somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পথ হারাবে না তারুণ্যের বাংলাদেশ

২২ শে জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০১৪ সালের ঘটনা।

তিন বন্ধু মিলে ট্রেনে করে ঢাকায় যাচ্ছি। পারিপাশ্বিক অবস্থার কারণে মন প্রচন্ড মন খারাপ ছিল তবুও যাচ্ছিলাম জীবনের নিয়মে! ট্রেনের কামরায় সারা রাত হই হুল্লড় করে ভীষণ ক্লান্ত হয়ে ঢাকায় পৌঁছালাম। আমাদের হই-হুল্লোড় & উৎপাতে অন্য যাত্রীরা শান্তি পায় নি। ভীষন্ন মন & ক্লান্ত শরীর নিয়ে বিমান বন্দর স্টেশনে নেমে দেখি একটি ছোট মেয়ে কান্না করছে। তার হাত ধরে এক লোক হাটাহাটি করছে। মেয়েটি আমার অপরিচিত হলেও তার হাত ধরা লোকটি আমার একদম অপরিচিত ছিল না। আমি খুব আগ্রহ নিয়ে তাদের কাছে গেলাম। তাদের সাথে প্রায় ২/৩ মিনিট স্টেশনে হাঁটাহাটি করার পর দেখি মেয়েটির কান্না থেমেছে। কারণ তার হাত ধরা লোকটি ছোট মেয়েটিকে তার মায়ের কোলে তুলে দিলেন। লোকটি আর কেউ নন তিনি আমাদের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
কয়েক মিনিট পর যখন বন্ধুদের কাছে এলাম তারা জিজ্ঞেস করে কই গেছিলাম? তাদের আমি কি করে বুঝাই এই কয়েক মিনিট আমি ঐ বাংলাদেশের সাথে ছিলাম যে বাংলাদেশ আমরা চেয়েছিলাম। যেখানে একজন প্রতিমন্ত্রী রেল স্টেশনে হারিয়ে যাওয়া শিশুকে তার মা-বাবার কাছে পৌঁছে দিলেন।
কয়েকদিন আগে পর্বতারোহী মুসা ইব্রাহিম প্রতিকূল আবহাওয়া কারণে একটি পর্বতে আটকা পড়েন। আসিফ এন্তাজ রবি ভাই এই সংবাদটি ফেসবুকে দিলে তা পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ভাইকে জানানো হয় এবং তিনি ব্যক্তিগত ভাবে যোগাযোগ করে মূসা ইব্রাহিমকে উদ্ধার কাজে তৎপর হোন। শুধু মুসা ইব্রাহিমকে উদ্ধার কাজে নয় পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের এরকম বিভিন্ন কাজে তিনি ব্যক্তিগত ভাবে জড়িত হয়ে অনেকের উপকার করেন।
সে দিন (২০১৪ তে) আমি বলেছিলাম সঠিক পথেই আছে বাংলাদেশ। এই দেশের তরুণরা পথ হারায় নি। তারা কিছু বিপদগ্রস্ত লোকের জন্য সমাজের আলো সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারছে না। তাদের সামনে বাধা হয়ে আছে ঐ সকল খারাপ/দূর্নীতিবাজ/অসৎ লোক।
এই তরুণরা ১০০+ দেশের সাথেই লড়ায় করে গণিত অলেম্পিয়াড় জিতে, BUET, CUET থেকে রোবট বানিয়ে বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতা করে। মুস্তাফিজ-সাকিব'রা বিশ্ব সেরা ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উচূ করে দাঁড়ায়। মাশরাফির মতো ছেলে বলে ৭ বার অপারেশন আমায় ভয় দেখাতে পারবে না!
শুধু এরা নয় আমাদের দেশের ১৩/১৪ বছর বয়সী আলেমরা কোরআন তিলওয়াতে সারা বিশ্বকে হারিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করে।
এই তরুণরা যখন দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলে তখন তাদের থামানোর কোন উপায় থাকে না।
এই তরুণরা খুবই ভয়ংকর। জয়ের নেশা তাদের। তবে তার চেয়ে ভয়ংকর হল এই তরুণদের বিপরীত দিকটা! যে দিক আমাদের অন্ধকারে নিমজ্জিত করে! অবাধ তথ্য প্রযুক্তি, পারিবারিক বন্ধনহীনতা, অবাধ ও অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন তাদের বড় ভয়ংকর করে তুলে।
সমাজের কোন অসংগতি দেখলে এই তরুণ প্রজন্ম যেমনি তা মোকাবেলা করে তেমনি কিছু স্বার্থন্বেষী মানুষ এই তরুণদের কখনো তলোয়ার হিসেবে আবার কখনো ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। এলাকার ভাই কিংবা রাজনৈতিক বড় ভাইদের ছত্রছায়া এরা হয়ে উঠে এক একজন দূধর্ষ ক্যাডার, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী। যে বড় ভাই কিংবা নেতা জন্য তারা এক সময় এদের সরিয়ে দিয়ে হাত পরিষ্কার করে! যদিও ভাইয়ের ভক্ত বা নেতার কর্মী হয়েও তারা তা বুঝে না!

অবাধ তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারও আমাদের অধঃপতনের আরেকটা উল্লেখযোগ্য দিক। আমরা খুব সহজে শ্লো-পয়জনিং এর মতো করে তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদের কর্মক্ষমতা হ্রাস করছি। নষ্ট করছি আমাদের অমিত সম্ভাবনা কে। প্রযুক্তি আমাদের যেমন দরকার তেমনি এর অপব্যবহার রুখতে না পারলে তরুণ সমাজ দ্রুত অধঃপতনে পতিত হবে! আর তরুণরা পথ হারালেই পথ হারাবে বাংলাদেশ।

তারুণ্যের প্রতিটি পদক্ষপ হোক এ দেশের অগ্রগতির সোপান। অভিনন্দন বাংলাদেশ গনিত অলেম্পিয়াড়কে দেশের জন্য চারটি পদক জয় করার জন্য সেই সাথে ধন্যবাদ তরুণ কোরান হাফেজদেরও যারা এই দেশের হয়ে স্বর্ণ জয় করেছে।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×