somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

# # মালয়েশিয়ায় ৭ দিন # # ২য় পর্ব

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


হোটেলের লবিতে অপেক্ষা করাটা বিপদ জনক তাই তাড়াতাড়ি রুমের চাবি হাতে নিয়ে দে ছুট রুমের দিকে । এগারো তলায় রুম পেলাম আমরা ।গ্রুপের বাকি সবাই পাশাপাশি রুমে । মনে হচ্ছে বাংলাদেশের ই কোনো হোটেলে সবাই উঠেছি । হোটেল রুমে ঢুকেই মন ভালো হয়ে গেল । বিশাল রুম , টিভি , টেলিফোন ,ফ্রিজ, লকার , ওয়েল কাম কফি উইথ ওয়াটার কেটল । সামনের ভিউটা অসাধারন । পুরোটা গ্লাস কোনো ওয়াল নেই । পর্দা সরাতেই মালয়েশিয়ার ব্যাস্ত শহরের খানিকটা দেখা গেল । দুরে দেখা যাচ্ছে পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার সগর্বে মাথা তুলে দাড়িয়ে আছে ।
হোটেল রেডিয়াস ইন্টারন্যাশনাল


নিচে তাকাতেই দেখি সুইমিং পুল ! হোটেলের ছয় তলার ছাদের উপর । পুলের চারদিকে নানান রকম গাছ গাছালি দিয়ে সাজানো । এত বড় বড় গাছ যে ভাবতে অবাক লাগে ছাদের উপর কিভাবে এগুলো করা সম্ভব !

আমরা ফ্রেশ হয়ে নিচে এসে দেখি বুফে ব্রেকফাস্ট টাইম শেষ । কি আফসোস !!
আগে জানলে সবাই খেয়ে দেয়ে তারপর ফ্রেশ হইতে যাইতো ।;);)
রুম বুকিং এর সাথে ব্রেকফাস্ট ফ্রি তো তাই ।:P:P:P:P:P
কি আর করা আসে পাশে কি আছে তাই খুজতে বের হলাম । বাংগালী হোটেল চোখে পড়লো না । মালয় হোটেলে গেলে কি যে খাইতে দিবো ভরসা পাইলাম না । তাই একটা ইন্ডিয়ান হোটেলে ঢুকে পড়লাম । বিরিয়ানী দেখে নিলাম কিন্তু এমন খরখরে যে , গলা দিয়ে কষ্ট করে নামাতে হলো ।চাটনি আর বিফ রেজালা থাকায় রক্ষা ।
কাল সারাদিন কুয়ালালামপুর সিটি ট্যুর । আজ আমরা নিজেরাই বুকিত বিনতাং এলাকাটা হেটে ঘুরে দেখে নিলাম । মানি একচেন্জ, সিম কাড মোবাইলের দোকান , সুপার শপ , মার্কেট সবই হাটার দুরত্বে । আমার বাচ্চারা সবচেয়ে খুশি হয়েছিল হোটেল থেকে খুব কাছে কেএফসি দেখে ।বলে কিনা আমরা একা একাই কেএফসি থেকে খেয়ে যাবো । বেশি করে রিংগিত দিও


বুকিত বিনতাং
সন্ধ্যায় বুকিত বিনতাং এর রোড এ যেন ঈদের আমেজ । আমাদের দেশে চটপটির দোকান ঘিরে যেমন মেয়েদের ভিড় থাকে তেমন সন্ধ্যার পর ঐ রোডে নানান রকমের মালয় , চাইনিজ , থাই , খাবারের দোকান ও লোকজনের ভিড় । রাস্তার দুপাশে চেয়ার টেবিল বসানো । দোকানের লোকজন রাস্তায় দাড়িয়ে মেনু বই খুলে খাবারের ছবি দেখিয়ে মনোযোগ আকর্ষনের চেষ্ঠা করছে ।


বেশি বিক্রি হয় স্যুপ , নুডুলস, সী ফুড , গ্রীলড ও কাঠিতে গাথা ফিংগার ফুড জাতিয় খাবার । আমরা মালয় স্যুপ চেখে দেখলেও বাচ্চারা কেএফসি থেকে চিকেন ফ্রাই ও ডোনাট নিয়ে হোটেলে ফিরলো ।


পরদিন সকাল সকাল সবাই রেডি । আজকে তো আর বুফে ব্রেকফাস্ট মিস হতে দেয়া যাবে না । :P:P:P:P:P:P
পরি মরি করে সবাই টেবিল দখলকরে বসে পরেছে । আমি এক কোনায় দাড়িয়ে আমার সাহেব বাবুটির জন্য অপেক্ষা করছি । উনি বরাবরই রেডি হতে একটু বেশি সময় নেন । ভাবলাম ওর অপেক্ষায় থাকলে আজ না খেয়েই হোটেল থেকে বেরুতে হবে ।গুনে দেখলাম সকালের নাস্তায় ৪০ রকমের খাবার সাজানো আছে !!! আমার গবেট দুইটা দুধ আর কর্নফ্লেস্ক খাবে । এত করে বললাম এগুলা তো বাড়িতে প্রায়ই খাও । এখানে আনকমন কিছু খাও ।
ফাজিল গুলা বলে-- আনকমন তুমি খেয়ে দেখ । শামুক ভাজা আর অক্টোপাস কাবাব ।X(


না ঐ রকম কিছু ছিল না । ওদের পরিবেশন স্টাইল চমৎকার । সব উপকরন সাজানো আছে । নিজের পছন্দমতো করে নুডুলস, স্যুপ , স্যান্ডউইচ বানিয়ে নেয়া যায় নিজেই ।

বিশ্বে আমরাই হয়তো সবচেয়ে বেশি খাবার অপচয় করি । পাশের টেবিল গুলোতে দেখছিলাম অনেক বেশি খাবার প্লেটে তুলে অল্প খেয়ে বাকিটা ফেলে চলে যাচ্ছিল অনেকেই । ওয়েটার যখন টেবিল পরিস্কার করছিল ওদের চোখে মুখে চরম বিরক্তির ছাপ টা স্পস্ট দেখা যাচ্ছিল ।

বাসে করে শহর ঘুরতে বেরিয়ে পরলাম সবাই । আমাদের গাইড মোহাম্মদ ওসমান । ওর বর্ননা শুনতে শুনতে চারদিক দেখে নিচ্ছিলাম ।প্রথমেই গেলাম টুইন টাওয়ার এর সামনে ।নিজের চোখ কে বিশ্বাস হচ্ছিল না । সত্যিই কি টুইন টাওয়ারের সামনে দাড়িয়ে আছি !!!!
অসাধারন স্থাপত্য শৈলী । লিখে বোঝানো মুশকিল ।



সবাই একে একে ঢুকে গেলাম টুইন টাওয়ারের ভেতরে । নানান রকম ব্রান্ডেড শো রুম । চোখ ধাধানো বিশাল আয়োজন । দুই তিন ফ্লোর ঘুরে আন্ডার পাস দিয়ে পাশের বিল্ডিং এ চলে গেলাম । হাটতে হাটতে খিদে লেগে গেছে । কখন যে দুপুর হয়ে গেছে টের ই পাইনি । ওখানেই লান্চ সেরে আমরা মালয়েশিয়ার স্মৃতি সৌধ দেখার জন্য রওনা হলাম । গাছ পালা ঘেরা বিশাল জায়গা । আমাদের মতো ওদের ও আছে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ইতিহাস । গেট পার হয়ে ভেতরে নীল রং এর বিশাল জলাধার এর মাঝে উচু বেদী । অগনিত শহীদ যোদ্ধা তার উপর বিজয় পতাকা হাতে আরেকজন যোদ্ধা । নিচে ছোট ছোট পানির ফোয়ারা ।



ওখানকার ল্যাম্পপোষ্ট গুলো জবা ফুল আকৃতির । লাল রং এর জবা ফুটে রয়েছে ,মাঝের লম্বা দন্ডের মাথায় লাইট । খেয়াল করে দেখলাম আমাদের গাইড যে শার্ট পরে আছে সেটাও জবা ফুলের প্রিন্ট করা। ওখানে স্যুভেনির কেনার যে দোকান গুলো আছে সেগুলো তেও বেশির ভাগ ডিজাইন টুইন টাওয়ার নয়তো জবা ফুল অথবা ওখানকার পতাকার ছবি দেয়া ।
খালি আমরাই হুজুগে বাংগাল নিজ ঐতিহ্য ভুলে দোকানে গিয়ে খুজি পাকিস্থানী লন, ইন্ডিয়ান ডিজাইনার থ্রি পিস । ক্যাটালগ দেখে মাথাই নষ্ট ।
বাচ্চারা হিন্দিতে কথা বললেই খালি দোষ !!! বাচ্চাদের মায়েরা সারাদিন সিরিয়াল দেখবে , ক্যাটালগ দেখে ড্রেস কিনবে ।হিজাব ও পড়ে লেটেষ্ট ফ্যাশন মনে করে ।
যেন , ঝাঝর কয় সুইরে - তোর পাছায় ফুটা । ( ঝাঝর - মুরি ভাজার কাজে লাগে অসংখ্য ফুটো ওলা পাএ । )
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৭
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×