সাংবাদিকদের সকাল হয় একটু দেরী করে। অফিস টাইম অন্যান্যদের তুলনায় ভিন্ন বলে জরুরী কোন কাজ না থাকলে পারতপক্ষে কেউ-ই সকালের ঘুম নষ্ট করেন না। আমার অবশ্য প্রায় প্রতিদিনই সকাল ৮টার সময়ই ঘুম ভেঙ্গে যায়। তবে আলসেমি কাটিয়ে বিছানা ছাড়তে প্রায়ই ৯/১০টা বাজে। আর সেজন্য নাস্তা করে সকালের চা যখন বানানো শেষ করি তখন ঘড়ির কাঁটা ১১টা ছুঁই ছুঁই করে।
আজও নাস্তা সেরে সবে মাত্র চা বানাবো তখনই অচেনা একটা নম্বর থেকে ফোন এলো। রিসিভ করতেই অপর প্রান্তে মিষ্টি কণ্ঠের নারীর স্বর শুনতে পেলাম। কিছুটা সংকোচ আর কিছুটা দ্বিধা যেন মিশে ছিল সেই কণ্ঠে। জিজ্ঞেস করলেন, 'রিজভী' বলছেন? সম্মতি জানাতেই তিনি নিজের নাম জানালেন। বললেন, তাকে চিনতে পারছি কিনা। ব্রেনের এপার থেকে ওপার তন্নতন্ন করে খোঁজ লাগালাম। কিন্তু নাহ, এই নামটাই আমার কাছে যেন পুরোপুরিই অচেনা! নেগেটিভ জবাব জানাতেই কিছুটা যেন বিষাদের সুর সেই কণ্ঠে বেজে উঠলো। আবারো বললেন, তিনি যেই রিজভীকে খুঁজছেন তার সঙ্গে তিনি ঢাবিতে একসঙ্গে পড়েছেন, নাটোরেও পাশাপাশি ছিলেন। অপরিচিতা সেই কণ্ঠকে জানালাম, আমিতো জাবিতে পড়েছি। এবার পুরোপুরি হার স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করলেন তিনি। বললেন, তার এই হারিয়ে যাওয়া বন্ধুটিকে তিনি আসলে খুঁজছেন। নিজের মোবাইলে আমার নাম দেখে ভেবেছেন হয়তো এটিই তার সেই বন্ধুর নম্বর। পুনরায় দুঃখ প্রকাশ করে তিনি ফোন রেখে দিলেন।
ফোনের সংযোগ কেটে গেলেও ব্রেনের সঙ্গে সংযোগ এখনো কাটতে পারছিনা। কারণ এমন অনেক পুরনো বন্ধুই তো হারিয়ে গেছে, যাদেরকে অবচেতন মন এখনো খোঁজে। অচেনা ফোন কলগুলোতে তাদেরকেই সার্চ করে। হয়তো এভাবেই কখনো বা হারিয়ে যাওয়া কোন বন্ধুকে খুঁজে পাবো, কিংবা কখনোই পাবো না......