somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Messages(1)

২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




শেষ পর্ব


[দ্বিতীয় পর্বের লিংক→ Click This Link

[প্রথম পর্বের লিংক→ Click This Link



গোসল করে চুল শুকানো নিয়ে ব্যস্ত নওশীন। রোদের ঝলমলে আলোয় গিয়ে কিছুক্ষণ বসল সে। আজ অপরিচিতর সাথে দেখা হতে যাচ্ছে। ভাবতেই কেমন যেন অদ্ভুত অনুভূতি অনুভব হচ্ছে নওশীনের। চুল ঝেড়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে সুন্দর করে সাজিয়ে নিচ্ছে নিজেকে। কাজলটা একটু গাঢ় করে একে নিল। হালকা গোলাপি লিপস্টিক নিয়ে নিলো। নিজেকে নিজের কাছেই পছন্দ হচ্ছে নওশীনের। হালকা ফিটফাট সাজে অপূর্ব সুন্দর লাগছে তাকে।

- আমি বের হয়েছি।

মেসেজটি দিয়ে নওশীন বের হয়ে যায় তার গন্তব্যের উদ্দেশ্য। রিক্সায় যেতে যেতে তার চুলগুলো হাওয়ার সাথে তাল মিলিয়ে ঢেউ তুলে উড়ছে! নির্দিষ্ট সময়ের আধাঘণ্টা আগে সে কলেজ মাঠে পৌছালো। গেট দিয়ে ঢুকতেই কিছুটা ধাক্কা খায় সে! দুরের ছেলেটাকে চেনা চেনা লাগছে খুব। আড়ালে থেকে কাছে গিয়ে দেখলো ছেলেটা সাগর! বেশ পরিপাটি হয়ে এসেছে। হাতে তিনটা গোলাপ ফুল! নওশীন আর সামনে গেল না। আড়ালেই কোনভাবে দেখছে আর বুঝার চেষ্টা করছে সাগর এখানে কেন? দেখছে একা একা কি যেন বিরবির করে বলছে, কেমন যেন অস্থির অস্থির দেখাচ্ছে তাকে! হঠাৎ মোবাইল কেঁপে উঠলো! তাকিয়ে দেখে অপরিচিতর মেসেজ,
- তুমি কোথায়? আমি সাইকেল স্যান্ডের সামনে দারিয়ে আছি।
নওশীন উপর থেকে মেসেজ চেক করলো কিন্তু সিন করলো না। সাইকেল স্ট্যান্ডে কাউকে দেখা যাচ্ছে না! অনেকক্ষণ কেটে গেল কিন্তু সাইকেল স্ট্যান্ডের সামনে কাউকে দেখা যাচ্ছে না! এক পিচ্চিকে ধরে বললো, "সাইকেল স্ট্যান্ডের চারপাশে একটা চক্কর দিয়ে আয় কিন্তু কেউ কিছু জানতে চাইলে কাউকে কিছু বলবি না... ধর, দশ টাকা, চিপস কিনে খাস।।"
পিচ্চিটা চলে গেল, একটু পর ফিরে এল কিন্তু কাউকে খুঁজে পেল না! তাহলে কি অজানা ছেলেটা গেম খেলছে! কিছুক্ষণ পর দেখলো রাহাত, আজাদ আর শাকিল এল! তারা সাগরের কাছে যাচ্ছে? ব্যাপার স্যাপার কিছুই মাথায় ঢুকছে না নওশীনের!


- কি রে হিরো? এখানে কি তোর?
আজাদ এসে বললো!
- আরে তোর হাতে গোলাপ কার জন্য রে? গার্লফ্রেন্ড নাকি?
শাকিলের এমন প্রশ্নে সাগর একটু লজ্জা পেয়ে যায়! একটু মুচকি হাসি দিয়ে বললো, "একজনের সাথে দেখা করতে আসছি, তার জন্য গোলাপ আনলাম.."
শাকিল, আজাদ, রাহাত একে অপরের দিকে তাকালো! রাহাত সাগরের কাধে হাত রেখে বললো,
- আরে মামা তুইও গার্লফ্রেন্ড পাইছোস?
এমন সময় দুরে একটা মেয়েকে দেখলো সাগর! ধীরে ধীরে কাছে আসতে লাগলো সে। বুঝতে পেরেছে এই সেই অপরিচিতা! ছবিতে যেমন দেখেছিল তার চেয়েও বেশি সুন্দর সে। একসময় মেয়েটি সামনে এসে দারালো! সাগর মাথা নিচু করে অল্প অল্প করে দেখছে তাকে! মেয়েটা মুচকি হাসি দিয়ে যাচ্ছে! কেউ কিছু বলছে না! রাহাত বললো,
- মামা তোর গার্লফ্রেন্ড তো সেই দেখতে রে! একপিস!!
- এমন ভাবে বলিস না রাহাত। কথাটা সাগরের একটু লাগলো তাই হালকা মানা করলো!
একটু পর সজীব আসলো,
- কি রে তোরা এখানে?
- তুই কি জানিস এখানে সাগরের গার্লফ্রেন্ড আছে! আজাদ শুরু করল! সাগরের একটু বিরক্তিকর লাগছে।
- আচ্ছা আমি তো এখনও বলি নি যে সে আমার গার্লফ্রেন্ড। উনি শুধু আমার বন্ধু! সাগর পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য বললো।
- বন্ধু!!! চারজনই একসাথে চিৎকার দিয়ে উঠলো!
সজীব মোবাইল বের করলো, কিছুক্ষণ পর সাগরের ফোনে ভাইব্রেটিং হওয়া শুরু করলো! একের পর এক মেসেঞ্জারে মেসেজ আসতে শুরু করল, মোবাইল বের করে দেখে মেসেজগুলো সব অপরিচিতার আইডি থেকে এসেছে!! সাগর কিছুই বুঝতে পারছে না, সজীব মোবাইলের স্ক্রিন সাগরকে দেখিয়ে বললো,
- আজ কয় তারিখ রে সাগর?
- কেন ১লা এপ্রিল..
এরপর সবাই একসাথে বলে উঠলো "এপ্রিল ফুল"!!!!
সাগর বাস্তব জগতে ফিরে এল! এপ্রিল ফুল! সাগর কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকলো। পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে! সজীব এমনটা করতে পারলো তার সাথে!
- আরে ব্যাটা যারে তুই অপরিচিতা নাম দিছোস সেইটা শাকিলের গার্লফ্রেন্ড, নাম নায়মা!! হাসতে হাসতে বললো আজাদ
কেউ তাদের হাসি থামাতে পারছে না! সাগরকে ঘিরে বাকি পাঁচজন হাসছে! সাগর চুপচাপ দারিয়ে আছে। কোনো কথা তার মুখ দিয়ে বের হচ্ছে না!
- আরে তুই এত সুন্দর মাইয়া দেইখ্যা প্রেমে পইরা গেলি!! রাহাত বললো
- আরে আজাদ সেদিন যদি নায়মার ছবি বাদে আফ্রিকার কোনো কালো মেয়ের ছবি দিতিস তাহলে কেস এতদুর আসতো না... বলেই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে সবাই!
- সাগর দোস্ত, তুই বিয়েও করিস কোনো ফেক আইডির সাথে... আজাদ তাচ্ছিলের হাসি হেসে যাচ্ছে! সাগর বুঝতে পেরেছে সেই আইডি থেকে ওরা চারজন চ্যাটিং করতো! এইজন্যেই সেদিন রাহাত বলছিল চ্যালেঞ্জের কি খবর!
- আরে নওশীন আসলো না যে!

সজীবের কথায় সাগর চমকে উঠলো! নওশীনও কি জড়িত এদের সাথে! এজন্যেই কি বারবার আমার কাছে অপরিচিতার ছবি চাইলো! মনে মনে ভাবলো সে!
- নওশীন কি জানে এই সম্পর্কে?
- আরে জানে মানে, দেখ সাগর আমরা সবাই আছি শুধু নওশীন নাই এখানে, তারমানে যা বোঝার বুঝে নে..
রাহাতের কথা শুনে সাগরের গাল বেয়ে পানি পরতে থাকে! ধীরে ধীরে অঝরে কেঁদে যাচ্ছে সাগর! যে মেয়েটাকে এতটা বিশ্বাস করতো সেও বন্ধুত্বের নামে এমন করে ধোকা দিল!
কেঁদে কেঁদে বললো, "তোরা এমন করতে পারলি আমার সাথে?"
সাগরের সবকিছুতেই ওদের শুধু হাসি আসছে! দাত চেপে কিল কিল করে হাসছে সবাই। সাগরের ইচ্ছা হচ্ছে চিৎকার দিয়ে কাঁদতে! সে সহজ সরল, দেখতে যাই হোক তার মানে এই নয় যে এটা তার প্রাপ্য!
- আচ্ছা বন্ধু সাগর, আমরা আসি, আর এপ্রিল ফুল হোস না আর ছবি দেখে প্রেমে পরিস না রে ফেক আইডি থেকে দুরে থাকিস... একথা বলে শাকিল আর নায়মা হাত ধরে হেটে চলে গেল। হাসতে হাসতে বললো,
- এপিক এপ্রিল ফুল বানাইছিস রে আজাদ! এত বুদ্ধি নিয়ে ঘুমাস কেমনে তুই?


সন্ধ্যার কাছাকাছি সময়, শাকিল জোরে বললো,
- রাহাত তোর না সাইকেল স্ট্যান্ডে যাওয়ার কথা?
একথা শুনে অবাক হয়ে যায় নওশীন! তারমানে অপরিচিত হল রাহাত! এতক্ষণ সাগরের সাথে ঘটে যাওয়া সকল ঘটনাই দেখলো সে। মাচায় বসে হু হু করে কেঁদে উঠলো সে! এটা সাগরের জন্য নয়, এটা তার বিশ্বাসের জন্য। মানুষ এমনও হতে পারে! নওশীন আজ জানলো। চোখ মুছে সামনে তাকাতেই দেখে সাগরের হাতে যে তিনটা ফুল ছিল সেগুলা ছিড়ে টুকরো টুকরো করে চারপাশে ছড়িয়ে দিচ্ছে। দুজনই কাঁদছে, একই কারণ কিন্তু পাল্লায় মাপলে সাগরের দুঃখটা ভারি হবে! সাগরের সামনে যাবে কিনা ভাবছে সে। সাগরের সাথে যা হয়েছে সেটা খুবই বাজে হয়েছে। এমনটা নওশীন কল্পনা করে নি। সাগরের কাছে যেতেই সাগর বললো,
- আমি যে ফুলগুলো ছিড়ে ফেলে দিলাম সেগুলাকে কি জোড়া দিতে পারবে?
নওশীন বুঝতে পেরেছে সাগর মানসিক ভাবে ভেঙে পরেছে!
- নওশীন, তুই কি জানিস বিশ্বাস আর প্রতারণা কি?
নওশীন কেঁদে যাচ্ছে। কিছু বলছে না!
- তুমি থেকে তুই করে বলছি দেখে অবাক হচ্ছিস? তোকে খুব কাছের ভাবছি আমি।
কাঁদতে কাঁদতে বললো সাগর! আজ যেন চোখের পানি থামছে না সাগরের। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে সে
- কতটা কষ্ট পাইলে একটা ছেলে কাঁদতে পারে বলতে পারবি?
- তুমি এমনভাবে কথা বলছো কেন?
নওশীনও কাঁদছে তবে সাগরের মত কাঁদতে সে পারবে না।
- তুইও ওদের সাথে? সব জানতিস না? তোকে বলি নি কতটা ভালবাসতে শুরু করেছিলাম অপরিচিতাকে, আরে সরি অপরিচিতা না, ফেইক কাল্পনিক মেয়েটাকে?
- আমার কথাটা শোন, আমিও এখানে অপরিচিত একজনের সাথে দেখা করতে এসেছিলাম। কাহিনী ঠিক তোমার মত। কিন্তু...
- কিন্তু আবারও আমিই পরিস্থিতির শিকার!
নওশীন হাতটা বারিয়ে দিল সাগরের দিকে, কিন্তু সাগর হাত না ধরে উঠে আস্তে আস্তে হাটা শুরু করল! কিছুটা গিয়ে আবারও ফিরে আসলো,
- এই ডায়েরিটা নে, গোটা শহরের প্রত্যেকটা দোকান সপ্তাহের পর সপ্তাহ ঘুরে এটা পছন্দ করেছিলাম। এটার কোনো প্রয়োজন নেই আমার। তোর কাছেই রাখ জন্মদিনের উপহার হিসাবে।
নওশীনের হাতে ডায়েরি দিয়ে সাগর আর দারালো না। চোখ মুছতে মুছতে চলে গেল। অনেকেই ঘটনা দেখেছে কিন্তু আমলে নেয় নি।


বাসায় পৌঁছে উভয় প্রান্তের দুইজন বাথরুমে গিয়ে সকল পানির ট্যাপ ছেড়ে দিয়ে নিঃশব্দে কেঁদে যাচ্ছে যাতে শ্বাস নেয়ার শব্দটা বাইরে না যায়। আয়নার সামনে দারিয়ে কেঁদেই যাচ্ছে নওশীন! শেষ কবে এভাবে কেঁদেছে সে নিজেও জানে না। দেখতে দেখতে রাত গভীর হল, আর্তনাদের শব্দ একটু নীরব হয়ে গেছে কিন্তু তার প্রমাণ বালিশের কভারে রয়ে গেছে। কেঁদে বালিশ ভিজিয়ে ফেলেছে নওশীন অথচ এমনভাবে অভিনয় করছে যেন কিছুই হয় নি! অপরিচিত নামের নীল অক্ষরের আইডি এখন কাল হয়ে আছে! সারাজীবনই থাকবে, যে ঘৃণা মনের মধ্যে জন্ম নিয়েছে সেটা কোনো কিছুতেই মিটবে না। সে যে মনে মনে ভালবেসেছিল সেই অপরিচিত মুখকে।


দুইদিন পর,

কলেজের গেটে ঢুকতেই সাগর বুঝতে পারল তার ঘটনা সবাই টের পেয়েছে! আশেপাশে কানাকানি লেগে গেছে! জুনিয়র মেয়েগুলাও সাগরের দিকে তাকিয়ে মুখ টিপে টিপে হাসছে! যন্ত্রণায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে তার কিন্তু মৃত্যু এতটা সহজ না। ক্লাসরুমে ঢুকতেই শাকিল বললো,
- আরে এই যে রোমিও চলে এসেছে। দোস্ত, তুই আমার পাশে বস..
এবারও একগাল হাসি দিয়ে বললো! আজাদ পাশেই ছিল, একটা হাই বেঞ্চে বসে চুয়িংগাম চাবাচ্ছে। চুয়িংগাম ফেলে দিয়ে মোবাইল বের করে সাগরের সামনে রেখে বললো,
- দেখতো সাগর, আরও এডিট বা এনিমেশন দিতে হবে না কিনা?

সবাই সাগরেরকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরে দেখছে ভিডিওটা। সাগর একটু তাকিয়ে দেখলো এটা গতদিনের করা ভিডিও!! ভিডিওর মাঝে মাঝে সবাই একসাথে চিৎকার দিয়ে উঠে! প্রত্যেকটা চিৎকার সাগরের মাথায় প্রচুর চাপ দেয়। চোখজোড়া আবারও ভারি হয়ে লাল হয়ে যায় তার। কিছুক্ষণ পর আর ক্লাসে থাকতে না পেরে ব্যাগ নিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দ্রুত ক্লাস থেকে বের হয়ে যায় সাগর। এমন সময় ক্লাসে ঢুকতে নওশীন সাগরের সাথে ধাক্কা লাগে! কার সাথে ধাক্কা লেগেছে এবং সে ব্যথা পেল কিনা সেটা দেখার তোয়াক্কা না করেই দ্রুত হাটা দিল সাগর! নওশীন দুইবার ডাকলেও সাগর থামে না, সোজা চলে গেল।
ক্লাসে ঢুকেই শোনা যায় সবার মুখে সাগর আর তার অপরিচিতার গল্প, এটা অন্যকেউ বলে বেড়াচ্ছে না, এটা বলছে আজাদ আর রাহাত! পুরো ক্লাস সাগরকে নিয়ে তামাশা করছে যাচ্ছে। এরমূলে আছে ওরা চারজন। নওশীন ব্যাগ রেখে আজাদের দিকে গেল। রাহাত বললো,

- কি রে কিছু বলবি?

কথাটা বলার সাথে সাথে গায়ের সমস্ত শক্তি নিয়ে ডানহাত দিয়ে সজোরে চড় বসিয়ে দিল রাহাতের গালে! শব্দে পুরো ক্লাস ঠাণ্ডা হয়ে গেল!
- লজ্জা করে না ফ্রেন্ড হয়ে ফ্রেন্ডের অনুভূতিতে এত বড় আঘাত করতে?
শাকিলের দিকে তাকিয়ে বললো, "কেমন প্রেম করিস, শুধু টাইম পাস আর ডেটিং? বিবেকে একটুও নাড়া দিল না যে নিজের গার্লফ্রেন্ডকে অন্য একটা ছেলের সাথে লাগিয়ে দিয়ে চ্যালেঞ্জ করিস?"

পুরো ক্লাস নওশীনের দিকে তাকিয়ে আছে। বাহিরে মেঘের গর্জনের সাথে সাথে নওশীনও একটু একটু গর্জে উঠা শুরু করলো।
- আমি না হয় বলতে পারবো আমার সাথে তুই চ্যাটিং করছিস কিন্তু সাগর কি বলবে? কোন মেয়ে এমনটা করলে মানা যায় বা অপরিচিত কোন ছেলে করলে মানা যায় কিন্তু তোরা ফ্রেন্ড, তোরা ক্লাসমেট, তোরা কেন এমন করবি? বিবেক বুদ্ধি এতটা লোপ পায় কিভাবে তোদের? পুরো ক্লাস মিলে ওর সাথে তামাশা করিস তোরা নাকি সে সহজ সরল, কোনো প্রতিবাদ করে না দেখে তোরা সাহস বেশি পাইছিস?
রাহাতের দিকে কথাগুলো ছুড়ে দেয় সে, কেউ কিছু বলছে না, নওশীনের কথা শুনে যাচ্ছে সবাই। একটু থেমে আবার নওশীন বললো,
- এখনও কি সেই বয়স আছে যে কিছু হইলেই আব্বু আম্মু বা স্যার মেডাম কে ডেকে এনে বিচার করাতে হবে?
একটু পর আবার রাহাতকে বললো, "তোকে চড় মারার একটা স্পেশাল কারণ আছে। সেটা হল তোর মত ছেলের সাথে মেসেজিং করতে গিয়ে বড় ভাইয়ের সাথে টেবিলে বসে খাওয়া হয় নি, অবাক লাগে যে ভাই আমাকে ছাড়া কোনদিন দুপুরে খেতে বসে নি তাকে আমি কতদিন না খাইয়ে অফিসে পাঠাইছি!!"

আর কিছু বললো না সে। ক্লাস না করে বের হয়ে গেল। বাইরে দারিয়ে বৃষ্টি দেখছে। অনেকটা হিংস্র হয়ে উঠেছে আজ। মেঘের গর্জন আজ তার মনে ভয় জন্মাতে পারছে না! বারান্দায় দারিয়ে এদিক ওদিক যতটুকু চোখ যায় সাগরকে খোঁজার চেষ্টা করছে।

সেদিন বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে বাসায় গেল সাগর। রুমের দরজা লাগিয়ে হাউ মাউ করে কেঁদে ফেললো সাগর! কমান্ডর সাহেব বাসায় নেই। ফ্লোরে শুয়ে কেঁদেই যাচ্ছে সে। এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না। ফেসবুক নামের শব্দটা এখন তার কাছে কাটার মত মনে হয়। চিন্তা করছিল আইডি এখন ডিএক্টিভ করে দেবে। চোখ মুছে ফেসবুকে লগইন করে যা দেখলো তাতে হতবাক হয়ে গেল সে! সেদিনের ভিডিও একটা ট্রল পেজে আপলোড হয়েছে কিন্তু কার্টেসি দেয়া নেই। গতরাতে শেয়ার করেছে আজাদ! পুরো ভিডিওটা দেখে সে নিশ্চিত হল এটা সেদিনের করা ভিডিও এবং তারই চেহারা আছে!


মোবাইলটা হাতে নিয়ে বারবার সাগরের নাম্বার তুলছে নওশীন কিন্তু কল করার সাহস হচ্ছে না। কারণ ভুল বোঝাবুঝি! প্রথমে নওশীন ভুল বুঝেছিল এখন সাগর ভুল বুঝেছে। সান্ত্বনা কিভাবে দেবে বুঝতে পারছে না। এদিকে সপ্তাহের বেশি হয়ে যাচ্ছে সাগর কলেজে যায় নি। কারও কাছে কোনো খবর নেই তার। এমন একটা বিষয় স্যার মেডামদের সাথে শেয়ার করা যাচ্ছে না! তবে বেশিদিন ধরে রাখতে পারবে না কেউ, প্রযুক্তির দুনিয়া একপ্রান্তের খবর অন্যপ্রান্তে পৌঁছে যায় সেকেন্ডের মধ্যে। দেখতে দেখতে পুরো কলেজ জেনে গেল ব্যাপারটা। আয়া দারোয়ান থেকে শুরু করে প্রিন্সিপাল পর্যন্ত! শুধু জানলো না কমান্ডর সাহেব!

বিভিন্ন ট্রল পেজে ভিডিওটি তখনও আপলোড চলছে। রাস্তাঘাটে একপ্রকার ফেমাস হয়ে যাচ্ছে সাগর। আসলে ব্যাপারটা খুবই সাধারণ, বন্ধুরা মিলে মজা করেছে কিন্তু মজা মশকরা সীমা পার করে বাধ ভেঙে আরও বহুদুর ছাড়িয়ে গেছে! সময় পার হওয়ার সাথে সাথে পরিবেশও পরিবর্তন হয়ে যায়। পরিবর্তন হয় মন মানসিকতা। পরিস্থিতি কিছুটা বাস্তবতার দিকে যেতে থাকে। আবেগের যেসব রঙিন ভাবনার দেয়াল ছিল সেগুলা ধীরে ধীরে রংচটা মরিচিকার দেয়ালে পরিণত হয়। আঘাত করলেই শুধু ধুলা বের হয়। অতিরিক্ত আঘাতে দেয়াল ভেঙে পরে যায়। কিছু কিছু মুখ বন্ধ হয়েছে কিন্তু নতুন মুখের সামনে পরলে মরিচিকার দেয়ালটা মনে পরে যায়!


সকাল থেকে কমান্ডর সাহেব তার লাইসেন্স করা বন্দুকটা খুঁজছেন কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না। ড্রয়ার, আলমারি, সোকেস খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত হয়ে গেছেন কিন্তু খুঁজে পান নি! ক্যান্টনমেন্টে যেতে হবে তার তবে সেখানে রিভলভারের কোনো কাজ নেই কিন্তু সকালে ওষুধের জন্য ড্রয়ারে খুলে দেখলেন সেখানে সবই আছে কিন্তু রিভলভারটা নেই! বেশ চিন্তায় পরে গেলেন এটা নিয়ে। আর কিছু না ভেবেই ক্যান্টনমেন্টের দিকে রওনা দিলেন কিন্তু মাথায় একটাই চিন্তা রিভলভারটা কোথায়?

সাগর হাটতে হাটতে সেই মাঠেই এল যেখানে সে অপমানিত হয়েছে। রাহাত, সজীব, শাকিল, আজাদ রয়েছে সেখানে। সজীব হালকা দুষ্টুমি করে বললো,
- আরে রোমিও এসে গেছিস বন্ধু!!
এই বলে সাগরের সাথে কোলাকুলি করলো। আজাদ বাইকের উপর বসে আছে। নিচে নামার কথা চিন্তাই করছে না। এমন একটা ভাব করছে যেন পা নামালে তার মান ইজ্জৎ নষ্ট হয়ে যাবে!
- আজাদ, ওরে আমার সামনে সরা, না হলে মার খাবে এখনই! দেখা গেল মরে গেল মার খেয়ে তখন সেই দায়ভার আমরা কেউ নিতে পারবো না..
রাহাত তেজি গলায় চাপ বসিয়ে বললো। আজাদ সরাসরি এসে সাগরের মুখে একটা ঘুষি দিল! আজাদ বললো, "তোরে আজকে মেরেই ফেলবো।"
আজাদ ধাক্কা দিয়ে সাগরকে অন্যদিকে ফেল দিল! সাগর উঠে দারিয়ে বললো,
- কখনও কাউকে মরতে দেখছিস?
রাহাত বললো, "তোকে মেরে দেখতে চাই মৃত মানুষ কিভাবে মরে..!"
- আমার বাচার ইচ্ছা ছিল কিন্তু তোরা বাঁচতে দিলি না। বিশ্বাস নষ্ট করছিস, অনুভূতিগুলোকে মেরে ফেলছিস, তোদের কারণে ফেসবুক, ইউটিউবে আমার ট্রল হওয়া ভিডিওটা ছরিয়ে গেছে। এমন কাজ করলি যার সমাধান আব্বু আম্মু, স্যার ম্যাডাম বা তোরাও কোনো সমাধান দিতে পারবি না.... আমি কাউকে বলতে পারি না আমার বন্ধু বান্ধব আমার সাথে এমনটা করেছে!!
এতটুকু বলেই একটা রিভলভার বের করে নিজের মাথায় নিজেই গুলি চালালো! গুলির শব্দে চারপাশের মানুষ ঠায় দারিয়ে গেল। শুধু দেখলো একটা ছেলে মাটিতে লুটিয়ে পরলো! সাগরের চারপাশে রক্তের ছিটেফোঁটা লেগে আছে। একপাশ দিয়ে রক্ত বের হয়ে গড়িয়ে পরলো ঘাসের উপর! সবাই এসে জড় হল সাগরের পাশে। একটু আগে সে সাগর নামে পরিচিত ছিল কিন্তু এখন সে সাগর না, সে এখন লাশ! সজীব, রাহাত, শাকিল এবং আজাদ চোখ বড় বড় করে দেখছে কি হল কিছুক্ষণ আগে। যে ছেলেটাকে কিছুক্ষণ আগে মারধর করার চিন্তা করছিল সে এখন পরে আছে মাঠে, ইচ্ছা করেও হাত পা চালাতে পারছে না কেউই! সজীব কিছুক্ষণ দারিয়ে ছিল কিন্তু মৃত্যুর দৃশ্য দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে! সজীবকে রেখেই রাহাত, শাকিল, আজাদ সেখান থেকে বের হয়ে গেল। আশেপাশের লোকজন সজীবের মুখে পানি ছিটিয়ে দিল। এতকিছু হলে গেল কিন্তু বাকিরা কেউ কিছু জানলো না!


সাগরের লাশের পাশে কমান্ডর সাহেব বসে আছেন। শোকে তিনি কিছু বলতে পারছেন না! তিনি বুঝতে পেরেছেন রিভলভারটা সাগর নিয়েছিল! সাগরের একটি হাত ধরে নিজের গালের কাছে নিয়ে চেপে ধরলেন, নিজের হাতটা সাগরের কপালে রাখলেন। অনিচ্ছা স্বত্তেও হঠাৎ কেঁদে উঠে বললেন, "বাপরে, এমন কি হয়েছিল যে তোর আত্মহত্যা করা লাগলো! একবার আমাকে বললেও পারতি। দুনিয়ার কেউ তোর কথা না শুনলেও আমি শুনতাম..."
নিকট আত্মীয় যারা ছিলেন তারা কেউই সান্ত্বনা দেয়ার মত কিছুই খুঁজে পাচ্ছেন না! নওশীন একটু দুরেই দারিয়ে ছিল। সাগরের মুখটা দেখে কিছুক্ষণ চুপ থাকলো। শেষ পর্যন্ত সেও কেঁদে উঠলো সবার আড়ালে! তার উচিৎ ছিল সেদিন সাগরকে কল করে একটু সান্ত্বনা দেয়া, অভয় দেয়া! একটু সান্ত্বনা পেলে হয়তো আজ সাগর বেচে থাকতো। সাগরের মুখটা আজ যেমন মায়াবী দেখাচ্ছে, সেদিনও তেমনি মায়াবী আর নিরিহ ছিল যেটা নওশীন বুঝতে না পেরে ভুল বুঝেছিল! ভিতর থেকে শব্দ আসলো, "বাপ আমার, ফিরে আয় আমার কাছে...." কমান্ডর সাহেবের আর্তনাদ এবং মুমূর্ষু চিৎকার! সজীব সাহস করে সাগরের বাসায় এল কিন্তু সাগরের মুখ দেখার সাহস হচ্ছে না! বিবেক বড়ই অদ্ভুত, কর্মের পূর্বে ভাবলে এমনটা আজ হতো না! সজীব চুপচাপ বের হয়ে যাবে এমন সময় নওশীন এর সাথে দেখা হয়ে যায়। সজীব বললো, "এমনটা হবে বুঝতে পারি নি। সেদিন আজাদ, রাহাত বলছিল মৃত মানুষ দেখবে! এর কিছুক্ষণ পরেই সাগর রিভলভার বের করে গুলি করে নিজের মাথায়। নিথর দেহটা দারানোর শক্তি না পেয়ে মাটিতে পরে গেল! এরপর আমিও সবকিছু ঝাপসা দেখলাম, তারপর কিছু মনে নাই!" সজীব আবারও বললো,
- সেই দৃশ্য চোখে এখনও ভাসছে, কতকাল ভেসে বেড়াবে জানি না।।
- বাকি তিনজন কোথায়?
- জানি না, এখনও যোগাযোগ হয় নি, মোবাইল বন্ধ, বাসায় নাই কেউ...


সাগরের জানাজা পড়ানো হয়েছে ওর গ্রামের বাড়িতে। জানাজার নামাজে সাগরের বন্ধুদের মধ্যে শুধু সজীব উপস্থিত ছিল। চারজনের মধ্যে সজীব বেশি কষ্ট পেয়েছে। উপলব্ধি করেছে এমনটা করা একদমই ঠিক হয় নি। কবর দেয়ার সময় ডানহাতে মাটি নিয়ে মুষ্টিবদ্ধ করে কেঁদে মনে মনে বললো, "মাফ করে দিস দোস্ত..." কমান্ডর সাহেবকে দেখলো একনজরে কবরের দিকে তাকিয়ে আছে! কবরস্থান থেকে বের হয়ে কমান্ডর সাহেব সজীবকে বললেন,
- তুমি কি সাগরের সবচেয়ে কাছের বন্ধু ছিলে? কাউকে দেখলাম না ওর জানাজায় শুধু তুমি এলে!"
- বন্ধু ছিলাম তবে প্রকৃত নয়। অনেকটা দুঃখ নিয়ে কথাটা বললো।
- আমি ঠিক বুঝলাম না! কমান্ডর সাহেবের উত্তর
- সাগর আপনাকে কিছু বলে নি? কলেজ সম্পর্কে?
- কলেজ সম্পর্কে কিছুই তো বলে নি! কমান্ডর সাহেব অবাক হয়ে যান!
সজীব কমান্ডর সাহেবকে সবকিছু বলতে চাইলেও কিছুই বলতে পারলো না। কোনরকম তালবাহানা করে সেখান থেকে বের হয়ে গেল সে।


কলেজে ক্লাস হচ্ছে। চারটা সিট ফাকা। রাহাত, শাকিল, আজাদ এবং সাগরের সিট ফাঁকা। বাকি তিনটা সিট যেকোনো সময় পূর্ণ হবে কিন্তু সাগরের সিটটা পূর্ণ হবে না। সিট পূর্ণ হবে তবে এই ব্যাচে না। কালক্রমে সবাই ভুলে যাবে সাগর নামে একটি ছেলে ছিল। এপ্রিল ফুল এবং বিভিন্ন ভাবে বাজে আচরণের জন্য সে আত্মহত্যা করেছে। আত্মহত্যা কোনো সমাধানের পথ না। বন্ধুরা বন্ধুরা মজা ঠাট্টা করবে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার কিন্তু কেউ এটা সহ্য করতে পারে কেউ পারে না! সবাই সবকিছু সহ্য করতে পারে না। কমান্ডর সাহেব ছেলের রুমের দরজার সামনে দাড়ালেন। তিনি মনে করছেন ছেলে একটু পরেই কলেজ থেকে আসবে! রাত হলেই বাপ ছেলে একসাথে খেতে বসবে। সাগর যা যা খেতে পছন্দ করতো সব রান্না করতেন। একসাথে বসে কত গল্পই না করতেন ছেলের সাথে। আলনায় রাখা সাগরের কাপড়গুলো বের করে বিছানায় রাখলেন। একটা একটা করে গুছানো শুরু করলেন। হঠাৎ করেই কাপড়গুলো জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠলেন তিনি!! বাচ্চাদের মত কাঁদছেন, কান্না থামার নাম নেই!
"বাপরে, দুইদিন সাথে থাকার জন্য বুঝি আসতে বললি এই শহরে, তোর মাও চলে গেছে বহু বছর আগে, তুইও চলে গেলি!! কত যত্নে বড় করছি আর তুই নিজের বাপকে বুঝলি না... বুকের উপর ঘুম পারিয়েছি তোকে, নিজ হাতে তোকে খাওয়াইছি আর তুই কি করলি রে..." এগুলো কিছুই বলতে চাচ্ছেন না তিনি। কিন্তু কষ্ট এমন জিনিস যা না চাইতেও কথা বের করেই ছাড়ে।। বড্ড একা হয়ে গেছেন তিনি। টেবিলে রাখা সাগরের মোবাইলের দিকে তাকালেন। এই নাম্বার থেকে আর কল আসবে না! আব্বা বলে ডাকবে না কেউ! ওষুধ গুলো টেবিলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কেউ সেই মায়া নিয়ে বলবে না "ঠিকমত ওষুধ খেয়ে নিও!!" এই সুন্দর পৃথিবী এখন তার কাছে বিষাদময় হয়ে গেছে। থাকবেন না এই শহরে, ছোট ভাইকে কল দিয়ে বললেন জিনিসপত্র সব নিয়ে গ্রামে চলে যাবেন।
পরেরদিন, ট্রাকে জিনিসপত্র তুলে রওনা হলেন নিজ গ্রামের উদ্দেশ্য। সবকিছুই আছে তার পাশে শুধু সাগর নেই! এই ভেবে আবারও কেঁদে উঠলেন তিনি। ধীরে ধীরে ক্যান্টনমেন্ট পার করলেন, পার হল সাগরের কলেজও! শহরতলী ছেড়ে ট্রাক চলছে মহাসড়কে। যাত্রাটা মনে হচ্ছে শেষ হবে না, তবে সব শেষ হলেও শেষ হবে সাগরের স্মৃতিগুলো।।


লেখা: Dorponer Protibimbo
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩১
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×