খুব দুঃখজনক একটি ঘটনা জানলাম। শুনে মনটা খারাপ ই হয়ে গেল। আসলে নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পর্কে কোনো তৃতীয় ব্যক্তির কোনো আনাগোনা না হওয়াটা মনে হয় সবচেয়ে ভাল। অনেক সময় আপনজনেরা বেশী ভাল চিন্তা করতে গিয়ে খারাপই করে ফেলেন। তখন কিছু বলার ও থাকেনা, করার ও থাকেনা। দুঃখ, কষ্ট, রাগ, ক্ষোভ নিয়ে বেচে থাকতে হয় ভিকটিমদেরকে।
আমার এক ভাতিজি মেডিকেলে পরত। মেডিকেলে পরা কালীন সময়ে পরিচয়, পরিনয় হয় তারই এক ক্লাসমেটের সাথে। তৃতীয় বর্ষে এসে তারা লুকিয়ে বিয়ে করে। কোর্স শেষ হওয়ার পর ওরা পরিবার থেকে বিয়ের সম্মতি চায়। পরিবার ২টা তো শুনে রেগেই আগুন। তারপরও তারা আলোচনায় বসে। বিয়ের অনুষ্ঠানের দিন তারিখ ঠিক করে।
আলোচনায় বসেই বাধে ভেজালটা। মেয়ের পাওয়ারফুল মামা, ছেলের পাওয়ারফুল চাচা ইত্যাদি ইত্যাদি আত্মীয়স্বজন বেশী বুঝতে আরম্ভ করে। দেনমোহর, যৌতুক ইত্যাদি নিয়ে শুরু হয় খোচাখুচি, তারপর শুরু হয় কথা কাটাকাটি, বাকবিতন্ডা, তারপর হাতাহাতি, তারপর কেস কাচারী , অতঃপর ডিভোর্স। মেয়ে মেনে নিতে পারেনা তার বাবা ভুল বলেছে, ছেলেও মেনে নিতে পারেনা তার বাবা মিথ্যা বলতে পারে। মেয়ে বলে সবার সামনে নিজের পিতার মাথা সে নিচু হতে দিবেনা, ছেলে ও বলে এত অপমানের পর আর ঐ মেয়ের কাছে ফেরত যাবেনা।
হায়রে ভালবাসা!! কয়টা মানুসের তর্ক বিতর্কের ঝড়ে টিকতে পারল না!! তারা আবার সারা জীবন একজন আরেকজনের সুখ দুঃখের সাথী হবার প্রতিগ্গা করেছিল!! কেমন সুখের মিষ্টি একটা অনুভুতি প্রিয় মানুষকে সারাজীবন নিশ্চিন্তে কাছে পাওয়া যাবে। অধিকার বলে নিজের সাথে রাখা যাবে। কি হল সেখানে! মামা চাচা তো কৃতকর্ম সেরে বাসায় গিয়ে গল্প দিতে আরম্ভ করল..আরে ঐ ছেলের হাত থেকে আমিই বাচালাম। কিন্তু আজকের বাক বিতন্ডা , কেস কাচারী দুদিন পার হতে না হতেই হৃদয়ের রক্তক্ষরনে রূপ নিল তার সমাধান কে দেবে? প্রিয় মানুষকে আর চাইলেও কাছে পাওয়া যাবেনা। প্রিয় মানুষ এই পৃথিবীতে থাকলেও তার মুখের কথা শোনা যাবেনা। তাকে ছোয়া যাবেনা। তাকে দেখা যাবেনা।
আসলে নিজের সম্পর্কের ব্যপারে থার্ড পার্টির এই ইন্টারফেরেন্সটা কি খুব জরূরী?? আমি জানিনা। তবে আমার নিজের সময়ে আমি কাউকে এই সুযোগ দেইনি। আমি এখন পর্যন্ত ১০ বছরের সংসার জীবনে বলতে পারি সুখে আছি।
হয়ত অনেকের মতামত ই ভিন্ন হতে পারে। তবে যত যাই হোক, শুভাকাংখীদের হস্তক্ষেপে এই জাতীয় ঘটনা ঘটা কতখানি শুভ হল?? ছেলে মেয়ের জীবনে এই যে ক্ষত তৈরী হল কোন শুভাকাংক্ষী পরে এই ক্ষত সারাবার দ্বায়িত্ব নেবে? আদৌ কি কেউ নেয় বা নেবে?