somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢলই ছড়ি পাহাড়ের ভার্জিন ঝর্ণা

২৭ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আগেই পরিকল্পনা ছিল কাপ্তাই গিয়ে একটা নতুন ঝর্ণা দেখবো। আমরা জানতাম কাপ্তাই এর বড়ইছড়ির ওপারের দূর্গম পাহাড়গুলোতে কিছু ঝর্ণা অাছে যেগুলো এখনো লোকচক্ষূর আড়ালেই রয়ে গেছে। কিন্তু আমরা যেই এলাকাটায় ঝর্ণা দেখার কথা বলছি ওদিকে কোন ঝর্ণা আছে এমন সন্ধান কেউ দিতে পারছিল না।
রাঙামাটি থেকে ট্রলারে করে কাপ্তাই জেটি ঘাট নেমে হোটেল থ্রীষ্টারে ব্যগ রেখে বেড়িয়ে পড়েছিলাম ঝর্ণার সন্ধানে। সিএনজিতে করে কাপ্তাই উপজেলা গেইট আসার পর বৃষ্টি মুসল ধারে বৃষ্টি শুরু হলো। অনেক খোজ খবর নেওয়ার পর সেলুনে চাকুরী করে এমন একটা ছেলে বলল ঢলই ছড়ির পাহাড়ে একটা ঝর্ণা আছে, তবে সেক্ষেত্রে আমাদেরকে ভড়া বর্ষায় সামনের খড়স্রোতা কর্ণফুলি নদী আগে পারি দিতে হবে। তারপর ওপারের আদিবাসীদের গ্রাম থেকে একজন গাইড নিলে আমরা ঠিকই পৌছে যাবো পৃথিবী থেকে লুকিয়ে থাকা একটা নতুন ঝর্ণায়। নদী পাড় হতে হবে বলে কয়েকজন সরে পড়েছিলো ঝর্ণা দেখা হতে, আর বৃষ্টি ভেজা অচেনা পাহাড়ি ট্রেইলের কথা চিন্তা করে আরো কয়েকজন সরে দাঁড়াল। ৪৪ সদস্যের আমাদের দল হয়ে গেল ১৪ সদস্য বিশিষ্ট। আমার পাহাড় ট্রাক করার প্রস্ততি ছিলোনা মোটেও, কিন্তু এ্যডভেঞ্চারের গন্ধ পেয়েছি, আমাকে আর রুখে কে?


(২) কর্ণফুলী পেপার মিলের ভেতর দিয়ে বেশ কিছুটা হেটে কয়লা ডিপো ঘাট থেকে এমন দাঁড় বাওয়া নৌকায় কর্ণফুলী নদী পাড়ি দিয়ে ওপারের গ্রামের নাম ফুট্ট্যাছড়ি।


(৩) কর্ণফুলীর ওপাড়ের উঁচু পাহাড়গুলোতে এমন জুম ঘরগুলো মনটাকে নষ্ট্যালজিক করে দেয়।


(৪) কর্ণফুলীর জেলেরা মাছ ধরায় ব্যস্ত।


(৫/৬) আদিবাসী গ্রাম ফুট্ট্যাছড়ি তুলনা মূলকভাবে অনেক উন্নত।




(৭/৮) আমার এবারের ভ্রমণটা ছিলো অনেকটা সৌখিন ধরণের, তাই পাহাড় ট্রেক করার জুতা নিয়ে যাইনি। অনেক চিন্তা ভাবনা করে খালি পায়েই হাটার সিদ্ধান্ত নেই, পাহাড়ের লতা-গুল্ম আর কাঁটারা যেন এই সুযোগের অপেক্ষায়ই ছিল, এক কথায় বলা যায় আমার পা টাকে ঝাঝরা করে দিয়েছে।




(৯/১০) এমন পাহাড়ি ফুল আর অচেনা ফলগুলো দেখে কাটার আঘাত আর কতক্ষণ মনে থাকে বলুন।




(১১) ঐ ঝর্ণাতে যাওয়ার পথে আমাদের গাইড ছিল এই চিসু মারমা, শান্তি বাহিনীর কথা জিজ্ঞেস করেছিলাম, সে বলল আমিই শান্তি বাহিনী।


(১২) এক সময় আমাদের কানে বাজতে শুরু করলো পাহাড় থেকে জল পতনের সুমধুর ঝিরিঝিরি শব্দ, পাহাড় থেকে পাহাড়ে যা ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকাটায় একটা শান্তির আবহ সৃষ্টি করে দিয়েছে।


(১৩/১৪) ঝর্ণা দেখার জন্য যতো দূর্ঘম ট্রেইলই পারি দেওয়া হোকনা কেন, ঝর্ণার পানিতে শরীর ভেজালে সমস্ত ক্লান্তি নিমেষেই ধুয়ে যায়, এই ঝর্ণাটা ছোট হতে পারে তবে তার ধর্ম থেকে সে বিচ্যুত হয়নি। সবাই আমরা মেতে উঠেছিলাম জলকেলীতে।




(১৫) ফেরার পথে সেই একই ট্রেইল, তবে আবার চেনা পথ, তাই যেন অনেক স হজ হয়ে গিয়েছিলো ফিরতে। ফিরে এসে দেখলাম কর্ণফুলী ঘেষে ছোট্ট এক টুকরো ঢালু মাঠে পাহাড়িরা ফুটবল খেলছে, আমাদের মধ্য থেকেও কেউ কেউ ওদের সাথে কিছুক্ষণ খেলল।


(১৬) অতঃপর কর্ণফুলীতে গোসল।


(১৭) ফেরার পথে আবারো সেই একই খেয়া.............


(১৮) কয়লার ডিপো ঘাটের সাথেই কর্ণফুলী নদীর পাড়ে পেপার মিলের এই কলোনীটার নাম আমি দিয়েছি "হাউজ অফ ডেথ"। আমাদের গাইডের মাধ্যমে জানতে পারি এই বিলি্ডিং থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছে ৫ থেকে ৬ জন মানুষ, তাই এমন নাম দেওয়া।


(১৯) মনিরুল ভাই, আমার একজন অচেনা ফ্যান, প্রথম আলো ব্লগে আমার ব্লগ পড়েই উনি এখন এমন সব ভ্রমণে আগ্রহী হয়ে উঠে, এবং আমার মতো ফটোগ্রাফীর নেশাটাও ওনার মধ্যে এখন আমি বেশ দেখতে পেলাম।


(২০) সব শেষে শিলছড়ি ফ্লোটিং প্যারাডাইসএ রাক্ষসের মতো খেয়ে পাহাড়ি ক্ষিধা দূর করলাম। তবে সময়ের অভাবে শেখ রাসেল এভিয়ারি এন্ড ইকো পার্ক এবং ক্যাবল কারে চড়ার আকুতিটা থেকেই গেল। আশা করছি ভবিষ্যতে সেই আক্ষেপটা থাকবে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৭
১৯টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×