somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রুহুলআমিন চৌধুরি
স্বাধিনতার শত সহস্র, লক্ষ কোটি সুফল - কিন্তু একটি মাত্র “কুফল” - দেশের নিতি নির্ধারণে অযোগ্য লোকেরা সব উচ্চাশনে - রাজনিতিতে ও প্রশাসনে - ফলে দেশটি যথাযথভাবে উন্নতিতে আগাতে পারছে না। তারপরেও যে টুকু এগিয়েছে সব টুকু ব্যাক্তি উদ্যোগে - সরকারের ভূ

‘বালাগাল উলা বি কামালিহি কাশাফাদ্দুজা বি জামালিহি’- শেখ সাদীর মাজারের সামনেই তার একটি মর্মর পাথরের ভাস্কর্য আছে। সেখানকার মাদ্রাসার ছাত্ররা তা ভাঙেনি।

২৭ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কেন আমি হেফাজতে ইসলামকে বিরোধিতা করছি ?
পারস্যের কবি শেখ সাদীকে কি পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু আছে ? উনি হচ্ছেন সেই মানুষ যার ‘নাত’-এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা মিলাদে সব সময় পাঠ করে থাকেন। ‘বালাগাল উলা বি কামালিহি কাশাফাদ্দুজা বি জামালিহি’- হেফাজতে ইসলাম শুনলে হয়তো মন খারাপ করবে, শেখ সাদীর মাজারের সামনেই তার একটি মর্মর পাথরের ভাস্কর্য আছে। সেখানকার মাদ্রাসার ছাত্ররা তা ভাঙেনি।
ইসলামি রাষ্ট্র ইরানে অবস্থিত কবি ওমর খৈয়াম ও মহাকবি ফেরদৌসির ‘মূর্তি’ নিয়ে কারো সমস্যা নেই। তেহরানে অজস্র মানুষের প্রতিকৃতিসম্বলিত ‘মূর্তি’ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা নেই সিরিয়ার ন্যাশনাল মিউজিয়ামে থাকা ‘মূর্তি’ নিয়েও।
সব সমস্যা শুধু বাংলাদেশে। কেন?
অথচ অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এ বিষয়ে বিবিসিকে বলেছিলেন,
‘এটা তো মূর্তি না, এটা তো স্কাল্পচার (ভাস্কর্য)। আর এখানে দেখানো হয়েছে তিনটা জিনিস। একটা হলো দাঁড়িপাল্লা, ন্যায়বিচারের একটা সূচক। আর হাতে একটা তলোয়ার। দণ্ড বা শাস্তির সূচক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে তলোয়ার। তৃতীয়ত, চোখটা বাঁধা। অর্থাৎ একদম নিরপেক্ষভাবে বিচার করতে হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই বিচারের নিরপেক্ষতা তুলে ধরা হয় এই স্কাল্পচার দিয়েই।’
এই হেফাজতে ইসলাম যখন ২০১৩ সালের ১৫ মার্চ চট্টগ্রামের সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির দাবি তুলেছিল, তখনই তো খোলস উন্মোচন হয়ে গিয়েছিল তাদের! তারা যদি সত্যিকারার্থেই এদেশে নিজেদের ইসলামের সেভিওর ভেবে থাকতো, তাহলে জামায়াতে ইসলামের ব্যাপারে তারা কঠোর হতো। একজন মনেপ্রাণে মুসলিম কখনোই জামায়াত-শিবিরকে সাপোর্ট করতে পারেন না। একাত্তরে তারা যে ভুমিকা নিয়েছে, তা কোনোভাবেই ইসলামপন্থী আচরণ হতে পারে না। সেই যুদ্ধাপরাধীদের একজনের মুক্তির দাবী তুলে তারা তো সেই কবেই নিজেদের পরিচয় প্রকাশ্যে জানিয়েছিল আমাদের। তারপর?
তবু দিন দিন তাদের প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এতে তাদের স্পর্ধা বেড়ে গেছে বহু গুণ। বেড়েছে আস্ফালন। হেফাজতের দাবী মেনে আজ পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু পরিবর্তন করতে হয়েছে। প্রগতিশীল লেখকদের গল্প-কবিতা-প্রবন্ধ নেই। আজকে সুপ্রিম কোর্টের সামনে ভাস্কর্য নিয়ে আপত্তি, কাল আপত্তি তোলা হবে দেশের সবগুলো ভাস্কর্য নিয়েই, তারপরের দিন প্রশ্ন তোলা হবে নারী নেতৃত্ব নিয়ে। এভাবেই বাংলাদেশকে বাংলাস্থান বানানোর মিশন চালিয়ে যাচ্ছে হেফাজতে ইসলাম।
আমরা ভুলিনি একুশে টেলিভিশনের প্রতিবেদক নাদিয়া শারমিনের কথা, যিনি ২০১৩ সাকে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের খবর সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় সমাবেশ থেকে প্রশ্ন তুলে বলা হয়, ‘পুরুষের সমাবেশে নারী সাংবাদিক কেন?’ এ নিয়ে নাদিয়ার সঙ্গে সমাবেশকারীদের মধ্যে বিতর্কের এক পর্যায়ে নাদিয়া শারমিনকে প্রচণ্ড মারধর করতে করতে সমাবেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।
আমরা ভুলিনি হেফাজতের সেই অসাড় দাবীর কথা- নারীপুরুষের মেলামেশা বন্ধ করতে হবে। অথচ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ লিঙ্গ নিরপেক্ষভাবে নারী পুরুষ সবাইকে সমান নাগরিক অধিকার দিতে বাধ্য। এদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকদের একটা বড় অংশই নারী, যারা পুরুষের পাশাপাশি কাজ করে এদেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করছে। হেফাজতের দাবি মেনে নিলে তাদের ঘরে ফিরে যেতে হবে। হেফাজতের দাবী মেনে নিলে আজ থেকে ২০ বছর পর শিশু বয়সের এই উচ্ছলতা আর থাকবে না নিশ্চিতভাবেই। চিন্তা করলেই শিউরে উঠতে হয়!
৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে পেয়েছি এই স্বাধীনতা। রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল এই জনপদ, তবেই মিলেছে মুক্তি। সেই স্বাধীনতার মাসে আবারও হেফাজতের ধমক শুনতে হচ্ছে আমাদের। এখনই তাদের না রুখলে এর মাশুল কীসে দিতে হবে, কে জানে ???
(সংগ্রহ - কমরেড অনিমেস)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:২০
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×