আমরা প্রতিদিনের জীবনে রাস্তাঘাট, পার্ক, অফিসে, কত স্থানে যাই। আমরা দুনিয়াকে নিজেদের মতো দেখি। ভালো কথা আপনি নিজেদের আপন ভাবনায় দুনিয়া দেখবেন। আমিও দেখি। তাই বলে সবাইকে নিজের মতো ভাবা কতটা যুক্তিগত? মানুষ কে দেখেই তাকে অপরাধী ঘোসনা করা কতটা যুক্তিগত? মানুষকে আমরা যেভাবে দেখছি, চোখের দেখাটাই বড় কথা নয়, এটা জানা দরকার আসুন কিছু ঘটনা উল্লেখ করি ।
১)ধরে নিন রাস্তায় একজন মেয়ে দাড়িয়ে আছে, রাস্তার অপর পাশে ৪ জন লোক দাড়িয়ে।চারজন ই মেয়ে যেদিকে দাড়িয়ে সেই দিকে তাকিয়ে আছে ।।।
এখন মেয়েটা ভাবতেছে কি খারাপ পুরুষ জাতি। এতো খারাপ? কিভাবে তাকিয়ে আছে., মনে হয় চোখ দিয়েই খেয়ে নিবে। ;(বি দ্রঃ নারীবাদি লোকেরা এভাবেই লিখে) চোখ দিয়ে ধর্ষণ করতেছে লুচ্চার দল।।
আসল ঘটনা কিঃ ১ম ব্যক্তি একজন অন্ধ লোক। চোখে কম দেখে। সে এতো দূরে তো দেখেই না। বরং সে ১ফিট দুরেও ভালো করে দেখে না ।
২য় ব্যক্তি ঃ সে ঠিক সাইটে একটা পিচ্চিকে দেখতেছিলো, সাথে তার বন্ধুকে বলিতেছিল, দেখ পিচ্ছি কি করতেছে.। হা হা হা চকলেট টা মুখে মাখাইয়া খাইতাছে। কি কিউট না?? বাবুটা।। তার বন্ধু ৩য় লোক সে দেয়ালে পোস্টার দেখতেছিল। দেখ। ব্যাটা নিজেকে কি বড় নেতা ভাবে। এতো বড় বড় পোস্টার ছাপাইছে, দেখ নিজের ছবিটা বড় বড় করে দিয়েছে। অথচ নেত্রীর ছবি, ছোট, । এইটা কি বুঝাইতে চায় সে? তার দাম বেশি নেত্রীর দাম কম। পেপারে দেখস নাই? নেত্রীর ছবি এতো ছোট দেয়ার কোন নিয়ম নাই। এই সব নিয়া কথা বলছিলো দুই জন।
৪র্থ ব্যক্তি টা মেয়ের দিকে তাকিয়ে ছিলো। তবে বলল না ভাই জামার রংটা ভালোনা। এই একটা লোক ই মেয়ের দিকে তাকিয়ে ছিলো অথচ মেয়েটি সবাইকে এক সাথে অপরাধী ঘোসনা করলো। পাঠক বলবে মেয়েটির মনের কথা ওই চারজন জানলো কেমনে, ? হুম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, একটু পরেই তার বান্ধবীর আগমন হতেই, সে বীরের মতো ওই ডায়লগটাই মেরেছে। কাউকে ভয় পাইনা। দেখ দেখ কেমনে তাকায়া আছে. মনে হয় গিলে খাবে।
আসল কথায় আসি। কলেজে কিছু পোলাপান থাকে যারা সারাদিন মেয়েদের পিছনে ঘুরে। প্রেম করার নিয়ত নিয়াই তারা এই কাজ করে।
তবে আমি এমন ছেলে দেখেছি। এরা রাজনীতি ছাড়া কিছুই বুঝেনা। এমন কি তাদের জীবনে কোন মেয়ে বন্ধুও নাই। তারা বলে মেয়েদের সাথে প্রেম করলে, পিছনে ঘুরলে অনেক লস, ১) তাদের সময় দিতে হবে মেয়েদের সময় দিলে রাজনীতিতে সময় দিতে পারবো না। (২) তাদের পিছনে ঘুরলে অপজিশন লোকেরা খারাপ তথ্য ছড়াইতে পারে।তাই আমার ক্যারিয়ার খারাপ হতে পারে। (৩)ক্ষমতার অপব্যবহার করা যাবে না। মেয়েদের সাথে ঘুরলে খারাপ ইমেজ ছড়াতে পারে।। তাই এরা প্রেম করেনা। সবাইনা। আর ওই চার জনের একজন ছিলো এমন ই মাইন্ডের লোক।।। তাহলে কি বুঝলেন? মানুষ তাকিয়ে আছে মানে এই না আপনাকে দেখতাছে
ঘটনা দুই , আমি বসে আছি, এক জনের জন্য অপেক্ষারত, হাসপাতালে, । তো কি করবো নেট অপেন করে ব্লগে ঘুরলাম। কিছুক্ষণ ম্যাসেঞ্জারে কাটালাম। ফেসবুক চালাইনা। অনেক দিন হল ছেড়ে দিয়েছি। তো আমার কাজ নাই বসে আছি। দেখি অপর পাশে দেয়ালে কি কি নির্দেশিকা লেখা। পড়া শুরু করলাম। কি লিখছে?
কিছু মেয়ে বসে ছিল। খেয়াল করেছি তবে আমার বিরক্ত লাগে যদি কেউ বসিয়া রাখে, অপেক্ষা করা একদম ভালো লাগে না। যাই হোক এদিকে ওদিকে অনেক কিছুই দেখছি। উপভোগ করা যাকে বলে।
★একটা পিচ্চি চললেট খাবে বলে চিক্কার দিতেছে। আবার তার পিচ্চি ভাইকে নিয়া খেলা করছে। পিচ্চিটা অনেক কিউট। আমার কাছে শিশুর এই আচরণ খুব ভালো লাগে। ৫০০টাকা দিয়ে মেটিনি শো দেখার মতো উপভোগ করি।
★আরেকটা পিচ্ছি তার মার সাথে বসে আছে। মেয়ে, পিচ্চির নাম আমার বড় আপুর সাথে মিলে। সে অনেক ট্যালেন্ট।।। তার মাকে এইটা সেইটা প্রশ্ন করতেছে। আর বুড়ির মতো নিজেই বলে দেয়। এমন ট্যালেন্টেড পিচ্চি আমি কোনদিন দেখিনাই। শিশুরা তার ভালোবাসা দিয়ে সবাইকে আকর্ষণ করে। হঠাত সেই কাহিনি ময় ডায়লগ কানে এলো। ওই মেয়ে গুলোর একটা বলতেছে, দেখ তোর দিকে কেমনে ডেব ডেব করে তাকিয়ে আছে। ছি ছি ছি মন থেকে এই কথাটা বের হল আমার। আমি তাদের দিকে একবারো তাকাইনি। বলতে গেলে এতোক্ষন এই পিচ্চি দুইটার দিকেই তাকিয়ে ছিলাম। মাঝখানে তারা থাকলে আমার কি অপরাধ বুঝিনা
নারীবাদিদের কি বলবো? তারা পাইলে তার বাবারেও ছাড়েনা । কোন এক লেখিকা তার মামা, বাবা সবাইকে অপরাধী বলে ঘোসনা দিয়েছিল।এখন আমরা পুরা জাতিই অপরাধী হয়ে গেছি।
ওই কাহিনি টা মনে পড়ে বারবার । একটা পুকুর। সকাল বেলা দুই লোক হাত মুখ ধুচ্ছে। একজন চোর আরেকজন হুজুর। হুজুর ভাবে আহা এই লোকটা কত ভালো। এই শীতের রাতেও অযু করে নানাজ আদায় করবে। চোর ভাবে শালা ও আমার মতো, দেখো সারারাত চুরি করে এসে গোসল করতেছে।
আপনি কি ভাবছেন তা আমার দেখার বিষয় না। সবাইকে অপরাধী বললেই সবাই অপরাধী হয়ে যায়না।। সবাই আপনার মতো না।
জীবনে অনেক দুঃখী কষ্ট সয়ে বড় হয়ে, ফালতু জিনিস নিয়া ভাবনার সময় নাই। তার পরেও ভাবতে হয়। কেন জানেন? আপনাদের আচরণের জন্য এখন যুগ আপনাদের কাউকে নির্যাতন মামলা দিয়ে দিলে আমাদের জীবন শেষ। অথচ একবার ভেবেও দেখেন না ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট রাস্তায় দাড়িয়ে দিয়ে দেন।
জীবনটা এতো সহজ না। সারাদিন অনেক কাজ থাকে। চোখটা খালি আপনাদের দিকে তাকানোর জন্য না।।। আরো কাজ আছে।
আজ শুধু দুইটা ঘটনা তুলে ধরলাম। এমন অনেক কাহিনি আছে। গ্রাম থেকে আসা কিছু মেয়ে ভাবে সবাই তাদের দিকেই তাকিয়ে থাকে। আর কিছু নারী আছে তারা ভাবে যে তারা খুব সুন্দরী। সব পুরুষ শুধু তাদের দেখে। মানুষের আর কোন কাজ নাই। মানুষ শুধু তাদের দেখে। কিছু তো এতো ডেঞ্জারাস যে তারা ভাবে সবাই তাদের ধর্ষণ করার জন্য বসে আছে। আর রাস্তায় এমন মন্তব্য করে। মরা লাশের ও মাথা খারাপ হয়ে যাবে। তারা বলে কাউকে ভয় পাইনা। আচ্ছা ভালো কথা। তারপর যা বলে মনে হয় দুনিয়াতে আমাদের কোন কাজ নাই। সারাদিন চোখের তাকিয়ে থাকাই কাজ। এটা দিনে দিনে বাড়বে। তাতে আমাদের কি।।
নারী না পুরুষ না, দেশে বেচে থাকার অধিকার সবার আছে। অধিকার ছাড়া কেউ স্বাধীনতা ভোগ করতে না পারলে আমরা কেন দেশ স্বাধীন করেছি? তাই বলে দেশে মেন্টাল রোগী দিনে দিনে বৃৃদ্ধি পাচ্ছে এটা ঠিক নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫২