখন ও আমরা বাংলাদেশের সাথে ছিলাম। আমরা কাউকে অপমান বা গালি দেই নি

২০১৫ সাল । আর দুই দিন পর বাংলাদেশ খেলবে ভারতের সাথে । মাঠের বাইরে সামান্য একটা টুইট আর বাচ্চাদের করা ভিডিও নিয়ে আমাদের দর্শকদের হেট স্পীচ, গালি গালাজ আর ভারত বিদ্বষী প্রপাগান্ডা আমাকে দারুন ব্যথিত করে তুলেছে। মাঠের বাইরের সমালোচনা আমরা খেলে দিয়েছি , আর এখন আমাদের নব্য ক্রিকেট বোদ্ধারা গালিবাজ সাপোর্টার হিসেবে প্রমান করতে মরিয়া। কেউ আপনাকে গালি দিলে আপনি যদি তাকে গালি দেন তাহলে তার সাথে পার্থক্য কোথায় । কুকুর কামর দিলে কি আপনি কুকুর কে গিয়া কামড দিবেন ??


হার-জিত খেলার অংশ। একজন ক্রিকেট পাগল হিসেবে সবার প্রতি অনুরোধ অন্যকে সম্মান দিন যদিও সে আপনাকে অসম্মান করে , তাতে আপনার মর্যাদা বাড়বে বৈকি, কমবে না।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রোএক্টিভিটি এবং কম্পাউন্ড ইফেক্ট: আমার গুরুত্বপূর্ণ দুইটি শিক্ষা

লিখেছেন মাহদী হাসান শিহাব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১১



আমার গুরুত্বপূর্ন দুইটা লার্নিং শেয়ার করি। এই দুইটা টুল মাথায় রাখলে দৈনন্দিন কাজ করা অনেক সহজ হয়। টুল দুইটা কাজ করতে ও কাজ শেষ করতে ম্যাজিক হিসাবে কাজ করে।

এক.

স্টিফেন কোভের... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রসঙ্গ রূপান্তরঃ ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা এবং যৌনতা বিষয়ক কিছু আবশ্যিক আলাপ

লিখেছেন সায়েমার ব্লগ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৩

প্রসঙ্গ রূপান্তরঃ
ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা এবং যৌনতা বিষয়ক কিছু আবশ্যিক আলাপ

১।
যৌন প্রাকৃতিক, জেন্ডার নয়।জেন্ডার মানুষের সৃষ্টি (social, cultural construction)। যৌনকে বিভিন্ন সমাজ বিভিন্ন সময়ে যেভাবে ডিল করে, তাঁকে ঘিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্মৃতির ঝলক: প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনুভূতি এবং মনের শান্তির খোঁজে

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০১



সরল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সংমিশ্রণে একটি ঘূর্ণায়মান পথ জুড়ে ঘুরে বেড়ানোর অবস্থানে আমি খুব শান্তি অনুভব করি। নদীর জল ছুঁয়ে পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের সঙ্গে এক আন্তরিক সংযোগ অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×