আমার হিমু, বাংলাদেশের অন্যান্য হিমু’র মতই একজন “হিমু ভক্ত” । বলা বাহুল্য । আমি নিজেও তাই। যখন থেকে হিমু পড়ি, তখন থেকেই নিজেকে হিমু’র রুপা ভাবি। মনে মনে। আর ভাবী, যে কত সুন্দর ধৈর্যের সাথে আর নিঃস্বার্থ একটা মানুষ হতে পারে। আর কত সুন্দর করেই না হিমু কে ভালবাসতে পারে। সেই ভালবাসার মধ্যে থাকে, রাগ, অভিমান ... মায়া ... এমন একটা বিষয় যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে না, আট দশটা প্রেমের মত অথবা সব সময় বিশেষ করে এখনকার সময় আমরা ভালবাসার যে রূপ বা পরিস্থিতি দেখি সেরকম – তা হল “ ভালবাসা “
হিমু’র চরিত্রটি যেমন খুব সাধারন একটি মানুশের মাঝে হয়েও ...সাধারণ কোন মানুশের সাথে মিলে না, রুপা ও তেমনি। রুপা- চরিত্রটি ছাড়া হিমু কেন যেন ঠিক আমি মানতে পারি না। কোথাও না কোথাও হিমু’র উপর এই চরিত্রের উপর বেশ প্রভাব আছে।
আসল কাহিনী ...
হিমু পড়তে পড়তে সব সময়ই মনে হত ... যদি কখনো ভালবাসার সুযোগ হয়, তবে হিমু’র রুপা’র মতই হবো । রুপা’র মত আমি ও নীল রঙ এর শাড়ী পড়ে বারান্দায় গিয়ে অপেহ্মা করবো হিমু’র জন্য।
আমি আজ যা আর যতটুকু জানি, ভালবাসা সম্পর্কে ... সবটাই জানা হিমু’র গল্প গুলো থেকে।
অপেহ্মায় ছিলাম , গল্পের যদি কখনো সত্যি হয়। আমিও যদি দেখা পেয়ে যাই্ আমার হিমু’র, বেশ হত। বলে রাখি। এটা আমার ভাবনা। ঠিক এমন করে অনেকেই ভাবে ... যারা নিজেদের হিমু’র ভক্ত মনে করেন। অথবা পছন্দ করে থাকেন ।
একদিন একজন এর সাথে পরিচয় হল। আসলে পরিচয় আগেই ছিল। কিন্তু সেদিন আসলে কথা হল।
কথা হল এই প্রসঙ্গে , ... যে সে হিমু’র অনেক ভক্ত। তো গল্প করতে করতে অনেক কথা হয়ে গেল। হিমু নিয়ে, আরো অনেক কিছু। যেহেতু পরিচয় আগে থেকেই কিন্তু কথা বলার শুরু সেখান থেকে ... ... দুজনেই দুজন সম্পর্কে কমবেশ জানি ।
হিমু নিয়ে আমার যত কৌতূহল । তার হিমু নিয়ে এত আগ্রহ দেখে, আমার আগ্রহের কমতি থাকলো না। কথা আর আড্ডা’র এক পর্যায়ে আমি আর নিজের কৌতূহল সামাল দিতে পারলাম না ... নিজের মনের সাথে অনেক চাপা চাপি করলাম, যুদ্ধ করলাম ... এমন প্রশ্ন করবো না।
শেষ পর্যন্ত করেই ফেললাম ...
- আপনি যে নিজেকে হিমু মনে করেন, আপনি কি কখনও আপনার রুপা খুঁজে পেয়েছেন ?
- হ্যাঁ ।
তার হ্যাঁ সূচক উত্তরটি এত আনন্দ আর উৎফুল্লতায় ভরপুর ছিল যে আমার তার আনন্দ দেখে মন খারাপ লাগতে শুরু করলো ।
জিজ্ঞেস করলাম , যে তার কাছে বাস্তবে রুপা চরিত্রটি কে ?
সে এবারো বেশ হাসি খুশি আর উৎফুল্লতায় আমার প্রশ্নের উত্তর দিলো । বুঝলাম সে যার কথা বলছে ... সে তার পছন্দের বেশ ভাল আর দৃঢ় স্থানেই আছে।
আমার খারাপ লাগলো। মনে হল এই মানুষ টা একদম ... আমার কল্পনার হিমু’র মত। যে হিমু কে আমি জানি, আমি বিশ্বাস করি । কিন্তু আমি আশা করছিলাম, সে হিমু আমার করা প্রশ্নের উত্তরে বলবে, আমার রুপা কে এখনো খুঁজে পাইনি । অথবা রুপা’র মত কাউকে পাই নি।
সেদিন এর সেই বাস্তবতা মেনে নিতে একটু কষ্ট হয়েছিল । আর সেদিন আমার হিমু’র সাথে আমার হওয়া সমস্ত কথোপকথন আমার আজও মনে আছে।
আজ কের চিত্র একেবারএই অন্য। অনেকেই হয়ত ভাবছেন আমার হিমু, তার দাবি করা সেই দিনের সেই রুপা’র সাথেই হয়তো আছে । কিন্তু আজ কে আমি বেশ আনন্দ আর উতফুল্লতার সাথে জানাই, আমার সেদিনের সেই হিমু আজ আমার সাথেই আছে। ঘটনাটা এত সহজ ছিল না যতটা সহজে আমি লিখলাম ... । সে যাই হোক।
এই হিমু হুমায়ুন আহমেদ এর সৃষ্ট অবিকল সেই হিমু না হলেও ... এই হিমু আমার হিমু। যাকে আমি আমার কল্পনায় পেয়েছি ... যতবার হিমু নিয়ে ভেবেছি।
আমার হিমু’র জম্নদিন ছিল গতকাল ।
আর আজ কের এই লেখা আমার হিমু’র জন্য।
আমার হিমু’র জন্য অনেক অনেক ভালবাসা।