ইন্দোনেশিয়ার বালির মানুকায়া গ্রামে অবস্থিত এই পবিত্র বসন্ত জলের মন্দির। এখানকার হিন্দুরা বিশ্বাস করে এই পানির রোগ থেকে মুক্তি এবং সুস্থ্য রাখার যাদুকরি ক্ষমতা আছে। এছাড়াও এটি পাখরসান নদীর জলের উৎসও বটে।
মন্দিরের বাম পাশে একটি পাহাড়ের উপর রয়েছে ১৯৫৪ সালে রাষ্ট্রপতি সুকারানোর জন্য নির্মিত একটা চমৎকার প্রাসাদ। বর্তমানে এই প্রাসাদ ইন্দোনেশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অতিথিদের বিশ্রামস্থল।
ভেতরে প্রবেশের আগেই কেমন যেন একটা পবিত্র আবহ। সদ্য বৃষ্টিস্নাত গাছপালা যেন পবিত্রতার আবহটা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রথমেই সামনে পড়ল ছোট খাট কিছু মন্দির, ওখানে বেশ কিছু লোকজন উপাসনাও করছে। মূল মন্দিরে ঢোকার মুখেই দেখলাম একটা ঘরে নানা রঙের অনেক কাপড় নিয়ে বসে আছে কিছু লোক। মন্দিরে প্রবেশ করতে হলে এই পবিত্র কাপড়ের টুকরো পরিধান করা বাধ্যতা মূলক। পবিত্র কাপড় পরিধান করে ঢুকে গেলাম বসন্ত জলের মন্দিরে।
(২) পর্যটনের বাস থেকে নেমে ভেজা পথ ধরে এগিয়ে গেলাম বসন্ত জলের মন্দিরের দিকে।
(৩) সবে মাত্র বৃষ্টি হওয়ায় বৃষ্টিস্নাত গাছগুলো থেকে যেন অন্য রকম সৌন্দর্য্য ঠিকরে বের হচ্ছিল।
(৪) প্রবেশ পথের ডান পাশে উঁচু একটা বেদীর উপর দাঁড়িয়ে ছিল বিশালার একটা মুর্তি, আমার কাছে যেন মনে হচ্ছিল এটা প্রাগৈতিহাসিক আমলের।
(৫) পাশেই একটা ছোট মন্দিরে উপাসনা করছিল কিছু পুজারী।
(৬) মুল মন্দিরের প্রাঙ্গনে প্রবেশ গেইট এটা, তবে তার আগেই মন্দিরে ঢোকার নির্ধারিত কাপড় পরিধান করে নিতে হবে।
(৭) একটা বিশাল শিলালিপী রয়েছে যাতে ইংরেজী এবং স্থানীয় ভাষায় "পুরা তীর্থ এম্পুল" মন্দির সম্পর্কে তথ্য লেখা রয়েছে। এর বেদীতে ভক্তরা প্রনামী দেয়।
(৮) এই গেইট দিয়ে পবিত্র জলে গোসলের জন্য প্রবেশ করতে হয়। এখানকার মন্দিরটার প্রতিটা অংশে যাতায়াত করার জন্য প্রায় একই রকম দেখতে অনেকগুলো প্রবেশ পথ রয়েছে।
(৯) একটা হাতি প্রণামীর ভঙ্গিতে বসে আছে, এবং তার দুই পাশে রয়েছে অনেকগুলো পানির পাইপ, যা দিয়ে অনবরত পানি এসে এখানকার চৌবাচ্চায় পড়ছে, অতপর চলে যাচ্ছে পাখরসান নদীর দিকে।
(১০) রোগ মুক্তি বা পাপ ধুয়ে ফেলতে এমন চেষ্টা চলে নিরন্তর।
(১১) এই প্রবেশ পথ দিয়ে মূল উপাসনালয়ে এবং যেখান থেকে পানি উৎগিরিত হয়ে উঠছে সেখানে যেতে হয়।
(১২) কেউ গোসল করছে, কেউবা অপেক্ষায়।
(১৩) ভেতরে উপাসনা চলছে, তবে প্রবেশ করছে হবে অন্য দিক দিয়া।
(১৪) মূল উপাসনালয়ের দিকে চললাম।
(১৫/১৬) অনেকগুলো উপাসনাগৃহ, কোনটা কি জানতে পারিনি। একজন আবার দেখলাম একটা ক্যাস বাক্স নিয়া বসে আছে।
(১৭) একটি দল উপাসনা করছে।
(১৮) উপাসনা দলের নেতৃত্বে আছেন যিনি।
(১৯) মন্দিরের বাম পাশে উঁচুতে রয়েছে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ।
(২০) বাম পাশের গ্রিল দেওয়া অংশে রয়েছে সেই পবিত্র জলের আধার, যেখানে মাটি ভেদ করে অনরত বেড়িয়ে আসছে সেই পবিত্র জল।
(২১) ওদের পবিত্র পোষাকে আমিও নিজের কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম। বালিনীয়দের পোষাক নিয়ে আমাদের গাইড যতটুকু বলেছিল যে, এক টুকরোর অর্থ আমরা প্রকৃতিকে ভালোবাসি, আর অন্য টুকরোর অর্থ আমরা মানুষ কেও ভালোবাসি। আর ওদের মাথায় যে টুপিটা পরিধান করে এর অর্থ হলো আমরা স্রষ্টায় বিশবাসী। অবশ্য মন্দিরে প্রবেশের জন্য ঐ বিশেষ টুপিটার বাধ্যবাধকতা নাই।
(২২) ওখান থেকে বের হওয়ার আগেই আবার মুসল ধারে নামল বৃষ্টি, কিন্তু এমন ছাতাওয়ালী থাকতে সমস্যা কি? মাত্র দশ হাজার টাকায় ছাতা ভাড়া নিয়ে চলে গেলাম আমার টুরিষ্ট বাসে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০১৯ ভোর ৬:৫৩