somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চ্যানেলগুলোর ঈদ অনুষ্ঠানে বৈচিত্র্য আনাটা জরুরি

২০ শে অক্টোবর, ২০০৭ বিকাল ৫:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এবার ঈদে সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভিসহ অন্যান্য স্যাটেলাইট চ্যানেল প্রচার করেছে ন্যূনতম পাচদিনের ঈদ অনুষ্ঠানমালা। নাটক, টেলিফিল্ম, সঙ্গীতানুষ্ঠান, ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান, বাংলা মুভিসহ নানা ধরনের আয়োজন ছিল এসব অনুষ্ঠানমালায়।

বিষয়বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে তেমন কোনো ভ্যারিয়েশন চ্যানেলগুলো এবার ঈদেও উপস্থাপন করতে পারেনি। হাস্যরসকে মূল করেই এসব অনুষ্ঠান নির্মিত হয়েছে। অধিকাংশ নাটক বা ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানেরই লক্ষ্য ছিল দর্শকদের কৃত্রিমভাবে কতোটা হাসানো যায়। দর্শকরা অনেকে সেজন্য হেসেছেন আবার কেউবা হয়েছেন বিরক্ত!

বিরক্তির মূল কারণ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষজনই টেলিভিশনের অনুষ্ঠান দেখতে বসেন। কিন্তু অনুষ্ঠান নির্মাতারা হয়তো কোনো একটি টার্গেট গ্রুপকে উদ্দেশ্য করে তাদের প্রোগ্রামটি রিপ্রেজেন্ট করেন। ফলে অন্যরা তা মনঃপূত না হওয়ায় ঝট করেই চলে যান অন্য অনুষ্ঠানে।

আবার টার্গেট গ্রুপের মধ্যেও কৃত্রিমতা অপছন্দ করেন অনেকে। ফলে তারাও নির্মাতার প্রতি হন ক্ষুব্ধ। খুব ভালো একটি কাহিনীকেও হালকা করে দেয়া সম্ভব, যদি এর মধ্যে বাহুল্য একটি সিকোয়েন্সকে জুড়ে দেয়া হয়। অনেক সময় পুরো প্রোগ্রামটিকেই নষ্ট করে দিতে পারে ছোট ও বাহুল্য একটি সিকোয়েন্স। কারণ দর্শকরা এখন আর বিটিভির ওপর নির্ভরশীল নন। তাদের রয়েছে অনেক চয়েস। তাই দর্শক ধরে রাখতে হলে চ্যানেলগুলোকে চেষ্টা করতে হবে কৃত্রিমতাবর্জিত ভ্যারাইটিস প্রোগ্রাম নির্মাণের।

এবার ঈদে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানগুলোতে দেখা গেছে তথৈব অবস্থা। পুরো বছরের দুটো ঈদেই কেবল আনন্দমেলা রাত ১০টার সংবাদের পর বিটিভিতে প্রচারিত হয়। দর্শকরা অনেকেই আশা করে থাকেন আনন্দমেলা দেখতে। কিন্তু প্রতিবারই তারা হতাশ হন আনন্দমেলার আনন্দদানের ক্ষমতা দেখে।

অথচ আজ থেকে ৭/৮ বছর আগের আনন্দমেলাতেও কিন্তু যতেœর ছাপ থাকতো, বৈচিত্র্য থাকতো। আর বর্তমানের আনন্দমেলা দেখলে মনে হয় ঈদে তৈরি করতে হবে বলেই দায়সারাগোছের কিছু একটা দাড় করিয়েই যেন নির্মাতারা তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন!

জ্ঞানগর্ভ ও উপদেশমূলক থিম নিয়ে আনন্দমেলায় কৌতুক-নাটিকা উপস্থাপন এখন যেন একটা ট্র্যাডিশনে পরিণত হয়েছে। আর তার সঙ্গে কিছু গান, নাচ আর হয়তো ফ্যাশনের আয়োজন। কিংবা দর্শক পর্বের নামে উদ্ভট কোনো প্রতিযোগিতার দৃশ্যায়ন। এই নিয়েই তো আনন্দমেলায় চলছে।

অথচ ঈদের অনেক আগে থেকেই কিন্তু অভিজ্ঞ কোনো ব্যক্তির কাছে আনন্দমেলার দায়িত্ব দেয়া যায়, এর মান কিভাবে ভালো করা যায় তার দেখভালের জন্য। বিটিভির নিজস্ব প্রোডাকশনের ভেতরে আনন্দমেলা একটি, এ কারণেই কি এর মান এতো খারাপ? বিটিভি কর্তৃপক্ষ কোনো প্যাকেজ প্রোডাকশন হাউসকে আনন্দমেলার দায়িত্ব দিয়ে দেখতে পারেন, তারা কেমন করে। আশা করা যায়, এতে করে অনুষ্ঠানের মান খানিকটা নয় বরং অনেকখানিই ইম্প্রুভ করবে। কারণ, প্যাকেজ কোম্পানি জানে যে কিভাবে বিজনেস ঠিক রাখতে হয়! আনন্দমেলার মান আরো নিচে নেমে যাওয়ার আগেই বিটিভি কর্তৃপক্ষের উচিত সঠিক ডিসিশন নিয়ে আনন্দমেলার গ্ল্যামারকে পুনরুদ্ধার করার।

কেবল আনন্দমেলাই নয়, অন্যান্য চ্যানেলের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানগুলোতেও দেখা গেছে প্রায় একই রকম দৃশ্য। উপস্থাপকের মাত্রাতিরিক্ত স্মার্ট হওয়ার চেষ্টা বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে উপস্থাপকের নিজেই আর্টিস্ট হয়ে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানটিতে পারফর্মের বিষয়টি খুবই দৃষ্টিকটু লেগেছে। উপস্থাপকের পারফর্ম করাকে স্বজনপ্রীতির আরেকটি দৃষ্টান্ত বলে আমাদেরকে টেলিফোন করে জানিয়েছেন অনেক দর্শক!

বাংলা মুভির ক্ষেত্রে চ্যানেলগুলোর নজর ছিল জনপ্রিয় বাংলা মুভিগুলো প্রচার করার। এ কারণেই বাংলাভিশনে হৃদয়ের কথা, হঠাৎ বৃষ্টি, পদ্মা নদীর মাঝি, কেয়ামত থেকে কেয়ামত, চ্যানেল আইতে বেদের মেয়ে জোসনা, আরটিভিতে কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি, ব্যাচেলর, এনটিভিতে মায়ের মর্যাদা, না বলো না, এটিএন বাংলায় জন্ম, বিটিভিতে নয় নম্বর বিপদ সংকেত মুভিগুলো দেখানো হয়।

তবে ঈদের দিন বিটিভিতে রুনা লায়লা ও আলমগীর অভিনীত শিল্পী মুভিটি কেন প্রচারিত হলো তা বোধগম্য হলো না। ঈদের মুভি হিসেবে শিল্পী কতোখানি প্রাধান্য পেতে পারে, সেই খটকা কিন্তু অনেক দর্শকই আমাদের জানিয়েছেন।

তবে ভ্যারিয়েশনের দিক থেকে অনেকখানিই এগিয়ে ছিল এনটিভি, চ্যানেল ওয়ান ও ইটিভি। আর যথারীতি বিটিভিতে ঈদের পরের দিন প্রচারিত ইত্যাদি তার স্বকীয়তা এবারো ধরে রেখেছে।

এছাড়া আরো যেসব প্রোগ্রাম দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে নাটক এনটিভিতে একজন রেডিও জকির গল্প, ব্যাংক ড্রাফট, একাকিত্ব, ছোটবেলা বড়বেলা, এটিএন বাংলায় গনি সাহেবের শেষ কিছুদিন, ইলিশের স্বাদ, খ- নাটক রাত নেমেছে দুপুরে, যে জীবন হয়নি যাপন, চ্যানেল আইতে দুই রুস্তম, হোচট, একটি মাত্র ঘণ্টা, ইটিভিতে বাবা ও ঈদ, ফুচকা বিলাস, প্রেম ও পরাবাস্তবতা, প্রতিচ্ছায়া, ফুল একা একা ফোটে, বাংলাভিশনে জব্বর আলী এখন রিমান্ডে, তুমি আছো তাই, অসময়, চ্যানেল ওয়ানে বোধ, আরটিভিতে কলেজ স্টুডেন্ট, ঘাসফুল, ঘুড়ি, রেকর্ড বুকে জনৈক সাদেক, বিটিভিতে বউ, কয়েদি, মন+হৃদয় ও বৈশাখীতে সারফুদ্দিনের সংসার।

আর টেলিফিল্মের মধ্যে দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে এনটিভিতে নিষাদ, শাপমোচন, এটিএন বাংলায় ট্রেনিং সেন্টার, ফেরারি মন, চ্যানেল আইতে প্রিয় বান্ধবী, যে কথা মনের কথা, ইটিভিতে সম্পর্ক, কালেভদ্রে, অপয়া, বাংলাভিশনে অনুরাগের ছোয়া, চ্যানেল ওয়ানে চাদ ফুল জোসনা, ২৪৪১১৩৯, আপদ, আরটিভিতে শোধ, রুপার মুদ্রা ও ধুলো মেঘের জোৎস্না ভ্রমণ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০০৮ বিকাল ৩:৫২
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×