somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তানজীর আহমেদ সিয়াম
সবার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে আমি কোন ব্লগার নই মন চায় তাই লিখি তথ্য-উপাত্ত সবার সাথে শেয়ার করি ।nজব এর পাশাপাশি এয়ার টিকেট ও ট্রাভেল ভিসার ব্যাবসা করি ।nধন্যবাদn

কুড়ানো ( পর্ব -১১ ) ★' অধ্যাপক শহীদ আনোয়ার পাশা ' ★

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অধ্যাপক শহীদ আনোয়ার পাশা ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আবাসিক এলাকার ৩০ নম্বর বাড়ির বাসায় সেদিন পরিবার-পরিজনের সঙ্গে তিনিও ছিলেন। তাঁর পরনে তখন লুঙ্গি ও হাওয়াই শার্ট, গায়ে চাদর। সেদিন সকাল ৯টার দিকে লাল রঙের একটি গাড়ি আনোয়ার পাশার বাসার সামনে এসে থামে। গাড়ি থেকে অস্ত্রসহ নেমে আসে। আশরাফুজ্জামান ও চৌধুরী মইনুদ্দিনের নেতৃত্বে আলবদর বাহিনীর কয়েক জল্লাদ।
আলবদরের জল্লাদ'রা বাসায় ঢুকে প্রথমেই তাঁর গায়ের চাদরটি দিয়েই তাঁর চোখ বেঁধে ফেলে; ধরে নিয়ে চলে যায় মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের দিকে। সেখানেই আরও অনেকের সঙ্গে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় তাঁকে।
বলছি, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রচিত সর্বপ্রথম লিখিত উপন্যাস 'রাইফেল রোটি আওরাত'-এর লেখক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শহীদ আনোয়ার পাশার কথা। একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে 'রাইফেল রোটি আওরাত' উপন্যাসটি রচিত হয়েছিল। এপ্রিল মাসে যখন উপন্যাসটি রচনা শুরু করেন, প্রথম বাক্যটিই লিখলেন, ‘বাংলাদেশে নামল ভোর’। কিন্তু এই ভোর সেই ভোর নয়, ২৫ মার্চ রাতের অপারেশন সার্চলাইট নামক পাকিস্তানী হানাদারদের গণহত্যা পর্বের শুরু শেষের ভোর।
শহীদ অধ্যাপক আনোয়ার পাশা ১৫ এপ্রিল, ১৯২৮ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর মহকুমার ডাবকাই গ্রামে জন্মেছিলেন। বাবা হাজী মকরম আলী, মা সাবেরা খাতুন। দুই ভাই আলাউদ্দীন ও আবদুর রকীব। ১৯৫৩ সালের ১ এপ্রিল বিয়ে করেন, নদীয়ার পালিত বেখিয়া গ্রামের হেকমত আলী মণ্ডলের কন্যা মসিনা খাতুনকে। তাঁদের দুই পুত্র সন্তান মাসারুল আফতাব ও রবিউল আফতাব।
মাদ্রাসায় শিক্ষাজীবনের শুরু। ১৯৩৯ সালে ভর্তি হন ভাবতা আজিজিয়া উচ্চ মাদ্রাসায়। ১৯৪৬-এ হাই মাদ্রাসা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগ পান। এরপর বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে ১৯৪৮ সালে আইএ পাস করেন, দ্বিতীয় বিভাগে। দেশ ভাগের পর, চলে আসেন পূর্ব পাকিস্তানের রাজশাহী কলেজে, বি.এ. পড়তে। ১৯৫১ সালে দ্বিতীয় বিভাগে বি.এ. পাস করে আবার চলে যান, ভারতে। এবার বাংলায় এম.এ. ভর্তি হন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৫৩ সালে এম.এ. পাস করেন, দ্বিতীয় বিভাগে।
তাঁর জীবনের দুটি ঘটনা উল্লেখ না করলেই নয়............
★ ঘটনা ১
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে একজন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন যোগ্য শিক্ষক প্রয়োজন মর্মে দৈনিক আনন্দবাজারে একটি বিজ্ঞাপন তার নজরে আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার এক প্রবল আগ্রহ তিনি মনের গভীরে অনেক আগে থেকেই পোষণ করতেন। বিজ্ঞাপনটি আদ্যোপান্ত পড়ে দেখলেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যা যা চেয়েছে তার সবই তার আছে। তাই সময়মতো তিনি দরখাস্ত পাঠিয়ে দিলেন।
যথাসময়ে তার ইন্টারভিউ কার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসে গেল। নির্দিষ্ট তারিখে তিনি অন্যান্য আবেদনকারীর সঙ্গে লিখিত পরীক্ষা দিলেন। বলা হলো লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মৌখিক (ভাইভা) পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। সময়মতো সে আহ্বানও এলো। গেলেন আনোয়ার পাশা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার। হলো তার মৌখিক পরীক্ষাও। অতঃপর ফিরে এলেন।
এবারে অপেক্ষার পালা। কিন্তু সেই অপেক্ষার যেন আর শেষ নেই। মাস দুয়েক অপেক্ষা করেও যখন কোনো নিয়োগপত্র এলো না তখন সময় করে একদিন গেলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। গভীর বিস্ময়ের সঙ্গে জানতে পারলেন, ওই পদে নিয়োগ দেয়া হয়ে গেছে। যাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তিনি যোগদানও করে ফেলেছেন। খোঁজখবর নিয়ে জানলেন যে, লিখিত ও মৌখিক উভয় পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করা সত্ত্বেও নিয়োগপত্রটি তার কপালে জোটেনি।
আরো অবগত হলেন, যাকে নিয়োগপত্রটি দেয়া হয়েছে তিনি তারই ছাত্র, মেধাবীও নন। টেনেটুনে পাস করেছেন প্রতিটি পরীক্ষায়। এই খবরে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ হলেন আনোয়ার পাশা। তাই কেন এমন হলো তা জানার জন্য কৌতূহলী হয়ে তাঁর একজন সরাসরি শিক্ষককে বিষয়টি জিজ্ঞাসা করলেন। জবাবে শিক্ষক জানালেন, নিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান ছাড়া বাকি সবাই তাঁকে নিয়োগদানের পক্ষে মত প্রদান করা সত্ত্বেও আনোয়ার পাশা ‘মুসলিম’ শুধু এই অপরাধে ওই চেয়ারম্যান তাকে নিয়োগ না দিয়ে অন্যজনকে দিয়েছেন। যাকে দিয়েছেন তিনি হিন্দু ঘরের সন্তান। শিক্ষকটি তাকে এই নিয়ে মামলা ঠুকে দিতে বললেন আনোয়ার পাশাকে এবং বললেন, এতে নিশ্চিত জয় হবে তার।
কিন্তু আনোয়ার পাশা এতটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেন যে, মামলা করার মানসিকতাও হারিয়ে ফেলেছেন। তাই সে পথে না হেঁটে, পুনরায় ফিরে এলেন বহরমপুর কলেজে । কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রদায়িকতা সামান্যতম ঠাঁই পাবে, এমন বিশ্বাস তিনি কখনো পোষণ না করায় এবং এই ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূর্ণ সাম্প্রদায়িকতামুক্ত এমন দৃঢ় আস্থা এতকাল পোষণ করায় অধ্যাপক আনোয়ার পাশা প্রচন্ড মানসিক আঘাত পেলেন।
আনোয়ার পাশা রাজনীতি করতেন না। তবে মনে মনে ছিলেন কংগ্রেসপন্থী, পাকিস্তান ছিল একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। সেই সাম্প্রদায়িক পাকিস্তানেই তিনি চলে এলেন। সপরিবারে বসবাস করতে লাগলেন পাকিস্তানের বা সাম্প্রদায়িকতার অনুগামী হয়ে নয় বরং তার ঘোরতর বিরোধী হয়ে। এখানে এসে ওই আড্ডার অংশীদার হয়ে তিনি তার অজান্তেই যেন কিছুটা ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপের) সমর্থক বনে গেলেন। বস্তুতই তিনি ছিলেন একজন খাঁটি জাতীয়তাবাদী।
★ ঘটনা ২
১৯৬৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। সেদিন ছিল আইয়ুব খান গঠিত মৌলিক গণতন্ত্রীদের ভোটে পাকিস্তানব্যাপী গণপরিষদের নির্বাচন। পাবনায় হঠাৎ করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ঘটে গেল। কিছুকাল আগে অনুষ্ঠিত মালদহের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার প্রতিশোধ নিতে। পাবনার নিরপরাধ হিন্দুরা তার অসহায় শিকার হলেন। ৩১টি মানুষ আইনজীবী-শিক্ষক-ব্যবসায়ী নির্বিশেষে নির্মমভাবে নিহত হলেন। শত শত নর-নারী হলেন আহত, কিছু যুবতী ধর্ষিত। হাজার হাজার বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়া হলো। পাবনার জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়ল আতঙ্কে।
যে পুলিশ দাঙ্গা প্রতিরোধ করবে, তারাই দিব্যি দাঙ্গাকারীদের বড় সহায়ক ভূমিকা পালন করল। পথ দেখিয়ে দেয়া থেকে সবকিছু। দাঙ্গার শুরু একেবারেই সন্ধ্যারাতে কিন্তু তা চলল রাত ৩টা পর্যন্ত। ট্রাকে করে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় সশস্ত্র দুর্বৃত্তদের আনা-নেয়া চলছিল পুলিশের নাকের ডগায়। কয়েকজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে অন্য এক বন্ধুর বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে রাতভর ওই দৃশ্য দেখলাম আর পাকিস্তান নামক বলিহারি মার্কা দেশটিকে বাহবা দিলাম অনেক নিরপরাধ প্রাণ ও সম্পদের বিনিময়ে।
যা হোক, পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ, তখন বেসরকারি, হিন্দু ছাত্রাবাসের জনাত্রিশেক ছাত্র খবরটি শুনে মহাআতঙ্কে ছুটে গেল অধ্যক্ষের বাসভবনে। বহুবার কলিংবেল টেপা ও দরজা ধাক্কানোর পর লুঙ্গি পরা অবস্থায় তিনি বেরিয়ে দরজাটা সামান্য ফাঁক করে রাগত স্বরে জিজ্ঞাসা করলেন 'কে তোমরা'। ছাত্ররা পরিচয় দিয়ে আতঙ্কের কথা বলে তাদের প্রাণে বাঁচানোর আবেদন জানালে তিন ধপাস করে দরজা বন্ধ করে দিয়ে বললেন, 'দরকার হলে এসপির কাছে যাও। আমার কিছু করার নেই।'
হতাশ হয়ে ফিরে এলো ছাত্ররা। ইতোমধ্যে দেখা গেল একটি রিকশা নিয়ে ছুটে এলেন অধ্যাপক আনোয়ার পাশা।
তিনি ওই আতঙ্কিত ছাত্রদের জিজ্ঞাসা করলেন তারা কেমন আছে। সব শুনে তিনি নাইটগার্ডকে ডাকলেন। ডেকে টিচার্স কমনরুমটির দরজা খুলে দিতে বললেন। দরজা খুলতেই আনোয়ার পাশা ছাত্রদের ওই কক্ষে ঢুকিয়ে দিয়ে নাইটগার্ডকে তালা বন্ধ করে দিতে বললেন আর ছাত্রদের বললেন, 'তোমরা ভেতরে চুপচাপ থাক। কথাবার্তা বলবে না, চিৎকার-চেঁচামেচি কিছুই করবে না। অন্য কেউ ডাকলেও না। আমি বাসায় যাচ্ছি তোমাদের জন্য খাবার-পানি নিয়ে আসি।' এই কথা কটি বলেই তিনি বাসায় গিয়ে তার স্ত্রীকে জনাত্রিশেক লোকের জন্য ভাত-তরকারি রান্না করতে বললেন।
রান্না শেষ হতেই আনোয়ার পাশা দুটি রিকশা ডেকে খাবার, এক হাঁড়ি পানি ও কয়েকটি গ্লাস সঙ্গে নিয়ে চলে গেলেন কলেজ ক্যাম্পাসে। নাইটগার্ডকে ডেকে টিচার্স রুমের দরজা খুলিয়ে খাবারগুলো ঢুকিয়ে দিতে বললেন পানির হাঁড়ি ও গ্লাসগুলোসহ। ছাত্রদের ওগুলো খেয়ে ঘুমিয়ে যেতে এবং নাইটগার্ডকে পুনরায় দরজায় তালা লাগাতে বলে সকালে অবস্থা ভালো থাকলে দরজা খুলে দিতে এবং ছাত্রদের তাদের হোস্টেলে ফিরে যেতে বললেন। তবে অবস্থা খারাপ থাকলে এই রুমেই থাকতে বলে তিনি বাসায় চলে গেলেন।
এভাবেই যে হিন্দু সাম্প্রদায়িক শক্তির দাপটে দেশ ছেড়ে এসেছিলেন অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, সেই হিন্দু ছাত্রদের এভাবেই তিনি বাঁচালেন। এ নিয়ে আনোয়ার পাশার কোনো আত্ম-অহমিকা ছিল না। তিনি বিশ্বাস করতেন, শিক্ষক তো ছাত্রদের কাছে পিতার মতোই। তিনি শুধু পিতার ভূমিকা পালন করেছেন, আর কিছু নয়।
আনোয়ার পাশার মনে প্রশ্ন ছিল, হিন্দুর দেশ যদি হয় হিন্দুস্তান (ভারত) আর মুসলমানের দেশ পাকিস্তান, তাহলে মানুষের দেশ কোনটি?
২৫ মার্চের কালরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষককে হত্যা করা হয়। পাকি হার্মাদ বাহিনী বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ার পাশা ও ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক রাশিদুল হাসানের বাড়িতেও প্রবেশ করে। উভয় পরিবার খাটের নিচে লুকিয়ে সেই যাত্রায়প্রাণে বাঁচেন। ঘরে ঢুকে টর্চের আলো ফেলে তাঁদের কাউকে না দেখে হানাদাররা চলে যায়। উভয় শিক্ষক সে রাত্রে বেঁচে গেলেও, মুক্তিযুদ্ধের শেষে তাঁরা আলবদর বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে পারেননি, এমনকি বাড়ি পরিবর্তন করেও।
২৪নং বাড়িতে থাকতেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, সেই বাড়ির নিচে দুই পায়ে গুলিবিদ্ধ দুই মা তাদের শিশু সন্তান নিয়ে আশ্রয় নেওয়ায় সিঁড়িতে রক্ত ছিলো। পাকি সৈন্যরা ভেবেছিলো, অন্য কোনো দল হয়তো অপারেশন শেষ করে গেছে তাই তারা আর ঐ বাড়িতে ঢোকেনি। অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম তখন প্রাণে বেঁচে যান। ঐ বাড়িরই নিচতলায় থাকতো এক পশ্চিম পাকি অধ্যাপক। পঁচিশে মার্চের আগেই সেই ব্যক্তি কাউকে না জানিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকার সব অবাঙালি পরিবার তাই করেছিল।
স্বাধীনতার নবপ্রভাতের জন্য এতো দুর্ভোগ, এত আশা, এতখানি ব্যাকুল প্রতীক্ষা ছিল আনোয়ার পাশার , তা সত্য সত্যই এলো। কিন্তু তিনি তা দেখে যেতে পারেননি। দূরদর্শী মহান শিল্পস্রষ্টা ছিলেন বলেই তিন মাসের ঘটনাকে সামনে রেখে একাধারে ঐতিহাসিক দলিল আর সার্থক সাহিত্য সৃষ্টি করতে পেরেছেন। তাঁকে হত্যা করা গেছে; কিন্তু তাঁর সৃষ্টিকে হত্যা করা সম্ভব হয়নি।
জুন মাসেই তিনি মুক্তির ভোর দেখেছিলেন। ১৯৭১ সালের জুন মাস। উপন্যাসের শেষ প্যারাগ্রাফটি লিখে কলম গুটিয়ে তিনি চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন। বাইরে তখন গুলির শব্দ। শত্রু অধ্যুষিত দেশ। যে কোন সময় যে কোন মুহূর্তে হয়ে যেতে পারেন লাশ, এক গুলিতেই। জীবন-মৃত্যু পায়ের ভৃত্য তখন। শেষ লাইনটি লিখলেন, ‘‘নতুন মানুষ, নতুন পরিচয় এবং নতুন একটি প্রভা। সে আর কতো দূরে। বেশি দূর হতে পারে না। মাত্র এই রাতটুকু তো। মা ভৈঃ। কেটে যাবে।’’
সাড়ে সাত কোটি বাঙালীর তখনকার প্রত্যাশারই অভিব্যক্তি। তার শেষ বাক্যের মতো কেটে অবশ্যই গিয়েছিল। পূর্ব দিগন্তে রক্ত লাল সূর্য উঠেছিল নয় মাস টানা যুদ্ধের পর। ১৯৭১ সালের এপ্রিল থেকে জুন, টানা তিন মাস পরিশ্রমের ফসল তিনি দেখে যেতে পারেননি।
(তথ্য কৃতজ্ঞতাঃ
রণেশ মৈত্র
অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী সম্পাদিত'আনোয়ার পাশা রচনাবলী’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ বছর - অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম
ভূঁইয়া ইকবাল রচিত 'আনোয়ার পাশার 'জীবনী গ্রন্থমালা
ড. ওয়াকিল আহমদের রচিত 'আনোয়ার পাশার জীবনকথা
রশীদ হায়দার সম্পাদিত 'স্মৃতি ৭১,
‘রাইফেল রোটি আওরাতে' আবুল ফজল লিখিত 'ভূমিকা'
এবং জাফর ওয়াজেদ )

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:৩৩
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×