গৌরব ও বেদনার একাত্তরে আমরা পাশে পেয়েছিলাম পরাশক্তি রাশিয়া'কে। একাত্তরে রাশিয়ার ভূমিকা আমাদের স্বাধীনতা অর্জনে রেখেছিল অনিবার্য ভূমিকা ও ত্বরান্বিত করেছিল বিজয়। দেশ স্বাধীনের পর তাঁরা এগিয়ে এসেছিলেন যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে।
রাশিয়া, বিশ্বের অন্যতম বিশালাকায় ভূখণ্ড ও সুপ্রাচীন ইতিহাস। রয়েছে একাধিক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বেদনাভার। শুধুমাত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ায় মৃত্যুবরণ করেছিল ২ কোটি ৬৬ লাখ মানুষ। এর মাঝে সেনাবাহিনীর সদস্য ছিল ৯৭ লাখ ৫০ হাজার। 'স্ট্যালিনগ্রাদের' যুদ্ধেই মারা গিয়েছিলেন ১১ লাখ রাশিয়ান।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির পর থেকেই প্রতি বছর মে মাসের ৯ তারিখে রাশিয়ায় 'Victory Day Parade' অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই প্যারেডে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সেনা সদস্যরা অংশ নেন এবং রাস্তার দু'পাশ থেকে আপামর মানুষ তাঁদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জ্ঞাপন করে থাকেন প্রকাশ্যে।
তিনটি ছবিই ২০০৭ সালের ৯ই মে, সেন্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিত Victory Day Parade'এ তোলা। ছবির মানুষটি তাঁর ব্যাটালিয়ন দলের শেষ জীবিত সদস্য। প্রচণ্ড আবেগে তিনি কেঁদে ফেলেছিলেন সে মুহূর্তে। তাঁর সহযোদ্ধারা একে একে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন, সে বছর তিনি একাই তাঁর ব্যাটালিয়ন দলের হয়ে প্যারেডে অংশ নেন। ছবিগুলো তুলেছেন রাশিয়ান ফটোগ্রাফার আলেক্সান্দার পেত্রোসায়ান।
ছবির যোদ্ধা বেঁচে আছেন কিনা জানা নেই আমাদের। জন্মভূমি রক্ষার্থে আত্মত্যাগী যোদ্ধা'দের রাশিয়া সম্মানিত করে এসেছে।
আমরা কি আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া মাটির মানুষগুলোকে সম্মান করবো নিজ ক্ষমতা অনুসারে। আমরা কি তাঁদের কথা স্মরণে রাখবো ?
ছবিগুলো তুলে ধরবার পেছনে একটি অনিবার্য আশংকাই কাজ করেছে তা হল, আগামী কিছু বছরের মাঝে আমরা জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের হারাবো চিরতরে। ইতোমধ্যেই পরমের মাঝে বিলীন হয়েছেন অগণিত মুক্তিযোদ্ধাদের বড় অংশটি।
আমরা কি প্রস্তুত তাঁদের ইতিহাস সংরক্ষণে? আমরা কি সেই দায়িত্ব পালন করছি ?
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:০৪