ওভাবেই চেয়ে আছি সেই অচেনা পথে।ঘোর আমাবস্যায় যদি বিরহের অংকুর দৃশ্যমান হয় আরও একবার কখনও সেই প্রত্যাশায়।অপেক্ষার রুদ্রনীল যাতনা বিক্ষিপ্ত জানি কিন্তু বিবর্ণ নয় এটুকু নিশ্চিত।হয়তো কবিতাগুলো নৃশংস বেখেয়ালিপনায়,একে একে বিমোহিত স্বত্বাগুলোকে হত্যা করে আবেগের আকস্মিকতায়, ঠিক একই সারল্যে প্রানবন্ত করে অন্য পারে বয়ে যাওয়া সুশীতল শ্রাবণ সন্ধ্যাগুলিকে।চিনচিনে ব্যাথা নিয়ে কাব্যগ্রন্থ রচনা করা যায় কিন্তু মেঘ মাদলের বিন্দুসত্তাকে বারিধারায় ঝরানো যায়না কখনও। তোমার আগ্রাসন আর আমার তিরোধান এক অমীমাংসিত অনুকাব্য, যার একীভূত হওয়ার ক্ষিপ্রতায় এখনও সংঘবদ্ধ আমার একেকটি ইচ্ছে কোষ। রাতের সাথে কোনও বিরোধ নেই আমার, নেই একাকিত্তেও।তবু কেন বিষণ্ণ বাতাস বিরতিহীনভাবে উষ্ণ করে যায় আমার অন্তরাত্মা?বলতে পারো জলহীন ফনিমনশা কেন কাঁটার প্রাদুর্ভাব উপেক্ষা করে পদ্মপুকুরের টলমলে জলকে ওষ্ঠাগত করতে চায়?কারন সে তৃষ্ণার্ত, আজন্মকালের শুষ্কতা সে বুকে ধারন করে আছে। আজ তুমি উন্মত্ত, তোমার অঋণী চোখ ভাঙ্গা পথের মোড় পেরিয়ে অর্বাচীন কৃষ্ণচূড়ার ছায়ায় চোখ পাতে।একটাই তো স্মৃতিচিহ্ন, যেখান থেকে টুপটুপ ঝরে পড়তো অনাগত বসন্তের মন জুড়ানো সব স্বপ্নকাথা।পথের ধারের চোরা কাঁটায় যতই অসসস্থির কষ্টরেনু জমে থাক না কেন, তোমার শাড়ীর আঁচলের আলিঙ্গন তাকে মুগ্ধতায় বিদীর্ণ করেছে অগুন্তি বিকেল।এখনও বিকেল আসে, কিন্তু অঁজিষ্ণু দুপুরগুলি তাকে অবেলায় পুড়িয়ে মারে ধ্যানমগ্ন অতীতের সন্যাসী হয়ে।এখন আর উপাসনায় কাজ হয়না, অনুযোগের অন্তবিন্দু এতটাই উচ্চতায় যে, মেঘও তার বিমর্ষতাকে ছুয়ে যায় অনায়াসে।আমি আজও বিমোহিত, তোমার হাতের জংলী ছাপার মেহেদী কারুকাজ এখনও উদ্বেলিত করে আমার অযথা হাঁসফাঁস করা হৃদপিণ্ডকে।দিনরাত অন্তক্ষরন হয় ওখানে, ক্ষতের চিহ্নটি অপ্রকাশিত, তাই সুখ বিয়োজনের প্রেতাত্মার আসা যাওয়া দেখি এপাশ থেকে ওপাশে। সবাই প্রকৃতি ভালবাসে, শুধু আমিই পারলামনা।ওটাই হচ্ছে যত জন্ত্রনা, বিভ্রাট, আর অহমিকার উৎসবিন্দু।সকাল, সন্ধ্যা, মাঝরাত হলো সম্মোহনের সুখের শুরু, এরপর পাহাড়, সমুদ্র, অরন্য জুড়ে থাকে একরাশ মুগ্ধতা। এইসব অনবদ্য সুন্দরের কোল জুড়ে শুরু হয় প্রিয়তির হাত ধরে বহুদুর হেঁটে যাওয়ার লোভ।শুরু হয় অস্থিরতা, শুরু হয় তার চোখের গভীরে ভালবাসার সমুদ্র খোঁজার অদম্য প্রার্থনা।তারপর? তারপর কিছুদিনের মোহগ্রস্থতা, এরপর কোনও এক সুবর্ণ মুহূর্তে বেজে ওঠে বিচ্ছিন্নতার বেসুরো বাদ্যযন্ত্রটি, কখনও সগর্বে জানান দিয়ে, কখনও নিরবে, নিভৃতে একজোড়া মায়াবি চোখের ভালবাসার মাদকতাকে পাশ কাটিয়ে কিংবা মন গড়া কোনও অজানা ছুতোয়।এরপর নিজেকে আবিস্কার করি জনমানবহীন এক শুন্য বিন্দুতে।বছর যায়, মাস যায়, এখনও সেই অচেনা পথে অপেক্ষা করি জোস্নার সুখ জমে থাকা সেই চাঁদের মাঠে আবারও ফিরে যাওয়ার।যেখান থেকে মধ্যরাতের শেষ ট্রেন ছুটে চলে যাবে, যার এক প্রান্তে তুমি আর শেষপ্রান্তে আমি।গন্তব্য একই পথও একই শুধু প্রান্ত আলাদা।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:৪৫