মেল গিবসন পরিচালিত ২০০৬ সালের সিনেমা Apocalypto আবার দেখলাম। এই নিয়ে তৃতীয় বা চতুর্থবার দেখা হলো এই অসাধারন ছবিটি। বেশ কয়েক বছর আগে দেখেছিলাম তাই ভাবলাম রিভিউ লেখার আগে সিনেমাটি আরেকবার দেখি। পুরো সিনেমাটির কাহীনি এতটাই চমৎকার করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে যে সব সময় প্রতিটি মুহুর্তে ছবিটির দিকেই চোখ রাখতে হয়। আর এই সিনেমাটি ইংরেজি সাব-টাইটেল দিয়ে দেখতে হবে কারণ সিনেমায় কোন ইংরেজি ভাষা ব্যবহৃত হয় নাই। পুরো সিনেমাতে মায়ান ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে।
দক্ষিণ আমেরিকার এক সময়কার বিখ্যাত মায়া সভ্যতাদের নিয়ে নির্মিত হয়েছে এই সিনেমাটি। চিত্রনাট্য লিখেছে মেল গিবসন ও ইরানী বংশদ্ভুত ফরহাদ সাফিনিয়া। বেশ জটিল স্ক্রীপ্ট তারা লিখেছেন। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সাসপেন্সে ভরা গোটা মুভ্যিটি। দেখা সিনেমা আবার দেখলাম কিন্তু কোনই খারাপ লাগছিলনা।
সিনেমাটি পুরোটাই ধারনকৃত হয় জংগলে। কাহীনিটি বেশ সাধারণ কিন্তু অসাধারণভাবে পরিচালক তা ফুটিয়ে তুলেছে। সিনেমার প্রধান চরিত্র জাগুয়ার প কিভাবে শত্রুদের কাছ থেকে পালিয়ে বেড়ায় সেটাই দেখানো হয়েছে। জাগুয়ার প যে জংগলে থাকে সেই জংগলে শত্রুরা এসে গ্রামের সবাইকে আটক করে ফেলে। জাগুয়ার পর বাপ প্রাণ হারায়। জাগুয়ার প তার স্ত্রী ও বাচ্চাকে একটি কুয়ার ভেতর লুকিয়ে রাখে যাতে শত্রুরা না টের পায়।
এরপর শত্রুদের কাছ থেকে পালিয়ে বেড়ানোর এক পর্যায়ে সে উপলব্ধি করে যে পুরো জংগল তার নিজের জানা। তার নিজের চেনা জংগলে সে কেনো পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এরপর সে প্রতিশোধ নিতে থাকে শত্রুদের ঘায়েল করার জন্য।
ছবিটির সেট ডিজাইন ছিল চমৎকার। গোটা ছবিতে মায়ান সভ্যতার ছাপ পাওয়া যায়। মেল গিবসন কম্পিউটার-জেনারেটেড ইমেইজ না ব্যবহার করে গোটা সেটাটাই সাজিয়েছিল যাতে মায়ান সভ্যতাটি ভালো করে ফুটিয়ে তোলা যায়। মায়ান লোকজন কি পোশাক পড়তো, কি অলংকার ব্যবহার করতো সবই এই সিনেমায় স্থান পেয়েছে।
আমি ৯.৫/১০ দেব এই সিনেমাকে। মেল গিবসন প্রমাণ করে যে সে ভালোমানের একজন অভিনেতা নয় শুধু তিনি উচুমানের পরিচালকও।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৩১