somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘরেফেরা মানুষের গল্প- ১

২৭ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বহু বছর পর আবার নিয়ম মেনে বাড়ি ফিরছি, সামনে ঈদ! স্বজনদের সাথে ঈদ করার জন্য সবাই বাড়ি ফিরছে, চোখে মুখে খেলা করছে অন্যরকম দ্যুতি!
তবু ভাবছিলাম কী সেই অমোঘ টান যার জন্য মানুষ শত কষ্ট স্বীকার করে ঘরে ফিরছে? বাসে,লঞ্চে,ট্রেনে কোথাও পা ফেলবার উপায় নেই তবুও কারো মাঝে এতটুকু বিরক্তি নেই! সবাই নিজে এবং চেনা অচেনা অন্যদের সাথে নিয়ে ফিরছে আপনার নিবাসে!
পুরোটা পথ ভেবেছি কি সেই অলীক বস্তু যার জন্য মানুষ নিজের জীবন তুচ্ছ করে হলেও ঘরে ফিরতে চাইছে....
ফিরছিলাম খুব কাছের এক বড় ভাইয়ের সাথে, যার সাথে বহু বছর পর এভাবে দেখা হলো; গল্প- কথায় বুঝতেই পারিনি কখন যে অপেক্ষার দীর্ঘ রাত অবুঝ বালিকার মতো ছোট হয়ে এলো!
বরিশালে নামার কথা থাকলেও প্রায় মধ্যরাত ছিলো বলে ঝালকাঠিতে নামলাম। এই সেই শহর যেখানে আমার কৈশোর কেটেছে। আমার চিন্তার সাধারন জগতে টেনে দিয়েছে অগণিত সুক্ষ্ম রেখা! লঞ্চঘাট থেকে সোজা বরিশালের বাসস্ট্যান্ডের দিকে যেতে যেতে রিক্সাওয়ালা মুহুর্তে আমাকে নিয়ে গেলো স্মৃতির শহরে, যেখানে আমি দেখতে পাচ্ছি ১৪-১৫ বছরের এক কিশোর তার সাইকেলে করে শহরের এই গলি থেকে ঐ গলিতে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে! যে কিনা দেখতে অবিলক আমারই মত!!
কিছুটা মোহাচ্ছন্ন হয়ে রিক্সায় বসে ছিলাম,জেগে উঠলাম আমার স্কুল,প্রিয়স্কুলটি দেখে...মুহুর্তেই ১৯৯৬,৯৭...২০১৪ মিলে মিশে একাকার হয়ে গেল। মনে হল এই শহেরর প্রত্যকটি মহাসড়ক, সড়ক, গলি আমার বড্ড চেনা! ধূলো-মাটি, কাদা- জল আমার বড় আপনার, এমনকি রাস্তার ভাঙা ল্যাম্পপোস্টটিও আমার বহুদিনের চেনা বন্ধু স্বজন!
যে শহরের সাথে ২০০০ সালের পর আমার তেমন কোন যোগাযোগ নেই, পুরনো বন্ধুরাও সবাই এখন দেশ- মহাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অথচ সেই ধূলিমাখা শহরটি ঘুমজড়ানো চোখে আমাকে কত সহজে আপন করে নিলো!!
মেনে নিলাম আজ থেকে বহু বছর পরেও আমাকে যদি এই শহরের কেউ না চিনতেও পারে তবু আমার সন্তানকে নিয়ে আমি সেখানে যাব আর সুগন্ধা নদীর তীরে দাঁড়িয়ে বলবো এই সেই শহর যেখানে তোমার বাবা থাকতো! কেন জানি মনে হচ্ছিল আমি আসলে পাশ্চাত্য কিংবা প্রাচ্যের অন্য কোন শহর নয় বাংলাদেশের এই ক্ষুদ্র মফস্বল শহরটিকে বিলং করি।
সারা রাত যে প্রশ্নটি আমাকে খোঁচাচ্ছিল- কেন মানুষ এভাবে সবকিছু তুচ্ছ করে ঘরে ফিরছে; তার জবাব যে এভাবে মিলে যাবে তা ভাবতেই পারিনি!!
ততক্ষণে হালকা বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে, আমি ভাবছি এই শহর বুঝি এভাবেই আমাকে অভিবাদন জানাচ্ছে- মনে বাজতে থাকলো রিক্সা কেন আস্তে চলে না!!
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিরিতের সংস্কৃতিওয়ালা তুমি মুলা’র দিনে আইলা না

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৬


---- আমাদের দেশে ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সমুন্নয়ন তলানিতে। তেমন কোন সংস্কৃতিবান নেই, শিরদাঁড়া সোজা তেমন মানুষ নেই। সংস্কৃতির বড় দান হলো ভয়শূন্য ও বিশুদ্ধ আত্মা। যিনি মানবের স্খলনে, যেকোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×