আমার মনের ভিতর একটা জিনিস অনেক দিন থেকেই আঘাত করে আসছিলো । বলতে গেলে আমি একজন মার্কেটিং এর ছাত্র হিসেবে
আমার এই বিষয়টা বেশি চিন্তিত করেছে। বিষয়টা আজ লিখতে বসলাম কারন আমার লেখাটা সবাই পড়তে পারবে। তাই লেখাটা লিখতে
বসলাম।
আমরা আমাদের শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়ে কতোটা সচেতন? প্রশ্নটা করার সাথে সাথে একটা মা উত্তর দেয়। আমার বাচ্চাকে আমি হরলিক্স খাওয়াই। আর রাতে ডানো দুধ খায়। বাচ্চা সাথে সাথে রিপিট করে মা মা আমি কমপ্লেন ও খাই না?
এই হল আধুনিক মা বাবা।
তার উপর ফাস্ট ফুড হিসেবে বার্গার, পিজ্জা, পাস্তা, এসব তো আছেই।
আমরা শিশু কাল থেকে লেকটজেন, মাই বয়, এসব খাওয়াতে অভ্যস্ত করি আমাদের শিশুটিকে।
আসলেই কি এইসব খাবার আমাদের শিশুকে লম্বা করে, বুদ্ধিমান করে, শক্তিশালী করে?
একবারো ভেবে দেখিনা। ছোট শিশুটি শহরে বেড়ে উঠে। তার জন্য কোন খেলার মাঠ নাই। তার
উপর এইসব উচ্চ ফেট যুক্ত খাবার তাকে করে তুলে মোটা দেহের অধিকারী।
বাচ্চা ছেলে মেয়েরা শাক সবজি খেতে চায়না। এটা অনেক মায়েরা নালিশ করে। কেন খেতে চায়না তা আমরা জানতে চাইকি?
আপনি যা খাওয়াচ্ছেন তা আসলেই পুষ্টি চাহিদা পুরন করে কি?
আপনার বাচ্চার দেহ নিয়ে চিন্তা করতে গিয়ে মার্কেটিং এর এই জগতে আপনি গা ভাসিয়ে দিচ্ছেন নাতো?
এই কারনে নানান ভিটামিন এর অভাবে ভোগে আপনার শিশু। আর কম বয়সে তার
চোখে রোগ দেখা দেয়। ওজন বেশি হয়ে যায়। নানান জটিলতা দেখা দেয়
।
কেন এমন হয়?
একবার ভেবে দেখেছেন , আপনার খাওয়ানো
এইসকল বিজ্ঞাপন দেওয়া পণ্য গুলোতে আসলে কি আছে?
কি এর প্রধান উপাদান?
ভাবেননি তো , এইবার ভেবে দেখুন।
এই সকল পানীয়তে প্রচুর পরিমাণে চিনি ব্যবহৃত হয়! এমনকি এগুলোর অধিকাংশগুলোতে চকলেটও থাকে। এ ধরনের উপাদান আমাদের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।
ক্ষতির মধ্যে একটি হচ্ছে মুখস্বাস্থ্য নষ্ট হওয়া। যখন অতিরিক্ত চিনি খাওয়া হবে তখন মুখে ব্যাকটেরিয়া জন্মাবে। যেগুলো পরবর্তীতে দন্তক্ষয়, ও ক্যাভিটির সৃষ্টি করবে।
এতে অতিরিক্ত চিনি থাকায় তা তাৎক্ষণিকভাবে শক্তি যোগালেও পরবর্তীতে অবসাদ ও অলসতার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আপনি ফলমূল থেকেও শক্তি পাবেন। তাই মল্ট অথবা সম্পূরক খাদ্য কেন গ্রহণ করবেন?
এছাড়াও মল্ট জাতীয় পানীয় এবং সম্পূরক খাবারকে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করতে প্রিজারভেটিভ ব্যবহৃহ হয়। সাথে ব্যবহৃত হয় কৃত্রিম রং। যেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
ক্লিনিক্যালি প্রমাণিত হয় যে, এ ধরনের প্রিজারভেটিভ ও কৃত্রিম রং বাচ্চাদের আচরণের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। এটি স্মৃতির উপরও প্রভাব ফেলে এবং মনোযোগ ও বিচক্ষণা কমিয়ে দেয়!
একথায়, স্বাস্থ্যবান শিশুসহ সকলের অবশ্যই এসব এড়িয়ে চলা উচিৎ।
অনেকে মজা করে বলে থাকেন
দুধের সাথে হরলিক্স
মিশান....দুধের
পুষ্টি বাড়ান
এত কষ্টের
কি দরকার????
গরুরে হরলিক্স
খাওয়াইলেই
তো হয়....
এটা আসলেই মজার বিষয় নয়। আমি মনে করি যখন কথা আসে আপনার সন্তানের সুস্বাস্থ্য নিয়ে আপনাকে সচেতন হতেই হবে।
আপনি সচেতন হলেই আগামীর সকাল হবে সুন্দর ।।। আপনি কি ভাবেন? আপনার যে ছেলেটি /মেয়েটি শাক সবজি খায়না, ছোট মাছ
খায় না। সে শুধু হরলিক্স খেয়ে টলার স্ট্রংগার আর সার্ফার হয়ে যাবে। সে স্পিড খেয়ে স্পিডি হয়ে যাবে।
আর পুষ্টি সয়াবিন তেলের হাজার রকমের গুন আছে। না নাই।
আপনি কি ভানেন এক প্যাকেট ডানো নিডো আপনার বাচ্চাকে বুদ্ধিমান করে তুলবে?
এখনো সময় আছে সচেতন হয়ে যান।
আপনার শিশুর বয়স ৫। চশমা ছাড়া চোখে দেখেনা। আপনার সন্তান দাত উঠতেও সমস্যা ।
মোটা হচ্ছে দিনকে দিন।
পড়া লেখায় মনোযোগ নাই। খেলার জায়গাও নাই শহরে থাকে।
কবে আপনি সচেতন হবেন? টাকা থাকলে সব আসে। জীবন আসে না।।।
পরিশেষে, আপনার বাচ্চাকে বেশি বেশি তাজা ফলমূল ও শাক-সবজি খাওয়াবেন। ব্যাগে করে হরলিক্স, কমপ্লান নিয়ে ঘোরাঘুরি করবেন না। মনে রাখবেন এতে বাচ্চারা বয়স ও বুদ্ধিতে তরতর করে বাড়বে না বরং কমবে। তাই বাচ্চাকে দুধের সাথে হরলিক্স, কমপ্লান না খাইয়ে ফলমূল শাকসবজি , ছোট মাছ, বাড়ির খাবার খাওয়ান
।
বিজ্ঞাপন তো অনেক কিছুই দেখায়, । ক্লোজআপ দিয়ে দাত ব্রাশ করলে মেয়ে কেছে আসবে। ওয়াইল্ড স্টোন এক্স, সেট ওয়েট
দেহে মারলে নারী বিছানায় চলে আসবে। ওসব মানা যায়।
মানা যায়না যখন
শিশু খাদ্য নিয়ে এমন বিজ্ঞাপন দেয়। অথচো ভোক্তা অধিকার আঈন প্রয়োগকারী সংস্থা গুলো নিরব থাকে।
নুডলসের বিজ্ঞাপন গুলো দেখলে মনে হয়
আর কিছু না খাওয়ালেও চলবে। শুধু ইয়ামি মজাদার নুডলস খাওয়ালেই
শিশু বেড়ে উঠবে।
শিশু খাদ্য নিয়ে এমন তালবাহানা আর কয়দিন দেখবো আমরা?
এই ধরনের চটকদার বিজ্ঞাপন কোনদিন ই ভোক্তার কথা ভাবে না। তারা ভোক্তাকে একটা আকর্ষণীয় কথা বলে শুধু ধরে রাখতে
চায়। আর ব্যবসায়ী মুনাফা বৃৃদ্ধি করতে চায়।।
আর আমরা এই জিনিস গুলোকে সত্য মেনে নেই। কারন এর সাথে ওই সকল ব্যক্তিদের ব্যবহার করা হয় যাদের আমরা বিশ্বাস করি।
যাদের কথা সত্য মানি, টিবি স্টার, বিখ্যাত খেলোয়াড়, আর নাট্যকার শিল্পি এমন ব্যক্তি।
আর এই বিজ্ঞাপনী ফাদে আমরা আজিবন ধরে ফেসে যাই।
বিশেষ দ্রঃ এটি কপি নয়। আগামী পর্বে ভোক্তা অধিকার সম্পর্কে কিছু লেখার ইচ্ছা আছে। ছবিটা গুগোল হতে ধার করা ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৪০