somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হঠা্ত মনে পড়ে যাওয়া টুকরো স্মৃতি

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একসময় প্রচুর বই পড়া হতো ।এখন সময় ও ব্যস্ততার কারনে পড়া হয়ে উঠে না বলে খুবই কস্ট হয়। কিন্তু আমার বই পড়ার অভ্যাসটা শুরু হয়েছিলো খুব ছোটবেলা খেকে ।সময়টা গত শতকের সত্তুরের শেষ আশির দশকের শুরু ।ক্লাস ফোর কি ফাইভে যখন পড়ি , তখন থেকে পড়ার নেশা শুরু হয়েছিলো ।ক্লাসের পড়া ফাঁকি দিয়ে গোগ্রাসে গিলে খেতাম শিবরাম চক্রবর্তী,লীলা মজুমদার,আশাপূর্ণা দেবী,বিভুতিভুষন বন্দ্যোপাধ্যায়,সুকুমার রায়, সত্যজিত রায়,হাবীবুর রহমান ,মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন , শাহরিয়ার কবির,জুলেভার্ণ, স্যার আর্থার কোনান ডায়েল,জিম করবেট,ডানিয়েল ডিফো ।
এসময় দেব সাহিত্য কুটিরের কত বার্ষিকী যে পড়েছি ,এখন মনে করাও মুশকিল । এই লেখকদের বই আমাদের চট্টগ্রামের বাসায় কিছু ছিলো, কিছু পাড়াতো চাচা , ফুপিদের সংগ্রহ থেকে এনে পড়া হতো । পাড়াতো চাচারা হলেন আমার চাচাদের বন্ধুরা ,ফুপিরা হলেন আমার চার ফুপির বান্ধবীরা । বই দেয়াতে তাদের উতসাহ কম ছিলো না ।
আরো কিছুদিন পর যখন ক্লাস সিক্সে উঠি তখন হাতে চলে আসে বড়দের গল্প ,উপন্যাস । আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, নীহার রঞ্জন , ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় ,শংকর , তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায় ,বনফুল ,সমরেশ বসু , সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়,রাহাত খান,সৈয়দ শামসুল হক । এসব বই পড়তে পড়তে কারো কারো চোখে ইচঁড়েপাঁকা হয়ে উঠেছিলাম ! মনে পড়ে সেভেন এইটে এসে থ্রিলার পড়ায় খুব ঝুঁকে পড়েছিলাম ।সে সময়টা আমরা বাসাবোতে থাকি ।আমার খুব প্রিয় এক বন্ধু ছিলো আহসান হাবীব । সে আমার নেশা ধরিয়ে দেয় রোমেনা আফাজের দস্যু বনহুর , কাজী আনোয়ার হোসেনের কুয়াশা , মাসুদরানা সিরিজের বই পড়তে দিয়ে । বিনিমযে সে আমার বাবার সংগ্রহের ইংরেজী সাহিত্যের প্রচুর বই নিয়ে যেত। ইংরেজী সাহিত্যের নামীদামী লেখকদের সেই বইগুলোর অনেকগুলোই এখনো আমার সংগ্রহে আছে ।
তবে বই পড়ার অভ্যাস সুত্রপাতের আরো আগেই পেপার পড়ার অভ্যাসটা শুরু হয়েছিলো দাদা,বাবা,চাচা ও ফুপিদের দেখে দেখে । আমাদের চট্টগ্রামের বাসাটা ছিলো একান্নবর্তী পরিবারের। জন্মের পর থেকেই দেখেছি বাসায় নিয়মিত ৪/৫টি পত্রিকা রাখা হতো । এই র্দুমুল্যের বাজারেও যা এখনো অব্যাহত ।ঘুম থেকে উঠে পেতাম স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক আজাদী । দুপুরে পেতাম ঢাকার পত্রিকা দৈনিক ইত্তেফাক, বাংলাদেশ অবজারভার ।এই ৩টি পত্রিকা মুলত: আমার দাদা , বাবা ও চাচাদের পড়ার পর হাতে পেতাম ।ফুপি ও মা-চাচীদের জন্য আসতো সাপ্তাহিক বেগম, সিনে পত্রিকা চিত্রালী , পুবার্র্নী ও বিচিত্রা। এইগুলোর প্রতি তেমন আর্কষন না থাকলেও বিচিত্রার প্রতি ছিলো দুর্বার আর্কষন । কে কার আগে পড়বে এই নিয়ে কতদিন ফুপিদের সাথে কাড়াকাড়ি করতে গিয়ে ম্যাগাজিনটাই ছিঁড়ে গেছে । কি মধুর না সময়গুলো গেছে ।
তবে মধ্য আশির দশকে এসে আমার পড়ার রুচিটাই পরিবর্তন করে দেয় ছড়াকার টিপু কিবরিয়া । সে সময়টাতে বাংলাদেশে ফুটবল খেলা ছিলো খুবই জনপ্রিয় । আমরা দুজনেই আবাহনীর ঘোর সমর্থক ছিলাম।আবাহনীর খেলা থাকলে ঝড় বৃস্টি আমাদের আটকে রাখতে পারতো না, ঢাকা স্টেডিয়ামের পশ্চিম গ্যালারীর উপরের দিকে নির্দিস্টি একটি স্থান ছিলো আমাদের দখলে।সে সময় আবাহনী-মোহামেডানের খেলা মানেই সারাদেশের মানুষ দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়তো ।টানটান উত্তেজনা বিরাজ করতো খেলার ২/ ৩দিন আগে থেকে । খেলা দেখতে দেখতে টিপুভাই আমাকে কিশোর বাংলা , নবারুন , শিশু, আনন্দমেলার বিভিন্ন সংখ্যা পড়ার জন্য দিতেন । এইভাবে কখন যেন শিশুসাহিত্যের প্রতি আবারো দুর্বল হযে পড়ি । ওর্য়াল্ড ক্লাসিক পড়ায় উনি আমাকে অনুপ্রানিত করেন ।
এখন সময় পাল্টেছে । ব্যস্ততা বেড়েছে। সারা দিনের অবসরের বিরাট অংশ কেড়ে নিয়েছে র্ভাচুয়াল মিডিয়া। ফেসবুক, টুইটারের কারনে সময় কখন ফুরিয়ে যায় । বই পড়া আর হয়ে উঠে না । দিন দিন আক্ষেপই বাড়ছে ।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৫:৩০
৪টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×