somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটগল্প-বিসর্জন

১৭ ই মে, ২০১৬ রাত ১১:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




রাশেদ মোড়ল তার সামনে রাখা খালি ঝুড়িটা লাথি দিয়ে কিছুটা দূরে ফেললেন। শারীরিক শক্তি খরচ করলে মানুষের রাগ বরাবর কমে তিনিও হয়ত এই প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হাবুলের সামনে দাঁড়িয়ে লুঙ্গিটা একটু তুলে ধড়লেন তারপর দ্বিতীয় লাথিটা দিলেন হাবলুর চোয়াল বরাবর। হাবুল তাতে ব্যাথা পেলেও রাশেদ সাহেবের পা জড়িয়ে ধরল।
-চেয়্যারম্যান সাব আমারে মাইরাল্লেও গরু পাওন যাইব না। হাছাই আমি চুরি করছি না।
হাবুলের সামনে এমনিতেই অনেক ভীড়। এদের মধ্যে চোরকে মারার ব্যাপারে কিছু সেচ্ছাসেবী মোড়ল সাহেবের তৃতীয় লাথি দেবার প্রস্তুতির আগেই এগিয়ে এল। চেয়ারম্যান সাহেব একটু দূরে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ হাবুলের প্রহার পর্ব দেখলেন। তারপর সোনা মিয়ার খোজ করলেন। সোনা মিয়া ভীড় হতে আলাদা দাঁড়িয়ে একমনে ভাবছিল। চেয়ারম্যানের ডাকে বিষন্ন মুখে এগিয়ে এল।
-ডাকছুইন?
-হ। বৈঠকখানায় চল তর লগে কয়ডা কতা কইয়াম।
রাশেদ মোড়লের পিছু পিছু বৈঠকখানায় এসে বসে সোনা মিয়া। তার সামনে ছোট একটি কাপে চা। সে তার মুখের চিবানো পানের অবশিষ্ঠাংশ ফেলে দিয়ে চায়ের কাপে ছোট ছোট চুমুক দিচ্ছে। রাশেদ মোড়ল খুব দ্রুত গতিতে পা নাচাচ্ছে তার কন্ঠেও আক্ষেপ আর অস্থিরতা,
-চেয়ারম্যান বাড়িত্তে গরু চুরি অইলো কত বড় লইজ্জার কতা ক সোনা!
-হ।হেইড্ডাতো শরমের কতাই ।
-তিপ্পান্ন আজার টেহা দিয়া কিনছি।মাইনষেরে না দেহাইতারলে কি লাভ আছে কুন? এইল্লাই বাইরদারে হাবুলরে দিয়ে বাইন্দা রাখছিলাম।আম্মায় কিন্তু কইছিল ভিতর বাড়ির গোয়ালদারে বাইন্দা রাখতাম।আমি হুনছি না। আমার দোষ।
এই একি কথাগুলো সকাল থেকে কম করে হলেও দশবার বলেছে রাশেদ মোড়ল তবু সোনা মিয়া মাথা দোলায়।এবার রাশেদ মোড়ল একটু ঝুকে পড়ে বলে,
-গরুডা ফেরত পাইয়াম তো সোনা? সকাল ত্থেকে সন্ধ্যা অইয়া গেল হাবুলরে মাইর দোর করা অইতাছে, কাম অইছে না। এহন একটাই উফায় আছে।
-কি?
-নান্দাইল থানার যাইয়া একটা জি ডি করবাম। সন্দেহ তালিকায় এক নাম্বারে রাখবাম হাবুলরে আর দুই তিন নম্বরে হারুইন্নাগো বাড়ির দুই তিনডার নাম দিয়া দিয়াম।
-চেয়ারম্যান সাব একটা কতা কই। হাবলু মিয়া এই কাম করছে না। হেরে আমি চিনি। আন্নে হের নাম বাদ দিন যে।
-ছেড়া কিতা কয়? আমি বাদ দিলেওই পুলিশ হেরে ছারতো কেরে? হেই পাহারায় আছিল। নাম না দিলেই সন্দ করব। আর চুরিডাও হের লগে সল্লা কইরাই করছে কেউ।দেহছ না চুরে হেরে কুন ক্ষতি করছে না। তরে যেইড্ডা কইলাম হেইড্ডা কর। এহুনি যা হুন্ডা বাইর কর।
সোনা মিয়া হুন্ডা বের করে আনতে গেলে হাবুলের কাছ দিয়েই যেতে হল।তাকে দেখেই হাবুল হাউ মাউ করে কেঁদে উঠল।
-সোনা আমারে বাছা দোস্ত। তুইতো জানস চুরি কিবায় করে আমি জানি না। তর ভাবি পোয়াতি।হের কসম।
সোনা মিয়া হাবুলের কাঁধে হাত রাখল,
চিন্তা করিছ না যে। আমি দেখবাম।
হাবুলকে দেয়া আশ্বাসকে নিজের কানে কেমন দূর্বল শোনাল সোনা মিয়ার কাছে। রাশেদ মোড়ল এসে পড়ায় সে কথা না বাড়িয়ে হুন্ডা নিয়ে এগিয়ে যায়। হুন্ডায় উঠে সে আর একবার আড় চোখে তাকাল হাবুলের দিকে। হাবুলের ঠোঁট কেটে রক্ত গড়াচ্ছে,শরীরের নানা জায়গায় রক্তের ছোপ। তার গায়ের জামাও ছিড়ে একাকার। নাম না বলে দিলে তাকে এখন আর চিনা যাবে না।এভাবে কাল পর্যন্ত মার খেলে আর বাচানো যাবে না এমনিতেই হয়ত আর পুলিশে দিলে তো একবারে মারাই পড়বে হাবুল। কারন ঘুষ দেয়ার পয়সা নাই হাবুলের। হাবুলকে এভাবে দেখে হঠাৎ হাল্কা চোখ জ্বালা করল সোনার।সে চোখ ফিরিয়ে নিল।
চেয়ারম্যান সাহেব পিছে চড়ে বসতে সে হুন্ডা স্টার্ট দিয়ে রওনা হল নান্দাইল।চাঁদের শরীর এখনো পাতলা তাই তেমন আলো নেই। রাস্তা ঘাট খুব একটা পরিস্কার দেখা যাচ্ছে না। সোনা মিয়া তবু হুন্ডার গতি বাড়িয়ে দিল। চলার গতির সাথে তার জীবনের গতিটাও চলচ্ছবির মত চোখের সামনে ভাসতে থাকল। বাপ-মা মরা সোনা মিয়াকে সবাই ঠকাত আর পয়সার চেয়ে বেশি মজুর খাটিয়ে নিত। ছুটা কামলা করে এর বাড়ি তার বাড়ি একবেলা দুবেলা খেয়ে তার দিন কাটতো। তখন শুধু হাবুল আর হাবুলের মায়ের ভালোবাসায় এই পৃথিবীটাকে কিছুটা আপন মনে হত। কত দিন অভুক্ত সোনা মিয়ার চেহারা মেপে নিজের সাথে খেতে বসিয়েছে হাবুল!এমনকি তার গায়ে এখন জড়ানো আজকের চাদরটাও হাবুলের কষ্টার্জিত টাকা থেকে কিনে দেয়া। চেয়ারম্যানের এখানে হাবুলই বান্ধা কামলা ছিল বহুদিন ধরে।পরে সোনা মিয়াকে একরকম সুপারিশ করেই কাজে ঢুকায় হাবুল। কিছুদিনেই সোনা মিয়া ফুট ফরমায়েশ খাটা চাকর থেকে খাশ পরামর্শকারী হয়ে উঠে। হয়ে উঠে চেয়ারম্যানের খুব কাছের লোক।ঠকতে ঠকতে সে ভেতরে ভেতরে কতটুকু কৌশলী আর চালাক হয়ে উঠেছিল তা চেয়ারম্যানের এখানে না এলে বুঝতোই না হয়ত। কিন্তু হাবুল! হাবুল তার পেছনের আবছা পৃথিবীতে দাঁড়ানো একটা সাদা মসজিদের মত। হাবুলের ক্ষয় ক্ষতি তাই তার বুকে একটা বেঢপ খচখচানি তৈরী করছে।
ভাবতে ভাবতে নান্দাইল শহরে কখন চলে এসেছে সোনা মিয়ার খেয়াল নেই। আর কিছুদূর গেলেই থানা হঠাৎ হুন্ডা থামায় সে। রাশেদ মোড়ল অবাক হয়।
কিরে থামায়াল্লি কেরে?
আন্নের লগে দুইডা কতা কইয়াম চেয়ারম্যান সাব।
মানে?

চেয়ারম্যান বাড়িতে নতুন গরু কেনা হয়েছে। গরুর ঘন ঘন ডাক আর উৎসাহিত জনগনের কোলাহলে বাড়িটি সরব। কিন্তু বৈঠকখানার দরজা চাপানো সেখানে রাশেদ মোড়ল,হাবুল, হাবুলের আট মাসের অন্তসঃত্তা স্ত্রী আর সোনা মিয়া। চেয়ারম্যান সাহেব গলা উঁচু করে বলল,
-এই সোনা হাবুলের বান খুল।
সোনা চটপট হাবুলের হাতের বাঁধন খুলে দিল। হাবুল আর তার স্ত্রীর মুখে তবুও আতঙ্ক। চেয়ারম্যান সাহেব এবার হাবুলের বউকে উদ্দেশ্য করে বলল,
জামাই বাচাইতে চাও না?
-হ চাই?
-তাইলে কয়ডা কতা কইয়াম মনোযোগ দিয়া হুনবে।
হাবুলেরও বউ বিস্ফোরিত চোখ আর আতঙ্কিত মুখ নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। রাশেদ মোড়ল তার মুখের পান চিবোতে চিবোতে আয়েশ করে চিপটি ফেলল। গলা খাকড়ি দিল।চোখ বুজে আরো একটু সময় নিয়ে বলল,
-থানায় গিয়া জিডি কইরালছি। তুমার জামাই এক নম্বর আসামী।এহন আমি কইলে দইরা লইয়া যাইব। এমুন প্যাদানী দিব আর জীবনে কামলাগিরি কইরা খাওন লাগব না। কেস চালানের টেহাও তুমরার নাই। আছে?
হাবলুর স্ত্রী যেন ঘুমের ঘোরে বলল,
-না।
-হেইড্ডাই কতা।গরীব মাইষের নামে কেস কইরা আমার ও লাভ আছে কুন? জেল অইলে গরু চুরির দায়ে জরিমানা অইবো। টাকা দিবা কইত্তে?
হাবলু আর তার স্ত্রী সম্মিলিত প্রশ্ন করে,
-কইত্তে?
-হেইড্ডাও অইলো কতা। আদালত তুমরার ভীডা বাজেয়াপ্ত করবো। তাইলে গনো কয়ডা শাস্তি,
-পাকিস্তানি ঢলা দিব, জেল অইবো লগে ভীডা যাইবো। তিনডা। আর পুলিশের ঢলা খাইলে মইরা যাওয়াও খুব মামুলী কতা।
হাবুলের স্ত্রী কাদঁতে শুরু করল,
-অই মাইয়ালোক তুমার কান্দন হুন্তে বইছি না। এহন আমি তুমরারে একটা প্রস্তাব দিয়াম। তুমরা আপোশে ভিডা আমারে লেইক্ষা দেলাও আমি গরুর দাম আদায় কইরা লমু আর পুলিশের লিষ্টেত্তে তুমার জামাইর নাম কাইট্টা দিয়াম।
-আমরা থাকবাম কই! করাম কি?
-আমি চেয়ারম্যান ন্যায় করনঅই আমার কাম। আমি তুমরারে দয়া কইরা আমার ভিডায় থাকতে দিয়াম। এইহানে কামলা খাটবা আর গোয়ালদারের লগে একটা ঘর বাইন্দা লইবা।
হাবুল আর তার স্ত্রী দুজনেই মুখ চাওয়া চাওয়ি করল।তারপর আশা না আহত চোখে সোনার দিকে তাকাল বুঝা গেল না। সোনা আস্তে করে উঠে ঘরের বাইরে গিয়ে দাঁড়িয়ে লম্বা শ্বাস টানে।বাইরে থেকে শুনতে পায় হাবুলের বউ কেঁদে কেঁদে বলছে,
আইচ্ছা তুমি হের কতা মাইন্না লউ যে। তুমারে পেডের বাইচ্চাডার দোহাই।
হাবুল গলা ছেড়ে কেঁদে উঠে,
-বাহের ভিডা চেয়ারম্যান সাব।
-দূর!
কানে আসা কথাগুলো সোনার সহ্য হয় না।সে এক পা এক পা করে ঊঠান পেরিয়ে যেতে থাকে।আট দশ পা এগুনোর পরই আবার সোনার ডাক পড়ল।
-সোনা। মাষ্টররে লইয়া কাইলই কাগজ পত্তর রেডি কইরালবি। আপাতত এড্ডা সাদা কাগজে টিপসই নিয়া রাখবাম। দলিল রেডি অইলে বাহিডা করাম।
কথাটি শেষ করেই রাশেদ মোড়ল উঠে দাঁড়াল।সে চলে যেতেই হাবুল সোনাকে জড়িয়ে ধরল।
-সোনা আমার সব শেষ। তুইতো জানছ আমি চোর না।আন্ধারে মুখ ডাইক্কা কেডাযে আমার মুখ বানলো কেডাযে গরু লইয়া গেল কিছু ঠাহর পাইছি না।
সোনা মিয়ার মুখে কথা ফুটল না। হাবুলের চোখের পানি আর ঠোঁট গড়ানো কালসিটে রক্তে মাখামাখি হয়ে যায় তার গায়ের চাদর।
(৩)
বুকের মধ্যে দারুন ছটফটানি নিয়ে ঘরে ফিরছিল সোনা মিয়া। বাড়ির কাছে আসতেই নরম কোমল একটা উষ্ণতা তাকে ঝেকে ধরল। চাদরটা টেনে খুলে ফেলে জোড়ে জোড়ে পা চালিয়ে ঘরে ঢুকল সে।নতুন মাড় কাপড়ের খসখসে শব্দ ,কিছু চুড়ির টুং টাং তার অস্থিরতাকে যাদুর মত শান্ত করে দিল।সাত দিন হয় সে বিয়ে করেছে। ডুরে শাড়ি পরা নতুন বউটা তাকে দেখে খাবারের ঢাকনা সরাল।
-যান আত মুখ দুইয়া আইয়ুন।
-আইজ খাইয়াম না পারুল।
-কেরে? শইল ভালা না? দেন আমি খাওয়াইয়া দেই।
সোনা হেসে সম্মতি দিল। খেতে খেতে সে নারীর অসামান্য ভালোবাসায় আর মুগ্ধতায় স্তব্দ হয়ে থাকে। খাওয়া শেষ করে বিছানায় শরীর এলিয়ে দেয় সোনা।বউটি একটি খিলি পান হাতে দেয়। সোনা পান মুখে দিল না হাতে নিয়ে বসে থাকে।পারুল কাছে আসতেই সুগন্ধি তেলের গন্ধ,আরো কিছু প্রসাধনের গন্ধ সোনা মিয়ার শরীরের ভেতরে ঝড়ের ঘুর্নি তোলে। বউকে কাছে টেনে নিয়ে সে সেই সৌরভগুলো এড়িয়ে তার শরীরের ঘ্রানে ডুবে যেতে চায়।
-আইচ্ছা আন্নের চাদ্দরে রক্তের দাগ কেরে?
সোনা মিয়া যেন অনেক উঁচু থেকে আছড়ে পরে।
-হাবুলের শইল্লেতে ভরছে।
- ও! আন্নের দোস্ত যে? হ্যায় চুরি করছে হ্যার রক্ত দিয়া চাদ্দর নষ্ট করার কি আছিল?
সোনা মিয়ার বলতে পারেনা এই চাদরটা হাবুলেরি দেয়া।কোন এক শীতের রাতে হাবুল তার গায়ে জড়িয়ে ধরে বলেছিল,
-শীতে কষ্ট পাছ।এইড্ডা তুই শইল্লে দিছ যে।
বউএর শরীর হতে নিজের হাতের বন্ধন আলগা করে দিল সোনা মিয়া।ভশরীর জুড়ে কিসের যেন বিদ্রোহ আবার ঘুরপাক খাচ্ছে।হঠাৎ দরজায় কড়া নাড়ে কেউ। আওয়াজ শুনেই সোনা বুঝতে পারে কে এসেছে।দরজা খুলে দেখে আপাদমস্তক একটা চাদরে জড়িয়ে আসলেই কাশু এসেছে। কাশু ঘরের ভেতর ঢুকে সোনার কানে কানে ফিসফিসিয়ে বলল,
-মমসিং বাজারেতো গরুর মেলা দাম।তয় দরা পরনের ডরে তাড়াতাড়ি বেইচ্চালছি। পছাত্তর এ বেচছি। তুমার কতা মত পচিশ আমার পঞ্ছাশ তোমার।
সোনা উচ্চবাচ্য না করে চাদরের নিচ থেকে টাকাটা নিল।কাশু তাড়া দিল,
আমার জবান তো চিন।গইন্না দেখবা?
সোনা শুধু বলল,
না।
কাশু আর কথা না বাড়িয়ে অন্ধকারে অদৃশ্য হয়ে গেল।টাকাটা হাতে নিয়ে সোনা মিয়ার শরীর হাল্কা কাঁপতে থাকে।হাবুলের এত বড় সর্বনাশ হবে জানলে সে এই কাজটা করত না।টাকাটা খরচ না করে কোন উপায়ে গোপনে হাবুলকে ফেরত দিয়ে দিবে ভাবে সে। বিছানায় আসতেই পারুল স্বামীর হাতে এত টাকা দেখে বিস্মিত হয়ে যায়।
-এত্ত টেহা কার?
-আমার না।
-ইশ যদি আমরার অইতো!
উত্তেজনায় পারুল সোনার কাছে চলে আসে।টাকাটা হাতে নেয় সে আর সোনা তাকে জড়িয়ে ধরে। নতুন ডুরে শাড়ি,সুগন্ধি তেল,কুপির আলোয় কাজল ভরা চোখ দেখতে দেখতে সোনার মাতাল মাতাল লাগতে থাকে। পারুল আবার টাকাটা তুলে ধরে সোহাগী কন্ঠে বলল,
-ইশ টাকাডি যদি আমরার অইতো। একটা ছুডমুড খেত কিনতাম আর একটা গাই বাছুর। হেইড্ডা বড় অইলে দুধ দিত। আস্তে আস্তে আমরার গৃহস্থি বাড়তো।
বউএর চোখের দিকে তাকিয়ে সোনা ও স্বপ্ন দেখে। দুরের কোন সোনালী দিন সে যেন দিব্যচোখে দেখতে পায়।পারুলের ডাগর চোখের দিকে তাকিয়ে সে যন্ত্রচালিতের মত বলল,
-হ আমরার ই।
-সত্য!
-হ।
-টেহাগুলো কই রাখবাম?
-তুমার বারাত হামলায় রাহ যে।
পারুল যেন দিশেহারা বোধ করে কিছুটা।কোথায় রাখবে ভেবে এদিক ওদিক তাকিয়ে পালটা প্রশ্ন করে,
-কই রাখবাম?
সোনা আর কথা বাড়াতে চায় না। পারুলের হাত থেকে টাকাগুলো নিয়ে তোষকের নিচে রেখে তার শরীরের ঘ্রানে ডুবতে থাকে। ডুবতে ডুবতে তার চোখ বুজে আসে।সাথে সাথে বোজা চোখে জেগে জেগেই যেন সে দুঃস্বপ্ন দেখে সে যে একটা গরুর জবাই হচ্ছে অবুঝ পশুটি গোঙ্গানীর মত শব্দ করছে গলগল করে রক্ত বের হচ্ছে। ঝট করে চোখ মেলে সোনা। ভাবে আর চোখ বুঝবে না । হারিকেনের আলো আর একটু বাড়িয়ে দিয়ে,শরীরের খেলায় কখনো ডুবে কখনো ভেসে দেখতে থাকে বউএর কালচে সোনালী শরীর তার মিহি মসৃন ভবিষৎ।



ভাত কাপড় ভালোবাসা ও অন্যান্য গল্পগ্রন্থে প্রকাশিত।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০১৬ রাত ১১:০৬
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×